Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

টিফিনের টাকায় জলের কলে মুখ

পৃথিবীকে রক্ষা করতে প্লাস্টিক বর্জন, জল অপচয় বন্ধ করা যে এই মুহূর্তে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, তা আজ বুঝতে পেরেছে শিশুরাও। গ্রেটা থুনবার্গের মতো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শিশু-কিশোরেরা একজোট হচ্ছে।

 নষ্ট হচ্ছে জল।

নষ্ট হচ্ছে জল।

সাগর হালদার
তেহট্ট শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪৯
Share: Save:

এ দিন এলাকার বেশ কিছু স্কুলপড়ুয়া নিজেদের টিফিনের টাকা জমিয়ে জলের অপচয় কমাতে টাইম কলে মুখ লাগিয়েছে। শিশুদিবসের দিন তাদের এমন একটি উদ্যোগে স্বভাবতই খুশি এলাকার মানুষ তথা পরিবেশকর্মীরা।

পৃথিবীকে রক্ষা করতে প্লাস্টিক বর্জন, জল অপচয় বন্ধ করা যে এই মুহূর্তে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, তা আজ বুঝতে পেরেছে শিশুরাও। গ্রেটা থুনবার্গের মতো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শিশু-কিশোরেরা একজোট হচ্ছে। পরিবেশ বাঁচাতে রাস্তায় নামছে। এই আন্দোলন থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে তাবড় তাবড় রাষ্ট্রনেতাদের দিকেও, কেন তাঁরা আগামীর পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তোলার দায়িত্ব বিষয়ে এতখানি উদাসীন? জেলার শিশুরাও কিন্তু পরিবেশ সচেতনতা থেকে খুব একটা পিছিয়ে নেই। শিশুদিবসে তারাও নাগরিক হিসাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছে একেবারে অন্য ভাবে। পরিবেশ রক্ষায় জল অপচয়ের বিরুদ্ধে বার্তা দিল তেহট্টের শিশুরা।

জানা গিয়েছে, এলাকার টাইম কল থেকে জল পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা তারা নিত্যদিনই দেখতে পায়। সেখান থেকেই তাদের মনে জলের অপচয় রোখার ভাবনাটি মাথাচাড়া দেয়। তেহট্ট রামকৃষ্ণ আশ্রমের স্কুল পড়ুয়ারা সিদ্ধান্ত নেয় নিজেদের টিফিনের পয়সা জমিয়ে তারা ওই সব কলে মুখ লাগানোর ব্যবস্থা করবে। এবং এলাকার মানুষকে এই বিষয়ে সচেতন করবে। যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। বৃহস্পতিবার সকালে ওই কর্মকাণ্ডের বাস্তবায়নে রাস্তায় নেমে পড়ে ওই স্কুলের পড়ুয়ারা। তাদের সঙ্গে ছিলেন ওই স্কুলের শিক্ষকেরাও।

এ দিন ওই স্কুলের খুদে পড়ুয়ারা বলে, ‘‘বিভিন্ন পাড়ায় টাইম কল থেকে অনবরত জল পড়ে যায়। আমরা টিফিনের বেশ কয়েক দিনের পয়সা জমিয়ে টাইম কলগুলির মুখ কিনেছি শিক্ষকদের সাহায্যে নিয়ে।’’

ওই স্কুলের শিক্ষক অজয় দত্ত বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের ভূমিকা দেখে আমি গর্বিত। ওরা আমায় অনেক আগে থেকেই বলেছিল। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েও ছিলাম। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। তাই বাচ্চাদের নিয়ে নিজেরাই মাঠে নেমে পড়েছি।’’

চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রী রিমি মণ্ডল বলে, ‘‘রাস্তা দিয়ে এলেই দেখি এক সময়ে কল থেকে জল পড়ে যাচ্ছে। কোনওটির মুখ থাকে না। কেউ লাগায়ওনা। তাই আমরা বন্ধুরা মিলে আলোচনা করে এই কাজ করেছি। ’’

তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সায়ক ঘোষ চৌধুরী বলে, ‘‘আমরা আজ প্রত্যেক দোকানে দোকানে ঢুকে প্লাস্টিক বর্জনের কথা বলেছি। শুধু তাই নয়, প্রত্যেকটা টাইম কলের সামনে আমরা কাগজের পোস্টার লাগিয়েছে যে, জল অপচয় বন্ধ করা হোক।’’ কেউ কেউ মনে করছেন, শিশুদিবসে এর চেয়ে ভাল উদাহরণ আর কী হতে পারে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Children's Day Water Wastage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE