Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Krishnanagar

ঝাঁঝ কোথায়, প্রশ্ন তৃণমূলেই

পুরভোটের আগে নাগরিকত্ব ইস্যুকে কেন হাতিয়ার করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নই তুলেছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশ। 

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২০ ০২:১৬
Share: Save:

নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে জেলায় সে ভাবে তৃণমূলকে রাস্তায় নামতে দেখা যাচ্ছে না। অন্তত এমনটাই অভিযোগ তুলছেন দলেরই একটা অংশ। তাঁদের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল-বিজেপি আঁতাতের অভিযোগ তোলার সুযোগ পাচ্ছেন বিরোধীরা। যা আসন্ন পুরভোটের আগে দলকে বিপাকে ফেলতে পারে।

সম্প্রতি রাজভবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মমতার বৈঠক নিয়ে কংগ্রেস ও বামেরা নানা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। বামেদের প্রশ্ন, কেরলে নাগরিকত্ব আইন বিরোধী প্রস্তাব পাশ হলেও এ রাজ্যে কেন তেমন কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। এ নিয়ে জল্পনার মাঝে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় তৃণমূলকে সে ভাবে পথে নামতে না দেখা যাওয়ায় নিচু তলার কর্মীরা কার্যত হতাশ হয়ে পড়ছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, আসন্ন পুরসভা ভোটে নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জি অন্যতম প্রধান ইস্যু হতে চলেছে। অথচ এ নিয়ে কৃষ্ণনগর শহর-সহ গোটা কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলায় তৃণমূলকে এখনও সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে না।

অন্য দিকে, নাগরিকত্ব বিল পাশ হওয়ার পর থেকেই বামেরা একের পর এক প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে চলেছে। ৫ জানুয়ারি কৃষ্ণনগর শহরে কর্মিসভা করেছিলেন এলাকার সাংসদ তথা কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহুয়া মৈত্র। সেখানে নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কথা হলেও রাস্তায় নেমে আন্দোলন কোথায়? দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ জানুয়ারি পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে একটা প্রতিবাদ মিছিল ও সভা হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগে তেমন কোনও কর্মসূচির কথা বলতে পারছেন না নেতারা। অথচ মাস কয়েক আগে লোকসভা ভোটে এই শহরেই প্রায় ২৭ হাজার ভোটে বিজেপির থেকে পিছিয়ে থেকেছে তৃণমূল। ফলে পুরভোটের আগে নাগরিকত্ব ইস্যুকে কেন হাতিয়ার করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নই তুলেছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশ।

তবে অভিযোগ মানতে নারাজ কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃণমূলের অসীম সাহা। তিনি বলেন, “একেবারেই ঠিক কথা না। প্রতিনিয়ত নানা কর্মসূচি নিচ্ছি। বিশেষ করে ১২ থেকে ১৯ জানুয়ারি শহরের প্রতিটা এলাকায় মিটিং মিছিল করা হবে। সেই মতো কর্মসূচি তৈরি হয়েছে।”

তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠিনক জেলার আহ্বায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ব্লকে কর্মসূচি নিচ্ছি। কালীগঞ্জেই চারটে কর্মসূচি নেওয়া হয়ে গিয়েছে।” কিন্তু দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, বামেরা প্রকাশ্যে কটাক্ষ করছে। যদি দল সে ভাবে রাস্তায় না নামে, তাহলে মানুষকে বিরোধীরা আরও বিভ্রান্ত করবে। পুরভোটের আগে বামেরা কিন্তু এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। রবিবার তাদের জেলা কমিটির বৈঠক হয়েছে। সেখানে তারা আরও বেশি করে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে রাস্তায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “আমরা তো রাস্তায় থাকবই। সেই সঙ্গে বিজেপি ও তৃণমূলের গোপন বোঝাপড়াটা মানুষের সামনে তুলে ধরব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE