অধ্যক্ষার পদ থেকে মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরানোর দাবিতে আবার অনির্দিষ্ট কালের জন্য ক্লাস বয়কট করে আন্দোলনে নামলেন কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজের শিক্ষক- শিক্ষিকারা।
শুক্রবার আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, যতদিন না মানবীদেবীকে সরানো হচ্ছে তত দিন তাঁরা কর্মবিরোতি পালন করবেন। ফলে আবারও শিকেয় উঠল কলেজের পঠনপাঠন। বারবার একই ঘটনা ঘটতে থাকায় ক্ষুব্ধ ছাত্রী ও অভিভাবকেরা। তাঁদের অভিযোগ, অধ্যক্ষার সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দীর্ঘ সংঘাতের মাসুল দিতে হচ্ছে তাঁদের। পড়াশোনা হচ্ছে না বললেই চলে। ভবিষ্যৎ নষ্ট হতে বসেছে।
২০১৫ সালে মানবীদেবী এই কলেজে অধ্যক্ষা হিসাবে যোগ দেওয়ার কিছু দিন পর থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে তাঁর বিবাদ শুরু হয়। হাতে গোণা কয়েক জন বাদ দিয়ে অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকাই ছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে। জেলা প্রশাসনের তরফে একাধিক বার মধ্যস্থতা করে হয়। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
শিক্ষক-শিক্ষিকারা অধ্যক্ষার অপসরণের দাবিতে ধর্নায় বসেন। তাঁরা অবশ্য তখন ক্লাস বয়কট করেননি। টিচার্স রুমে না বসে তাঁরা বারান্দায় বসতেন। ক্লাস করতেন মাঠে। একাধিক বার তাঁরা ক্লাস করাও বন্ধ করে দেন। পুলিশের কাছে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ জানানো হয়। মানবীদেবী তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে তাঁকে গালি দেওয়া ও শারীরিক নিগ্রহ করার অভিযোগ দায়ের করেন। পাল্টা এক শিক্ষকও পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু মানবীদেবী পদ ছাড়েননি, ঝামেলাও মেটেনি। ফের কর্মবিরোতি শুরু করেন শিক্ষক শিক্ষিকারা।
এই মধ্যে এক শিক্ষককে সাসপেন্ড করেছেন মানবীদেবী। এই ঘটনার জেরে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি পড়ুয়ারা দীর্ঘ সময় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। শেষপর্যন্ত জেলাশাসকের নির্দেশে সাসপেনশন তুলে নেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের পক্ষে সুদর্শন বর্ধন বলছেন, “ভোটের জন্য চুপ করেছিলাম। কিন্তু ভোয় মিটে গেলেও প্রশাসনের তরফে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি। শিক্ষার পরিবেশে একেবারেই নষ্ট করে দিয়েছেন অধ্যক্ষা। আমরা সেই পরিবেশ ফিরিয়ে আনতেই আবার অন্দোলনের পথে নামতে বাধ্য হয়েছি।”
পড়ুয়ারা বলছেন, “রাজায়-রাজায় যুদ্ধ হয়, আর মাঝখান থেকে ক্ষতি হয় আমাদের।” মানবীদেবীর অবশ্য দাবি, “আমার বিরদ্ধে অনেকেই অনেক কথা বলেন। কিন্তু অপসরণ কি এতটাই সহজ! চিৎকার করলেই কী সেটা হয়ে যায়! সব কিছুর একটা পদ্ধতি আছে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। বিচারে যা রায় হবে তাই মাথা পেতে নেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy