চষে দেওয়া হচ্ছে গম খেত। রবিবার ডোমকলের ভগীরথপুরে। নিজস্ব চিত্র
পরামর্শের মোড়কে আসলে বিষয়টা ছিল নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু সে নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে দুই জেলাতেই বেশ কিছু এলাকায় গম চাষ হয়েছে। এখন কৃষি দফতরের আধিকারিকরা বলছেন, আগামী দিনে সময়ে গম চাষ করতে হলে, পর পর দু’বছর গম চাষ বন্ধ ছাড়া গতি নেই।
প্রথম দিকে গম জমি ভেঙে দিয়ে দুই জেলাতেই দাঁড়িয়ে থেকে ডাল বীজ ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন কৃষি দফতরের আধিকারিরকেরা। এ বার কিন্তু এ বার গম জমি ভাঙতে গিয়ে বাধা পেতে হচ্ছে কৃষি দফতরের লোকজনকে। কোথাও কোথাও তাঁদের আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে গম জমি ভাঙার সিদ্ধান্ত নিল কৃষি দফতর।
গত দু’বছর বাংলাদেশ থেকে ঝলসা রোগ হানা দিয়েছিল নদিয়া-মুর্শিদাবাদের গম খেতে। তার ফলে গম পুড়িয়ে নষ্ট করে ফেলতে হয়েছিল। তার জন্যই গম চাষে নিষেধাজ্ঞা।
ডোমকলে মহকুমাশাসক জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করে রবিবার থেকে গম খেত ভেঙে দেওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। রবিবার ডোমকলের ভগীরথপুরে পুলিশ ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে গম জমি ভেঙেও দেওয়া হয়েছে। তবে সোমবার ডোমকলের ডুমুরতলায় হাতে গোনা কিছু পুলিশ কর্মীকে সাথে নিয়ে গম চাষ ভাঙতে গিয়ে বাঁধা পায় কৃষি দফতর। চাষিদের দাবি, বিকল্প চাষের বীজ দিলে তবেই তাঁরা খেতের গম নষ্ট করতে দেবেন। তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। যার জেরে প্রশাসনের লোকজন ফিরে আসতে বাধ্য হন। পরে কৃষিদফতরের কর্তারা ডোমকলের মহকুমাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ঠিক হয়েছে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হবে। আজ, মঙ্গলবার গড়াইমারিতে গম চাষ ভাঙ্গা হবে। ডোমকলের মহকুমাশাসক তাহিরুজ্জামান বলছেন, “ডুমুরতলার চাষিদের বীজ না পাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’ মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলগানাথন বলছেন, “চাষিদের বুঝিয়ে গম খেত ভেঙে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বাধা আসছে। তাই ১৪৪ ধারা জারি করতে হয়েছে।’’ নদিয়ার হোগলবেড়িয়ার হরেকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও গম জমি ভাঙতে বাধা আসছে। ফলে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, পরামর্শ উপেক্ষা করে গম চাষ চাষিরা করলেনই বা কেন? তা হলে কী কৃষি দফতরের প্রচার, বা বোঝানোর ক্ষেত্রে কোনও খামতি ছিল?
নদিয়ার হোগলবেড়িয়ার এক চাষি বলছেন, আমাদের এলাকায় গম মূলত খাবারের জন্য চাষ করা হয়। গত বছরও বিঘাপ্রতি পাঁচ-সাড়ে পাঁচ কুইন্টাল গম হয়েছিল। তাই কিছু চাষি গম চাষ করেন। ডোমকলের এক চাষি বলছেন, “গমের বিকল্প চাষে ডাল ও তৈলবীজ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তা অনেক চাষি পাননি। কেউ রাগে গম বুনেছেন।’’ নদিয়ার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) রঞ্জন রায়চৌধুরী বলছেন, “প্রয়োজনে মুর্শিদাবাদের মত এখানেও ১৪৪ ধারা জারি করে গম জমি ভাঙা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy