Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষায় মানসীরা

শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দিতে শুরু করল মানসী। সে দিন ছেড়ে দেওয়া হলেও বুধবার ফের হাসপাতালেই ফিরতে হয়েছে তাকে। বৃহস্পতিবার সেখানে ইংরেজি পরীক্ষা দিয়ে মানসী বলে, “আপ্রাণ চেষ্টা করেছি ভাল করে পরীক্ষা দেওয়ার।” 

মানসী সরকার ও পল্লবী বিশ্বাস (ডান দিকে)।— নিজস্ব চিত্র

মানসী সরকার ও পল্লবী বিশ্বাস (ডান দিকে)।— নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৮ ০০:৩৮
Share: Save:

সেই কবে জীবন-মরণ লড়াইয়ের শেষে ফিরেছিল মেয়েটা। কিন্তু পায়ের আঙুল গিয়েছিল বেঁকে। হাত দু’টোও আর ভাঁজ হয় না। কিন্তু প্রতিকূলতা তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। মাধ্যমিকের গণ্ডী পেরিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের আঙিনায় পৌঁছেছে শান্তিপুরের মানসী সরকার। বাবা আনন্দ সরকার দিনমজুর। পড়াশোনা থেকে চিকিৎসা, কোনও কিছুতেই সে ভাবে টাকা খরচ করতে পারেননি। দুর্বল পায়েই সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দিয়ে ডাংখিরার বাড়ি থেকে সে যাতায়াত করেছে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের স্কুলে। সোজা হাতে কলম ধরে লিখতে শিখেছে।

এই করেই স্কুলের শেষ পরীক্ষার দোরগোড়ায় পৌঁছেছিল বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। পরীক্ষার ভোরে যা ঘটল তার জন্য প্রস্তুত ছিল না সে—অসহ্য পেটে যন্ত্রণা। শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দিতে শুরু করল মানসী। সে দিন ছেড়ে দেওয়া হলেও বুধবার ফের হাসপাতালেই ফিরতে হয়েছে তাকে। বৃহস্পতিবার সেখানে ইংরেজি পরীক্ষা দিয়ে মানসী বলে, “আপ্রাণ চেষ্টা করেছি ভাল করে পরীক্ষা দেওয়ার।”

মঙ্গলবার মিলনবাগান হাইস্কুলে বাংলা পরীক্ষা দেওয়ার পরে বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল হবিবপুর মাঠপাড়ার পল্লবী বিশ্বাসও। হবিবপুর ব্লক হাসপাতালে ভর্তি হয়েও পরীক্ষা দেবে বলে বুধবার ফিরেছিল। পেটে যন্ত্রণা হতে থাকায় রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ফের ভর্তি হতে হয়। সেখান থেকেই পরীক্ষা দিয়েছে সে। তেহট্ট শ্রীদামচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী লাভলি হালদার আবার এ দিন পরীক্ষা শুরুর ঘণ্টাখানেক পরে অজ্ঞান হয়ে যায়। তেহট্ট উচ্চ বিদ্যালয়ে সে পরীক্ষা দিচ্ছিল। খবর পেয়ে তেহট্ট উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে এসে নিজের গাড়িতেই তাকে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান চিকিৎসক অভিজিৎ হালদার। সেখানেই পরে সে অতিরিক্ত সময়ে পরীক্ষা দেওয়া শেষ করে।

এক কলেজ-পড়ুয়া বিবাহিতা তরুণীকে নিয়ে পালিয়ে অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল বেলডাঙার নওপুকুরিয়া জে জে হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রকে। বাড়ি তার স্থানীয় কাজিসাহা এলাকায়। তরুণীর বাড়িও তার কাছাকাছি বেগুনবাড়ি এলাকায়। বেলডাঙা এসআরএফ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। কিছু দিন হল তাঁর বিয়ে হয়েছে। তরুণীর বাবার অভিযোগ, গত ৯ ফেব্রুয়ারি বাপের বাড়ি থেকে কুমারপুরে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে টোটো থেকে তাঁকে ‘অপহরণ’ করে ট্রেনে উত্তর ২৪ পরগনার দমদমে নিয়ে যায় ছাত্রটি। সেখানে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে হোটেলে রাখে তাঁকে। তিন দিন পরে একটি ভাড়াবাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে থাকে সাত দিন। ইতিমধ্যে ছাত্রটির বাবা পুলিশে জানিয়েছিলেন। পুলিশ খোঁজাখুঁজি করছে জেনে ১০ দিন পরে রেজিনগর স্টেশনের কাছে তরুণীকে পৌঁছে দিয়ে ছেলেটি চলে যায়। ১৯ ফেব্রুয়ারি মেয়ের বাবা অপহরণের অভিযোগ করলে পুলিশ ছেলেটিকে ধরে। অপ্রাপ্তবয়স্ত হওয়ায় ছাত্রটির ঠাঁই বহরমপুরের সরকারি হোমে। বেলডাঙার গোবিন্দসুন্দরী বিদ্যাপীঠে ২৬ নম্বর ঘরে সে-ও পরীক্ষা দিচ্ছে পুলিশি পাহারায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE