Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

মাটিতে বসেই মিল খেলেন পরিদর্শক

যদিও প্রশাসনিক কর্তারা মিডডে মিলে রান্না করা খাবারের গুণাগুণ বিচার করতে জেলার বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শনে গেলেও তাঁদের চোখে পড়ে না সে সব।

একসাথে: পড়ুয়াদের সঙ্গে মাটিতে বসেই মিডডে মিল খেলেন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক।

একসাথে: পড়ুয়াদের সঙ্গে মাটিতে বসেই মিডডে মিল খেলেন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৬
Share: Save:

ডাইনিং টেবিল না থাকায় কোথাও সেপটিক ট্যাঙ্কের উপরে বসে, কোথাও আবার খোলা আকাশের নীচে ধুলো মেখে মাটির উপরে থালা পেতে বসে মিডডে মিল খেতে বাধ্য হয় ছাত্রছাত্রীরা। কোথাও আবার খাওয়া নিয়ে ‘আমরা-ওরা’ ভেদ চললেও তাদের সকলেকেই মিড-ডে মিল খেতে হয় মাটিতে বা স্কুলের বৃষ্টি-ভেজা ছাদে বসেই।

যদিও প্রশাসনিক কর্তারা মিডডে মিলে রান্না করা খাবারের গুণাগুণ বিচার করতে জেলার বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শনে গেলেও তাঁদের চোখে পড়ে না সে সব। ফলে জেলার যে স্কুলগুলিতে ডাইনিং টেবিল নেই, সেখানে ডাইনিং টেবিল দেওয়ার ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করে না। ফলে বদল হয় না পরিস্থিতির!

ফলে শনিবার দুপুরে জলঙ্গির নন্দলালপুর গার্লস হাইস্কুল পরিদর্শনে গিয়ে মাটিতে বসেই ছাত্রীদের মিডডে মিল খাওয়ার দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন জলঙ্গি দক্ষিণ চক্রের ভারপ্রাপ্ত অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক দীপঙ্কর রায়। তিনি দেখেন—শিক্ষিকারা চেয়ার-টেবিলে বসে টিফিন খাচ্ছেন এবং তাঁদের সামনেই মেঝেতে বসে মিডডে মিল খাচ্ছেন ছাত্রীরা। তখন তিনিও সটান মেঝেতে তাঁদের সঙ্গে বসে পড়েন ছাত্রীদের সঙ্গে মিডডে মিল খেতে। এতে কিছুটা থতমত হয়ে পড়েন শিক্ষিকারা। পরে নিজেদের সামলে নিয়ে তাঁকে চেয়ারে বসে খাওয়া-দাওয়া করার অনুরোধ করেন। কিন্তু অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ওই কথার আমল দেননি। শেষ পর্যন্ত মেঝেতে বসেই মিডডে মিল খান তিনি।

ক্ষোভ চাপতে পারেননি অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক দীপঙ্কর সরকার। তিনি বলছেন, ‘‘ছাত্রীদের মাটিতে বসিয়ে চেয়ারে বসে খাওয়া-দাওয়া সারছেন শিক্ষিকারা, বিষয়টি মেনে নিতে পারিনি। বিষয়টি আমার খারাপ লেগেছে বলে ছাত্রীদের সঙ্গে বসে মিডডে মিল খেয়েছি।’’ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষিকা অর্পিতা মণ্ডল বলছেন, ‘‘স্কুলে মিডডে মিলের ডাইনিং হল নেই। আবেদন করা সত্ত্বেও সেটা মেলেনি। কয়েক মাস আগে শতরঞ্চ কিনেছিলাম। কিন্তু খাবার পড়ে নোংরা হয়ে যাওয়ায় ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে মেয়েদের মেঝেতেই বসেই মিডডে মিল খেতে হচ্ছে।’’

দীপঙ্কর সরকার বলছেন, ‘‘তিন মাস হয়ে গেল জলঙ্গির ওই চক্রের দায়িত্বে রয়েছি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও আবেদন পাইনি। ডাইনিং হলের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ লিখিত জানালে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jalangi Mid Day Meal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE