অন্য মিডডে মিল: আন্ডিরণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র
ভাত আর একটা পাঁচ মিশেলি নিয়ম রক্ষার তরকারি। বরাত ভাল হলে সপ্তাহান্তে এক দিন আধ খানা ডিম। এত দিন মিডডে’র পাতে এর বেশি খুব একটা আশা করেনি বেলডাঙার আন্ডিরণ প্রাথমিক স্কুলের ছেলেপুলেরা।
তাদের চমকে দিয়ে, নবান্নের দুপুরে পাত ভরে উঠল ‘লবানের’ নারকেল-মিষ্টিতে। শুধু কি তাই, ছিল ফল, দুধ, আখ, নারকেল দিয়ে তৈরি চাল নবান্ন। সঙ্গে ভাত, ডাল, পাঁচ তরকারি, পাঁচ ভাজা, শেষ পাতে নলেন গুড়ের পায়েস।
শীতের নবান্ন বৃহস্পতিবার যেন উজাড় করে দিল তাদের থালায়। পাত চেটে তাই শেষ হয় না যেন দুপুরের মিড ডে মিল।
স্কুলের ১৩৬ জন ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষক, স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও পঞ্চায়েত সদস্যরা অংশ নিলেন নবান্নের সেই উৎসবে। উৎসব সকলের হলেও অর্থিক কারণে সব বাড়িতে সমান ভাবে নবান্ন পালন হয় না। তাই স্কুল সকল ছাত্রছাত্রীর জন্য এ দিন নবান্নের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা ছিল এমন এলাহি।
পিছিয়ে নেই জেলার বাকি স্কুল। জানুয়ারীর প্রথমে নবান্ন পালিত হবে লালগোলার এমএন একাডেমিতে। এছাড়া লস্করপুর হাইস্কুলও নলেন গুড়ের সন্দেশ, পায়েস সহ লুচির ব্যবস্থা করবে ওই মাসেই বলে জানা গিয়েছে।
মুর্শিদাবাদ কৃষি প্রধান জেলা। সেখানে অনেক কৃষকের বাড়িতেই এই মরশুমে আমন ধান ওঠে। সেই ধান থেকে উৎপন্ন চাল থেকে এই নবান্ন উৎসব পালনের রীতি। চাল গুঁড়ো করে তার সঙ্গে হরেকরকম মিড ডে মিলের খাওয়ার একঘেয়েমি কাটাতে এই নবান্ন অনুষ্ঠান স্কুলে। বাড়তি খরচ বহন করে স্কুলের শিক্ষকরা।
বৃহস্পতিবার ছিল স্কুলে তৃতীয় পবর্মূল্যায়নের অঙ্ক পরীক্ষা। পরীক্ষার পর এ দিন স্কুলের ১৩৬ জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে শুরু হয় নবান্ন উৎসব। প্রথমে খুদে দের নাচ গান। পরে কলার পাতায় চাল নবান্ন পরিবেশন হয়। সঙ্গে দুপুরের ওই সবিস্তার মিড ডে মিল।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ দত্ত বলেন, ‘‘এক সময় জেলার নানা প্রান্তে নবান্ন উৎসব পালিত হতো বড় করে। তা আর নেই। এই উৎসব অসাম্প্রদায়িক উৎসব হিসাবে সমাদৃত ছিল। আমরা সেটা নতুন করে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি।’’
স্থানীয় অভিভাবকেরা এ দিন বলছেন, ‘‘অনেক দিন পরে স্কুলে নবান্ন যেন পুরনো দিন ফিরে এল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy