Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

যানজটে স্তব্ধ শহর, বেহাল নিকাশি

এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে খানিক আগে। রাস্তায় জল থইথই করছে। বাসস্টপে সব বাস দাঁড়ায় না। তাই খোলা আকাশের নীচে কাদাজলে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে কিছু যাত্রী। বাস যদিও বা এল কোথায় নিয়ে গিয়ে বাস দাঁড় করাবেন ভেবে পাচ্ছেন না চালক। এ দিকে যাত্রীদের ছাড়িয়ে বাস এগিয়ে যেতেই হাঁ-হাঁ করে উঠলেন যাত্রীরা।

যানজটে জেরবার বড়ুয়া মোড়। —নিজস্ব চিত্র।

যানজটে জেরবার বড়ুয়া মোড়। —নিজস্ব চিত্র।

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৫ ০২:৫৫
Share: Save:

এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে খানিক আগে। রাস্তায় জল থইথই করছে। বাসস্টপে সব বাস দাঁড়ায় না। তাই খোলা আকাশের নীচে কাদাজলে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে কিছু যাত্রী। বাস যদিও বা এল কোথায় নিয়ে গিয়ে বাস দাঁড় করাবেন ভেবে পাচ্ছেন না চালক। এ দিকে যাত্রীদের ছাড়িয়ে বাস এগিয়ে যেতেই হাঁ-হাঁ করে উঠলেন যাত্রীরা। বাস ধরতে কাদাজলেই দে-দৌড়। সিনেমার কোনও খণ্ডদৃশ্য নয়। বর্যার মরসুমে এটাই চেনা দৃশ্য শহরের বড়ুয়ামোড়ের!

৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ছেড়ে শহরে ঢুকতে গেলে প্রথমেই পড়ে বড়ুয়ামোড়। চার মাথার মোড় হিসেবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। শহরের ব্যস্ততম জায়গাও বটে। কিন্তু গুরুত্বের বিচারে যতই উপরে থাকুক মোড়ের পরিবেশ পাড়ার এদোঁ গলিকেও হার মানায়। জায়গায় জায়গায় ফলের দোকান। কখনও তা ফুটপাথ ছাড়িয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে। রাস্তার মুখে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে টুকটুক, লছিমন, রিকশা। প্রতি সোমবার মাঝ রাত থেকে বসে পোশাকের হাট। পর দিন সকালে পশুহাট। সঙ্গে ফল, সব্জির পাইকারি ও খুচরো বাজার। রাস্তার দু’পাশে সেই অর্থে কোনও নর্দমা না থাকায় দু’ফোঁটা বৃষ্টি মাটিতে পড়তে না পড়তেই রাস্তায় জল জমে যায়। বর্ষার সময়ে কী হবে তাই ভেবে ঘুম ছুটেছে শহরবাসীর।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মুস্তফা সিরাজের কথায়, নিকাশি ব্যবস্থা ভাল নয়। তাই জল ঠিক মতো বেরোতে পারে না। জল ডিঙিয়ে কেউ দোকানে ঢুকতে চান না। তাই নিজেরাই ভাঙা ইঁট পেতে দোকান আসার জায়গা করেছি। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় না।

এক নিকাশিতে প্রাণ ওষ্ঠাগত তো তায় সঙ্গী যানজট।

মনোহারী দোকানদার জাহিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘বাস ঠিক জায়গায় দাঁড়াতে পারে না। যেখানে প্রতীক্ষালয়টি যেখানে আছে সেখানে সব বাস থামে না। ফলে যাত্রীদের দাঁড়াতে হয় খোলা আকাশের নীচে। তাই যানজটে সব সময়ের জন্য রাস্তা আটকে থাকে।’’

তবে ব্যবসায়ীরা যদি একটু সচেতন হন তো এই সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। বড়ুয়া ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মুকতাদির মোল্লা বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীদেরও সচেতনতার অভাব আছে। রাস্তার উপরে বসে চলছে ব্যবসা । প্রশাসনকে নিয়ে চেষ্টা করেছি যাতে পথচারিরা হাঁটতে পারে। কিন্তু কদিন ঠিক থাকার পর আবার আগের অবস্থা। প্রশাসন আরও কঠোর হতে হবে। তাতে যদি কিছুটা সুরাহা হয়।’’

বেলডাঙা পুরসভার পুরপ্রধান কংগ্রেসের ভরত ঝাওর বলেন, ‘‘ক্ষমতায় এসেই দখলদার উচ্ছেদের কাজ শুরু করেছি। পুলিশ প্রশাসনও সাহায্য করছে।’’ সেই মতো প্রতিটি রাস্তাকে দখলমুক্ত করতে সম্প্রতি ব্যবসায়ী কমিটিগুলিকে নিয়ে সভা হয়েছে বলে তিনি জানান। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে প্রথমে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করা হবে। তাতে কাজ না হলে পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্যে দখলমুক্ত করার চেষ্টা শুরু হবে বলে পুরপ্রধান আশ্বাস দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE