Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
অভাব রয়েছে সচেতনতায়

কম আয়রন ট্যাবলেট নেই

রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় যখন আয়রন ট্যাবলেটের সঙ্কট দেখা যাচ্ছে তখন নদিয়া জেলায় চিত্রটা ইতিবাচক। জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা দাবি করছেন, প্রয়োজনের তুলনায় জেলার ভাঁড়ারে আয়রন ট্যাবলেট বরং বেশি রয়েছে।

সুস্মিত হালদার 
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৯
Share: Save:

রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় যখন আয়রন ট্যাবলেটের সঙ্কট দেখা যাচ্ছে তখন নদিয়া জেলায় চিত্রটা ইতিবাচক। জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা দাবি করছেন, প্রয়োজনের তুলনায় জেলার ভাঁড়ারে আয়রন ট্যাবলেট বরং বেশি রয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলছেন, “আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে সময় মতো সরকার নির্ধারিত সংস্থার কাছ থেকে আয়রন ট্যাবলেট কিনে থাকি। তার স্টকও যথেষ্ট রয়েছে।”

চলতি বছর নদিয়ায় প্রায় ৮০ হাজার প্রসূতিকে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ানোর কথা। যে সব প্রসূতি রক্তাল্পতায় ভুগছেন তাঁদের দ্বিগুণ পরিমাণ আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। তার জন্য প্রয়োজন ৪ কোটি ৩২ লক্ষ ট্যাবলেট। ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলার ভাঁড়ারে রয়ে গিয়েছে প্রায় ৫৯ লক্ষ ১৫ হাজার ট্যাবলেট। এর বাইরেও ৫০ লক্ষ ট্যাবলেটের ‘অর্ডার’ দেওয়া হয়ে গিয়েছে বলে স্বাস্থকর্তাদের দাবি। সেটাও কয়েক দিনের মধ্যে চলে আসবে।

শুধু প্রসূতি নয়, শিশু ও কিশোরদের জন্যও আয়রন ট্যাবলেটের অভাব নেই বলে জানিয়েছেন জেলার কর্তারা। ২০১৭-১৮ বর্ষ সব প্রয়োজন মিটিয়েও প্রসূতিদের জন্য আয়রন ট্যাবলেট বেশি ছিল প্রায় ৫১ লক্ষ ২ হাজার। এ বারও সেই একই পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে ট্যাবলেটের অভাব না-থাকলেও সাধারণ মানুষকে সচেতন করার ক্ষেত্রে যে ফাঁক থেকে যাচ্ছে তা একাধিক স্বাস্থ্যকর্তা মানছেন। ফলে ট্যাবলেট পেয়েও হয়তো সকলে তা খাচ্ছে না বা খেতে খেতে মাঝপথে ছেড়ে দিচ্ছে।

জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘যে সব প্রসূতির রক্তাল্পতা থাকে তাঁদের প্রসবের আগে ও পরে এই ট্যাবলেট বেশ কিছু দিন খেতে হয়। অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া প্রসবের পরে ওষুধ বন্ধ করে দেন। স্কুলে ট্যাবলেট বিলি করা হলে অনেক অভিভাবক মনে করেন বিনে পয়সার ট্যাবলেট ভাল নয়। তাঁরা ছেলেমেয়েদের খেতে বারণ করেন।’’ আর এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘বেশি দিন আয়রন ট্যাবলেট খেলে দাঁতে ছোপ পড়তে পারে বা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। অনেক সময় ট্যাবলেট দেওয়ার সময় প্রসূতি বা কিশোরীকে সে সব ভাল করে ব্যাখ্যা করা হয় না। তাই এই সব উপসর্গ শুরু হলে সে তারা ভয় পেয়ে ওষুধ বন্ধ করে দেয়।’’

ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য স্বাস্থ্য দফতর জেলায় জেলায় ট্যাবলেট পাঠায়। অন্যদের জন্য জেলা কর্তারা ‘ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ স্টোর’ এর মাধ্যমে সরকারের বাছাই করা সংস্থার থেকে অনলাইন ব্যবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট কিনে থাকে। জেলার এক স্বস্থ্যকর্তার কথায়, “এই বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখি। সব সময় চেষ্টা করি ব্লকে যাতে প্রয়োজনের তুলনায় ট্যাবলেট বেশি সরবরাহ হয়, যাতে প্রসূতি বা পড়ুয়ারা কোনও ভাবে আয়রন ট্যাবলেট থেকে বঞ্চিত না হয়।” রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী অবশ্য রাজ্যের কোথাও আয়রন ট্যাবলেটের ঘাটতি রয়েছে বলে মানতে রাজি নন। তিনি বলছেন, “শুধু নদিয়া নয়, রাজ্যের কোনও জেলাতেই আয়রন ট্যাবলেট নিয়ে সমস্যা নেই। সব জায়গায় যথেষ্ট পরিমাণ ট্যাবলেট রয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Iron Tablet Nadia Health Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE