উচ্চমাধ্যমিকে ৬৯৪ পাওয়ার পরে উচ্ছ্বাস স্বাগতার পরিবারে। নিজস্ব চিত্র
দরজার সামনে এ-ওর ঘাড়ে চেপে চটি-জুতোর পাহাড় ডিঙিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দিয়ে গেল কেউ। মেয়েটি আরও এক বার হাসল। সেই হাসিতে রোদ্দুর আছে তবে কিঞ্চিৎ মনখারাপও। বলছে, ‘‘দু-দুটো পরীক্ষা দিতে পারলাম না, অ্যাভারেজ নম্বর পেয়েছি। আমি নিশ্চিত পরীক্ষা দিলে আরও ক’টা নম্বর বেশি পেতাম আর তা হলে...’’ তা হলে কী হত কেউ না জানলেও উচ্চ মাধ্যমিতে সম্ভাব্য ষষ্ট জঙ্গিপুরের স্বাগতা দাস মনে মনে অঙ্ক কষছে, হয়ত তালিকায় আরও একটু উপরের দিকে থাকা যেত। আফসোসটা তাই, নাছোড় এক মাছির মতো লেগে রয়েছে তার সঙ্গে।
জঙ্গিপুরের জোতকমল হাইস্কুলের স্বাগতা পেয়েছে ৪৯৪, শতাংশের হিসেবে ৯৮.৮%। বাবা তপন দাস জোতকমল হাইস্কুলেরই ইতিহাসের শিক্ষক। বলছেন, “৩টে নাগাদ ফোন আসে বাড়িতে। শিক্ষা সংসদ থেকে আমাদের বাড়ির ঠিকানাটা ঠিক কোথায় জানতে চাওয়া হয়েছিল, তখনই বুঝেছিলাম, মেয়ে প্রথম দশে রয়েছে। তবে অবাক হলাম ৫০০ নম্বরে মাত্র ৬ নম্বর কম পেয় ষষ্ঠ স্থান দেখে!’’ স্বাগতা অবশ্য বলছে, “যা আশা করেছিলাম, তার চেয়ে একটু বেশিই পেয়েছি।’’ করোনা-আবহে সব স্বপ্নের উপরেই ধুলো পড়েছে কেমন যেন অনিশ্চয়তায় ঝাপসা। নিজের মনেই যেন বিড়ি বিড় করছে, ‘‘ভেবে তো বসে আছি ডাক্তারি পড়ব, জানি না কোথায় কী করে, সব তালগোল পাকিয়ে গেছে।’’ দুই বোনের ছোট সে। দিদি নার্সিং নিয়ে পড়ছে। ছুটিতে এখন বাড়িতেই। তবে পড়াশোনার ফাঁকে দিদির সঙ্গে গল্প-খুনসুটি আর গল্পের বই ‘মন’ দিয়েই দুটো কাজ করেছে সে। বলছে, ‘‘তেমন নির্দিষ্ট সময় করে নয়, যখন ভাল লেগেছে পড়েছি। ঘুম পেলেই ঘুমিয়ে পড়েছি। তবে যেটুকু পড়েছি মন দিয়ে।’’ টিউশনির তেমন সাহায্য দরকার হয়নি তার, যেটুকু পড়াশোনা বাবা আর মা লক্ষ্মীদেবীর কাছে। তবে, স্কুলের সব বিষয়ের শিক্ষকেরাই সব রকম সাহায্য যে করেছেন, তা স্বীকার করছে মেয়েটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy