Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Bidi

ছাড় মিলতে উৎপাদন বৃদ্ধি বিড়ির, মজুরি নিয়ে অসন্তোষ

জঙ্গিপুরের বিড়ির সব চেয়ে বড় বাজার উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লি থেকে বিধি নিষেধ উঠে গেলে বিড়ির উৎপাদন ১০০ শতাংশ নিয়ে যাওয়া যাবে বলে বিড়ি মহল্লার ধারণা।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
অরঙ্গাবাদ শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২০ ০৪:৫২
Share: Save:

রাজস্থানও বিড়িতে ছাড়পত্র দেওয়ায় বিড়ি শিল্পে উৎপাদন বাড়ল অনেকটাই। দু’সপ্তাহ আগেই জম্মু, হরিয়ানা ও পঞ্জাব বিড়িতে ছাড় দিয়েছে। এই মুহূর্তে জঙ্গিপুর মহকুমায় উৎপাদন বেড়ে ৫০ থেকে প্রায় ৮৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। জঙ্গিপুরের বিড়ির সব চেয়ে বড় বাজার উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লি থেকে বিধি নিষেধ উঠে গেলে বিড়ির উৎপাদন ১০০ শতাংশ নিয়ে যাওয়া যাবে বলে বিড়ি মহল্লার ধারণা।

কিন্তু বিড়ির উৎপাদন বাড়লেও শ্রমিকদের কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে সঙ্কট এখনও কাটেনি । বড় কারখানাগুলিতে এখনও ৩-৪ দিনের বেশি কাজ জুটছে না শ্রমিকদের। ফলে অনেকে কাজের তাগিদে ছোট কারখানাগুলিতে প্রাপ্য মজুরির চেয়ে অনেক কমে বিড়ি বাঁধতে বাধ্য হচ্ছেন।

ইতিমধ্যেই বিড়ির মজুরি ও কাজ নিয়ে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ব্লক অফিসগুলিতে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন একাধিক শ্রমিক সংগঠন। ১৫ জুন বিড়ি মালিক সংগঠনের অফিসের সামনে অরঙ্গাবাদ ও ধুলিয়ানে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছে সিটু সহ বামপন্থীরা। তাদের সঙ্গে যৌথ মঞ্চে যোগ দিয়েছে আইএনটিইউসিও।

স্বাভাবিক সময়ে জঙ্গিপুরের বিড়ি শিল্পে প্রায় ৫০ কোটি বিড়ি উৎপাদন হয় প্রতিদিন। তামাকজাত নানা বিধি নিষেধে বিড়ির উৎপাদন অন্তত ৩০ শতাংশ কমেছে বলে দাবি মালিকপক্ষের। তাই কাজ কমেছে শ্রমিকদের। জঙ্গিপুরের বিড়ি শিল্পে চুক্তি মতো মজুরি ১৫২ টাকা। কিন্তু কাজ কমে যাওয়ায় মজুরিও কমেছে অনেকটাই। তাই ছোট ছোট কারখানাগুলি সুযোগ বুঝে ৮৫ থেকে ১০০ টাকা মজুরিতে কাজ করিয়ে নিচ্ছে বলে বহু ক্ষেত্রেই অভিযোগ তুলেছে শ্রমিক সংগঠনগুলো।

অরঙ্গাবাদের এক বিড়ি শ্রমিকের অভিযোগ, ‘‘একে তো কম মজুরি, তার উপর মজুরির বদলে আটা, চাল, সর্ষের তেল ইত্যাদি দিচ্ছে অনেকেই। নিরুপায় হয়েই আমরা তা নিচ্ছি।” সুতির রেহেমা বিবিও বলছেন, ‘‘লকডাউন খুলে কাজ পেলেও সপ্তাহে ৪ দিনের বেশি কাজ পাচ্ছি না এখনও। দু’দিন মজুরি দিচ্ছে ১০০ টাকা করে। তাতেই কাজ করছি।”

সিটুর বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের রাজ্য সভাপতি আবুল হাসনাত খান বলছেন, “বহু দিন থেকেই বিড়ির উৎপাদন কমিয়ে বহু মালিক অন্য শিল্পে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। অদক্ষ বিড়ি শ্রমিকদের সে শিল্পে যুক্ত করা সম্ভব নয়। ফলে বিড়ি শিল্পে শ্রমিকের সংখ্যাও কমছে না। তাঁদের কাজ কমছে। তারই সুযোগ নিয়ে অসহায় শ্রমিকদের দিয়ে কম মজুরি দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এর মধ্যে কয়েক জন বড় কারখানার মালিকও রয়েছেন।”

আইএনটিইউসির বিড়ি শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক বাদসার আলি বলছেন, “মজুরি কম। মজুরির বদলে মালিকের কারখানারই চাল, আটা, সর্ষের তেল দেওয়া বন্ধ করতে হবে। তা না হলে ১৫ জুনের পর বিড়ি কারখানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করবেন শ্রমিকেরা।”

অরঙ্গাবাদ বিড়ি মালিক সংগঠনের সম্পাদক রাজকুমার জৈন বলছেন, “যেটুকু উৎপাদন হচ্ছে সেটাই শ্রমিকদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে।’’ বিড়ি কারখানার মালিক রাজ্যের শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলছেন, “১৫২ টাকা হাজার প্রতি বিড়ি বাঁধাইয়ের মজুরি। সে টাকা সকলেরই দেওয়ার কথা। তা ছাড়া, মজুরির বদলে চাল, আটা দিচ্ছেন শ্রমিকদের এটা জানি না। শ্রমিকদের বলব তা না নিতে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bidi Murshidabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE