Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

মানবীকে সরাতে কর্মবিরতি কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজে

এক মাসেরও বেশি হল তাঁরা ‘টিচার্স রুম’ ত্যাগ করে কলেজের অলিন্দে বসছিলেন। সেটাই ছিল তাঁদের প্রতিবাদ। ক্লাস নেওয়া বন্ধ করেননি। কিন্তু মঙ্গলবার অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে এক দিনের কর্মবিরতি পালন করলেন কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়

মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩৯
Share: Save:

এক মাসেরও বেশি হল তাঁরা ‘টিচার্স রুম’ ত্যাগ করে কলেজের অলিন্দে বসছিলেন। সেটাই ছিল তাঁদের প্রতিবাদ। ক্লাস নেওয়া বন্ধ করেননি। কিন্তু মঙ্গলবার অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে এক দিনের কর্মবিরতি পালন করলেন কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এ দিন তাঁরা কেউ ক্লাস নেননি। কলেজের বাগানে পোস্টার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে ধর্না গিয়েছেন। নিজের অবস্থানে অনড় থেকে এ দিনও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনায় বসেননি অধ্যক্ষ।

কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজে এই টানাপোড়েন দীর্ঘ দিনের। দুই যুযুধান গোষ্ঠীর এক দিকে অধ্যক্ষ মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষিকা বুলু মোদক, আর অন্য দিকে বাকি একুশ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। মানবীদেবী কলেজে অধ্যক্ষ হয়ে যোগ দেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁর সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরোধ শুরু হয়। তা আর থামেনি, বরং বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবারের কর্মবিরোতিতে কোনও সুরাহা-পথ না-মিললে তাঁরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন বলেও জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ২০১৬ সালে তাঁরা টানা সাত দিন কলেজের মাঠে অবস্থান করেন এবং কর্মবিরতি পালন করেন। কৃষ্ণনগরের রাস্তায় তাঁরা মিছিলও করেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে পা মিলিয়েছিল পড়ুয়াদের একাংশও। তার পরও বিভিন্ন বিষয়ে অধ্যক্ষ ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে।

বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সামনে রেখে গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে কলেজের অলিন্দে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন বুলু মোদক বাদে সব শিক্ষক-শিক্ষিকা। শিক্ষক গৌরদাস সরকার বলছেন, “সব সময় মানসিক ভাবে নির্যাতন করে যাচ্ছেন অধ্যক্ষ। বিভিন্ন ভাবে আমাদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। গবেষণা করার ছাড়পত্রও দিচ্ছেন না একাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে। কলেজের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছেন তিনি।”

কিন্তু নিজেদের মধ্যে গোলমালের জেরে কর্মবিরতি পালন করলে তো আখেরে ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠনে ক্ষতি হয়। এ ব্যাপারে সূর্যেন্দু চক্রবর্তী বলেন, “দিনের পর দিন মানসিক অত্যাচার সামলে সত্যিই কি সঠিক ভাবে শিক্ষা দেওয়া সম্ভব? আমরা চাইছি শিক্ষার সেই পরিবেশ ফিরে আসুক এই কলেজে।’’ যদিও মানবীদেবীর পাল্টা দাবি, কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ক্লাস না-নেওয়া থেকে শুরু করে নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। কোনও কোনও শিক্ষক ‘ক্রিমিন্যাল’ বলেও এ দিন তিনি মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, “আমাদের কলেজে বেশ কিছু নেতিবাচক শক্তি আছে। তাদের সরিয়ে দিতে পারলেই স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে। আমি সেই কাজটাই করছি।”

এই কলেজের প্রশাসক হিসাবে আছেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত। কলেজের অচলাবস্থা কাটাতে তিনি কী করছেন? জেলাশাসক বলেন, “আমার কাছে দুই পক্ষই অভিযোগ করছে। আমি তদন্ত করে রিপোর্ট শিক্ষা দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছি। এখনও তেমন কোনও নির্দেশ পাইনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Manabi Bandyopadhyay Krishnagar Women's College
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE