স্বামীর ছবি হাতে। নিজস্ব চিত্র
পরিবারে স্বাচ্ছন্দ্য ফেরাতে ফুলিয়ার কাপড় নিয়ে বাজার খুঁজতে গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রে। বছর কয়েক ধরে ভিন প্রদেশের গাঁ-মফসসলে ফেরি করে লাভের মুখ দেখেছিলেন আড়ংঘাটা এলাকার অমিত দাস।
কিন্তু নোট বাতিলের পর থেকেই ব্যবসায় মন্দা শুরু হয় তাঁর। কাজ না পেয়ে পের তাই পাড়ি দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রেই। এ বার আর কাপড় ফেরি নয়, কাজ নিয়েছিলেন স্থানীয় এক বাসনের কারখানায়। তবে, ফোন আর আসেনি। বাড়ির লোক ফোন করলে উত্তর পেয়েছেন সে ফোন বন্ধ।
চেনা-জানা, বন্ধুবান্ধব— কোনও সূত্র ধরেই এগোতে না পেরে শেষতক জেলা প্রশাসনের কাছে নিজেদের অসহায়তার কথা জানিয়ে দরবার করেছেন অমিতবাবুর স্ত্রী ও কন্যা। রানাঘাটের মহকুমাশাসক প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, “ওই যুবকের পরিবারের তরফে আমাদের জানানো হয়েছে। আমারা পুলিশকে খোঁজ নিতে বলেছি। ওখানেও নানা ভাবে খোঁজ করা হচ্ছে। তবে তেমন কিছু এখনএ পর্যন্ত মেলেনি।’’
অমিতের পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কুড়ি ধরে মহারাষ্ট্রের নানা জায়গায় কাপড় ফেরি করতেন তিনি। তবে ফোন ছাড়া তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের উপায় নেই। ধানতলার আড়ংঘাটা পঞ্চায়েতের হরনাথপাড়া এলাকায় তাই কপালে ভাঁজ নিয়েই দিন গুজরান তাঁর পরিবারের।
অমিতের মেয়ে আড়ংঘাটা গার্লস স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী পায়েল বলছে, ‘‘আগে যখন বাইরে যেত, প্রতি দিন রাতে ফোন করত বাবা। এ বার যখন গেল প্রথন দিকে রোজই ফোন আসত। কিন্তু তার পর সেই যে বন্ধ হল, গত সাত মাসে এক বারও গলাটাই শুনিনি।’’ পায়েল তবু ভাবে, বাবা ফিরবে, ‘‘এখনও মনে হয়, ঠিক এক দিন দরজায় এসে টোকা দেবে...’’ গলা ধরে আসে তার। তাঁর স্ত্রী চন্দনা বলেন, “কিছুই বুঝতে পারছি না, কী যে হল! তবু, রোজ ফোন করি, আর শুনি, সুইচ় অফ!’’ তিন সন্তান নিয়ে টেনে হিঁচড়ে চলছে তাঁর সংসার।
ঘরের দাওয়ায় বস বসে তাঁর বৃদ্ধা মা উষা দাস বলেন, “রোজ ফোন করত ছেলেটা। সাতটা মাস...ছেলেটা আছে না নেই তাই বুঝতে পারি না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy