Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
murshidabad

ভাঙন রুখতে গঙ্গায় ফের বাঁধা হবে স্পার

কমিটির চেয়ারম্যান আর কে গুপ্তা জানান, পরিস্থিতি দেখে গিয়ে দিল্লি ফিরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে হোসেনপুর থেকে পারলালপুর মন্দির পর্যন্ত স্পার বাঁধানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র

পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ফরাক্কা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:২১
Share: Save:

ফরাক্কা ব্যারাজের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসরি কমিটির দু’টি পরিদর্শক দল বুধ ও বৃহস্পতিবার দু’দিন ধরে ঘুরলেন ফরাক্কার হোসেনপুর, পারলালপুর ও কুলিদিয়ার গ্রামের ভাঙন কবলিত এলাকায়। শুক্রবার ব্যারাজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তাঁরা। সেখানে ছিলেন রাজ্য সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়াররাও।

কমিটির চেয়ারম্যান আর কে গুপ্তা জানান, পরিস্থিতি দেখে গিয়ে দিল্লি ফিরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে হোসেনপুর থেকে পারলালপুর মন্দির পর্যন্ত স্পার বাঁধানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফরাক্কা ব্যারাজের এই টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসরি কমিটিই ভাঙন সহ যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। তাদের পরামর্শ মেনেই কাজ করে কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রক।

তাদের সিদ্ধান্তে স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ভাঙন কবলিত গ্রামগুলিতে। গত বছর ভয়াবহ ভাঙন ও বন্যার যৌথ আক্রমণের কবলে পড়ে এই গ্রামগুলির বহু মানুষ ভিটেছাড়া হন। আশ্রয় নেন ফরাক্কার স্কুলে। প্রায় দু’শো পরিবার এখনও ফরাক্কা ব্যারাজেই ঘর বেঁধে বাস করছেন।

২০১৩ সালে স্পার বাঁধানোর পর হোসেনপুরে নদী ভাঙন বন্ধ হয়েছিল। ২০১৮ সালে ফের শুরু হয় ভাঙন। বহু বাড়ি নদী গর্ভে চলে যায়। এরপরই গত বছর হোসেনপুর এলাকায় ১৫টি স্পার পাথর দিয়ে বাঁধানোর কাজ শেষ হয় অগস্টের প্রথম সপ্তাহে। ভরসা ছিল হয়ত এ যাত্রা রুখে দেওয়া যাবে ভাঙন। কিন্তু তা হয়নি।

নয়নসুখ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুলেখা মণ্ডল বলেন, “ডাউন স্ট্রিমে ৬.৯ কিলোমিটার পর্যন্ত গঙ্গা ভাঙন ঠেকাবার দায়িত্ব ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষের। তাই ফরাক্কা ব্যারাজ কাজ শুরু করে ১৮০০ মিটার পাড় পাথর দিয়ে বাঁধাতে। ১৬.৬৫ কোটি টাকা খরচ হয় তাতে। কিন্তু নদীতে জলস্রোত এতটাই বেশি হয়ে পড়ে যাতে এক মাসের মধ্যেই ধসে পড়ে একে একে সব ক’টি স্পার। সঙ্গে বন্যা। ফলে গ্রামের প্রায় ৪০০ মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয় নেন ফরাক্কায়। গোটা গ্রাম ধ্বংসস্তূপের চেহারা নেয়। ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ ভাঙন রোধে নতুন করে ভাবনা চিন্তা শুরু করায় কিছুটা আশার আলো দেখছে মানুষ।”

এলাকার গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক আসিফ ইকবাল জানান, নদী পাড়ের উপরের দু’ফুট মতো শক্ত মাটির অংশ ছাড়া সবটাই বালি। সামান্য জলের ধাক্কাতেও তা ভেঙে পড়ে। তিনি বলেন, ‘‘তাই স্পার বাঁধানো শুরুর আগেই আমরা দাবি করেছিলাম নদীর নীচের অংশ বালি বোঝাই বস্তা দিয়ে সিল করে দিতে, যাতে জলের ধাক্কা কোনওভাবেই নদীর পাড়ে না লাগতে পারে। তার উপর পাথরের স্পার দিয়ে বাঁধালে তাতে স্পার ধসের আশঙ্কা অনেকটাই কমে। কিন্তু তা করা হয়নি।’’
তাঁর দাবি, গঙ্গার মাঝের চরে ভাঙন সব থেকে বিপজ্জনক হয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কমিটির সদস্যদের কাছে গঙ্গার ড্রেজিং করার দাবি জানিয়েছি। তাঁরা আমাদের কথা শুনেছেন।’’ এখন দিল্লিতে ফিরে তারা কী সিদ্ধান্ত নেন, সেই আশায় বুক বেঁধেছে গোটা এলাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murshidabad Farakka
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE