বিয়ের বয়স দেড় মাস গড়ায়নি। তবু মোটা আয় বলে কথা, জহিরুদ্দিন সরকার তাঁর স্ত্রী পারমিতাকে বলে গিয়েছিলেন, ‘দেখ না ফিরে আসি, সব অভাব মুছে যাবে!’
মঙ্গলবার রাতে পুলিশের জিপ বাড়ির সামনে দাঁড়াতেই ধক করে উঠেছিল পারমিতা বিবির মনটা। বলছেন, ‘‘কেমন কু ডাকছিল। তবু মনে হচ্ছিল যাই হোক না কেন...!’’
জঙ্গি গুলিতে বাহালনগরের পাঁচ পড়শি মারা গেলেও, পায়ে গুলিবিদ্ধ তাঁর স্বামী জহিরুদ্দিন এখনও জীবিত। হাসপাতালের শয্যা থেকে কথাও হয়েছে তাঁর সঙ্গে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই বিয়ে হয়েছিল জহিরুদ্দিনের। নিমগ্রাম-বেলুড়ির পারমিতা বলছেন, ‘‘কত বার করে বলেছিলাম, কাশ্মীরে যেও না। দরকার নেই মোটা আয়ের। অভাব নিয়েই থাকব। কথাটা শুনলে এমনটা হত না।’’ দুশ্চিন্তায় মঙ্গলবার রাত থেকে দু’চোখ এক করতে পারেননি পারমিতা। কখনও বাড়ির সদর দরজা কখনও ঘরের কোণ— চোখ ভিজে এলেই আড়াল খুঁজছেন। বার বার বলছেন, ‘‘সত্যি করে বলুন তো মানুষটা আছে না নেই! এই তো টিভিতে শুনলাম, কী সব উল্টোপাল্টা বলছে!’’ হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেন বিএ পরীক্ষা দেওয়া মেয়েটি।
তাঁর এক মাসতুতো ভাই দিলবর শেখের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ বা প্রশাসনের তরফে বুধবার রাত পর্যন্ত কোনও কিছু জানানো হয়নি আমাদের। শুনেছি গুলিতে জখম হয়ে কাশ্মীরের রাজা হরি সিংহ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। কিন্তু কেমন আছে বলবে তো!’’
আশায় বুক বেঁধে আছেন পারমিতা, বলছেন, ‘‘বিএ পরীক্ষা দিয়েছি। সংসার চালাতে একটা চাকরির খুব প্রয়োজন। আয়ের কথা বলায় নিমরাজি হতে হয়েছিল আমাকে। ও ফিরলেই, এ বার আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আহেদন করব, একটা চাকরি দিন, ওকে আর যেতে দেব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy