Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে লেখাপড়ার ফাঁকে ওঁরা এলাকায় ঘুরে-ঘুরে চাঁদা তুলছেন

অসুস্থ শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েই বর্ষবরণ

কারও হৃদযন্ত্রে ফুটো, কারও রক্তে বাসা বেধেছে ক্যানসার, কেউ থ্যালাসেমিয়ায় ধুঁকছে।স্কুলবেলা না কাটা ওই শিশুদের সুস্থ করে তোলার পণ করেছেন ধুবুলিয়ার জনা পঁচিশেক পড়ুয়া। চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে লেখাপড়ার ফাঁকে তাঁরা এলাকায় ঘুরে ঘুরে চাঁদাও তুলছেন।

পাশে-পড়ুয়া: সাহায্যের জন্য সাহায্যের আবেদন। ধুবুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

পাশে-পড়ুয়া: সাহায্যের জন্য সাহায্যের আবেদন। ধুবুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
ধুবুলিয়া শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪২
Share: Save:

কারও হৃদযন্ত্রে ফুটো, কারও রক্তে বাসা বেধেছে ক্যানসার, কেউ থ্যালাসেমিয়ায় ধুঁকছে।

স্কুলবেলা না কাটা ওই শিশুদের সুস্থ করে তোলার পণ করেছেন ধুবুলিয়ার জনা পঁচিশেক পড়ুয়া। চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে লেখাপড়ার ফাঁকে তাঁরা এলাকায় ঘুরে ঘুরে চাঁদাও তুলছেন। আগামী ১ বৈশাখ ওই টাকা তাঁরা তুলে দেবেন দুঃস্থ ওই সাত শিশুর অভিভাবকের হাতে।

ধুবুলিয়া টিবি হাসপাতালপাড়ার বাসিন্দা সুবীর পাল গৃহশিক্ষকতা করেন। রাখী পূর্ণিমার দিন ছাত্রছাত্রীরা তাঁকে উপহার দিতেন। সুবীরবাবু বলেন, ‘‘আমাকে উপহার না দিয়ে গরিব পড়ুয়াদের সাহায্য করলেও তো পারো।’’ তার পর থেকে তাঁর ছাত্রছাত্রীরা রাখী পূর্ণিমার দিন দুঃস্থ পড়ুয়া ও অসুস্থ শিশুদের সাহায্য করা শুরু করেন।

মাস চারেক আগে ধুবুলিয়ার এক শিশুর চিকিৎসার জন্য ওই পড়ুয়ারা কিছু আর্থিক সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু সেই শিশুকে বাঁচানো যায়নি। তাই বলে ওঁরা হাল ছাড়েননি। এলাকার সাত জন অসুস্থ শিশুকে সুস্থ করতে ফের তাঁরা মাঠে নেমেছেন।

পড়ুয়াদের কেউ চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছেন। কেউ কেউ আবার এখনও মাধ্যমিক ডিঙোয়নি। তাঁদের একজন দীপঙ্কর ঘোষ বলছেন, “স্যারের কথাটা সারা জীবন মনে রাখব। এ বার অনেক টাকা দরকার। তাই চাঁদা তুলতে শুরু করেছি।”

কৃষ্ণনগরের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া মহানন্দা বসুর কথায়, ‘‘আমরা সাত জন শিশুকে চিহ্নিত করেছি। তাঁদের বাড়ি ধুবুলিয়া ও লাগোয়া এলাকায়। ওঁরা সকলেই অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়ে। চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার। সেই কারণেই আমরা সবাই ওদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছি।’’

লোকজনও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ কর্মকার বলছেন, ‘‘আমরাও সবাই যে যেমন পারছি ওদের চাঁদা দিচ্ছি।’’ ধুবুলিয়ার প্রদীপ মুখোপাধ্যায় পেশায় পূজারী। তাঁর মেয়ে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া মৌমিতার হৃদযন্ত্রে সমস্যা রয়েছে। প্রদীপবাবু বলছেন, ‘‘ওই পড়ুয়ারা আমার মতো গরিব লোকজনের জন্য যা করছে তার কোনও তুলনা হয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Money Collection Students Poor Ill Children
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE