নিথর: স্কুলে এল শিক্ষকের দেহ। নিজস্ব চিত্র
ফোন করেই আশ্বাস দিয়েছিলেন চিন্তার কোনও কারণ নেই। তারপরে ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। ফোনেই এল দুসংবাদটা। সিকিমের ফালুট শৃঙ্গে ট্রেক করতে গিয়ে শ্বাসকষ্টে মারা গিয়েছেন বহরমপুরের আইসিআই স্কুলের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক তাপসকুমার দাস (৪২)।
মৃতের স্ত্রী মানসী জানান, জোরথাং থেকে গত শনিবার সকাল ৭টা নাগাদ তাঁকে ফোন করেন তাপস। ফোনে জানান, খানিক পরে পাহাড়ে উঠবেন। তখন ফোনে তাকে নাও পাওয়া যেতে পারে। স্ত্রী যাতে দুশ্চিন্তা না করেন, তাই ফোন করে জানালেন।
কিন্তু পরদিন রবিবার সকাল ৯টা নাগাদ মৃত্যু সংবাদ আসে। তাপসের সহযাত্রীরা মানসীকে ফোন করে জানান, রবিবার ভোরে সূর্য উঠার ঘণ্টা দেড়েক আগেই শ্বাসকষ্টে তাপস মারা গিয়েছেন।
বছর দশেক আগে সস্ত্রীক গ্যাংটকে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। সে বার শ্বাসকষ্টে ভুগেছিলেন। মানসী বলেন, ‘‘সে বার গ্যাংটকের মিলিটারি হাসপাতালের চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছিল। বেশি উঁচুতে নিষেধ করেছিলেন চিকিৎসক। তাই আমাকে ট্রেকিং-এর কথা না জানিয়ে পাহাড়ে বেড়াতে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বের হন।’’
বিভাসকে সহযাত্রীরা ‘ট্রেকিং’ দলে প্রথমে নিতে চাননি। তাঁর সহকর্মী সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, ‘‘তাঁকে বাদ দিয়ে সিকিমের ফালুট পর্বত অভিযানে যাওয়ার জন্য আমরা আট জনের দলের এক সঙ্গে বাসের টিকিট কাটি। তারপর তাপস নিজে একা তাঁর টিকিট কেটে আমাদের সঙ্গে রওনা দেন।’’
গত শনিবার রাত আটটা নাগাদ আছিলাতে তাঁরা পৌঁছান। পরে রাত বাড়লে তাপসের শ্বাসকষ্ট চরম আকার নেয়। পাশের তাঁবু থেকে চিকিৎসক এসেও কিছু সুবিধা করতে পারেননি। অবশেষে পাহাড়ের নীচে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাঁশ ও চট দিয়ে স্ট্রেচার বানিয়ে তাঁকে তোলা হয়।
বিভাস বলেন, ‘‘আছিলা থেকে নীচে যেতে ঘণ্টা চারেক লাগে। টর্চ লাইটের আলোয় পিচ্ছিল, দুর্গম পথ দিয়ে নীচের দিকে নামছি বহু কষ্টে। পড়ে গিয়ে কয়েকজন জখম হয়। তবুও শেষ রক্ষা হল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy