উদ্ধার: বহরমপুরের ফতেপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে নয়ানজুলির ধারে যাত্রী বোঝাই বেসরকারি বাস উল্টে মারা গিয়েছেন এক শিক্ষিকা। পুলিশ জানিয়েছে, সামসাবাদ হাইস্কুলের শিক্ষিকা নবনীতা সাহা রায় (৩১) বহরমপুর শহরের সৈয়দাবাদ এলাকার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সকালে বহরমপুরের ফতেপুরের ওই দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন ২৫ জন। তাঁদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে দশ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ১৫ জন এখনও চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নবনীতা সাগরদিঘির সামসাবাদ হাইস্কুলের সংস্কৃতের শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁর বছর তিনেকের এক সন্তান রয়েছে। বহরমপুর-রঘুনাথগঞ্জ ভায়া সাগরদিঘি রুটের বেসরকারি ওই বাসের এ দিন বেশ কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মী ছিলেন।
বহরমপুরের আইসি সনৎ দাস বলেন, ‘‘চালক-সহ ওই বাসের কর্মীরা পলাতক। বাসটিকে নয়ানজুলি থেকে তুলে থানায় আনা হয়েছে।’’ ঘটনাস্থল লাগোয়া ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বেশ কয়েকটি খানাখন্দ রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ওই খানাখন্দ এড়াতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নয়ানজুলির পাড়ে বাসটি উল্টে যায়। আর হাত তিনেক পরেই ছিল নয়ানজুলি। সেখানে এ দিন পাট ছাড়াচ্ছিলেন জনা আটেক মজুর। তাঁদের এক জন তেনু হালদার বলেন, ‘‘একটুর জন্য আমরা প্রাণে বেঁচে গিয়েছি। বাসটি জলে পড়লে আর দেখতে হত না!’’ তেনু ও অন্য শ্রমিকেরা জানলার কাচ ভেঙে বাসের ভিতর থেকে যাত্রীদের উদ্ধার করে করে হাসপাতাল পাঠানোর ব্যবস্থা করেন করেন। এনএইচএআই ১ প্রকল্প আধিকারিক ডি কে হানসারিয়া বলেন, ‘‘গত জুলাই মাসে ওই রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। তার পরে অগস্ট মাসের বৃষ্টিতে কোথাও কোথাও ছোটখাট খানাখন্দ তৈরি হতে পারে। সেগুলো ফের সংস্কার করা হবে।’’
ওই বাসের যাত্রী সাগরদিঘির হাতিশাল গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নুরুল ইসলাম হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে বলেন, ‘‘ওই গাড়িটি গত মাস খানেকের মধ্যে তিন বার বিকল হয়ে আচমকা রাস্তার মধ্যে থেমে গিয়েছিল। তাই বাসের কোনও গন্ডগোল ছিল কি না কে জানে!’’ ২০০ মিটার পিছনে ছিল আরও একটি যাত্রিবাহী বাস। বহরমপুর থেকে রামপুরহাটগামী সেই বাসের যাত্রী সাগরদিঘির দিয়াড়া হাইস্কুলের শিক্ষক রাজশেখর দত্ত বলেন, ‘‘সাগরদিঘিতে পৌঁছতে এক মিনিট দেরি হলে চালককে ৪০ টাকা জরিমানা দিতে হয়। সেই কারণে খুব দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল বাসটি। হঠাৎ নয়ানজুলির ধারে উল্টে পড়ে বাসটি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy