গ্রাফিক: জিয়া হক
এ ভাবেও ঘুরে দাঁড়ানো যায়!
মাথা থেকে বিপুল লোকসানের বোঝা নামিয়ে এ বার লাভের মুখ দেখল মুর্শিদাবাদের ‘দি ভাগীরথী কো অপারেটিভ মিল্ক প্রোডিউসার ইউনিয়ন লিমিটেড’। সংস্থার হিসেব বলছে, গত আর্থিক বছরে ১ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকার লোকসান হয়েছিল। এ বছর এখনও পর্যন্ত লাভ হয়েছে ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা।
সংস্থার প্রশাসক তথা মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলছেন, ‘‘গত দু’তিন বছর ধরে ভাগীরথী লোকসানে চলছিল। দুধ ও দুধের পণ্যের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি বাজার বৃদ্ধি ও কাজে গতি আনা হয়েছে। সেই কারণেই এ বছর লাভের মুখ দেখেছে। চলতি আর্থিক বছরে সব মিলিয়ে চার কোটি টাকা লাভ করা আমাদের লক্ষ্য।’’ জেলাশাসকের দাবি, এই লাভের ফল গোপালকেরাও পাবেন। দুধের দাম বৃদ্ধি থেকে তাঁদের অন্য সুযোগ সুবিধাও বাড়ানো হবে।
১৯৭৪ সালে কয়েকটি দুগ্ধ সমবায়কে নিয়ে ‘দি ভাগীরথী কো অপারেটিভ মিল্ক প্রোডিউসার ইউনিয়ন লিমিটেড’ তৈরি হয়। এক সময় ভাগীরথী লাভজনক সংস্থা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে নানা কারণে লোকসান দেখা দিয়েছিল। ২০১২ সালের পর থেকে ভাগীরথীর নির্বাচিত বোর্ড নেই। পরিবর্তে প্রশাসক নিয়োগ করে চালানো হচ্ছে। ২০১২-১৩ সাল থেকে ভাগীরথীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছিল যে, গত বছর গোপালকেরা পর্যাপ্ত দুধ নেওয়া, দুধের দাম বাড়ানো-সহ একাধিক দাবিতে ভাগীরথীর সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। গত বছর জুলাইয়ে জেলাশাসক ভাগীরথীর প্রশাসকের দায়িত্ব নিয়েছেন।
সংস্থার হিসেব বলছে, ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছিল। ২০১৬-১৭ সালে ১ কোটি ৩৭ লক্ষ ও ২০১৭-১৮ সালে ১ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা লোকসান হয়। এ বারে সেই লোকসান কাটিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা লাভ হয়েছে।
প্রশাসন ও সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য ডেয়ারিতে দুধ পাঠালে লাভ থাকে না বললেই চলে। যত পণ্য উৎপাদন করা হবে, তত লাভ হবে। এ বছর, গত বছরের থেকে প্রায় ৩০ শতাংশ পণ্য উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়াও ভাগীরথীর পণ্য বিক্রির বাজার বাড়ানো হয়েছে। গত বছর দৈনিক গড়ে ৩৮ হাজার লিটার করে দুধ সংগ্রহ করা হয়েছিল। এ বছর সেটা ৭৮ হাজার লিটার করা হয়েছে। গত বছর প্রতিদিন ২৬ হাজার লিটার দুধের প্রক্রিয়াকরণ করে পণ্য বাজারে বিক্রি করা হয়েছিল। এ বছর প্রতিদিন গড়ে ৪২ হাজার লিটার দুধের পণ্য বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
গত বছর পর্যন্ত ভাগীরথীর বাজার ছিল মুর্শিদাবাদ এবং আংশিক ভাবে মালদহ, নদিয়া ও ঝাড়খণ্ডের পাকুড় এলাকা। এ বছর ওই এলাকা ছাড়াও নতুন করে বাজার বাড়ানো হয়েছে দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, দুই দিনাজপুর, বীরভূম, কলকাতা, হাওড়ায়। গত বছর পর্যন্ত দুধ, পনির, দই, লস্যি, ঘি উৎপাদন হত। এ বছর সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘কাউ মিল্ক’, কম ফ্যাটযুক্ত পনির। সংস্থার দাবি, দুগ্ধ চাষিদের থেকে দুধ সংগ্রহ থেকে দুধের বাজার ধরা সব দিক দিয়ে রাজ্যে শীর্ষে রয়েছে মুর্শিদাবাদের ভাগীরথী দুগ্ধ সমবায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy