Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

জলিল-হত্যায় ধৃত তৃণমূলেরই তিন নেতাকর্মী

শুক্রবার সন্ধ্যায় কালীগঞ্জ ব্লকের চাকুন্দি মোড় থেকে শ’খানেক মিটার দূরে খুন হন রাজারামপুর ঘড়াইক্ষেত্র পঞ্চায়েতের সদস্য আকিবা বিবির স্বামী, তৃণমূল কর্মী জলিল শেখ। শনিবার রাতে পুলিশ তিন জনকে ধরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালীগঞ্জ শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:২০
Share: Save:

তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী খুনে গ্রেফতার হলেন দলেরই প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী ও দেওর। ধরা হয়েছে তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত এক জনকেও। যদিও তৃণমূল নেতারা দলীয় কোন্দলের কথা মানতে নারাজ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় কালীগঞ্জ ব্লকের চাকুন্দি মোড় থেকে শ’খানেক মিটার দূরে খুন হন রাজারামপুর ঘড়াইক্ষেত্র পঞ্চায়েতের সদস্য আকিবা বিবির স্বামী, তৃণমূল কর্মী জলিল শেখ। শনিবার রাতে পুলিশ তিন জনকে ধরে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের অন্যতম ইব্রাহিম মল্লিক প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান চায়না বিবির স্বামী। আর এক ধৃত, ইব্রাহিমের ভাই সিপাই মল্লিক বর্তমানে পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। তৃতীয় জন, দলুইপুর গ্রামের বাসিন্দা আল্লা রাখা সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। রবিবার তিন জনকে কৃষ্ণনগর আদালতে হাজির করানো হলে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কেন এই খুন তা অবশ্য রবিবার রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, খুনের নেপথ্যে রয়েছে ঠিকাদারি ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। জলিল শেখ এক সময়ে এলাকায় সিপিএমের যুব সংগঠনের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। বামেরা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে তিনি তৃণমূলের দিকে ঝোঁকেন। তখন থেকেই তিনি এলাকায় ঠিকাদারিতে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এ বার পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের হয়ে টিকিট না পেয়ে জলিল সিপিএমে ফেরেন। তাঁর স্ত্রী আকিবা বিবি সিপিএমের টিকিটেই ভোটে দাঁড়ান এবং তৃণমূলের দাপুটে প্রার্থী লুতফর রহমান শেখকে ভাল ব্যবধানে পরাজিত করেন। এর পরে তৃণমূল তাঁদের ফিরিয়ে নেয়।

তৃণমূলেরই একটি অংশের দাবি, ওই এলাকায় আদি ও নব্য তৃণমূল কর্মীদের বিবাদে পুরনো নেতা-কর্মীরা ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছেন। ক্ষমতার লোভে বারবার দলবদল করলেও জলিল তৃণমূলে ক্রমশ প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন। তাঁকে খুনের পিছনে সেই আক্রোশ কাজ করে থাকতে পারে। ঠিকাদারির বরাত পাওয়া নিয়ে রেষারেষি এর পিছনে আছে কি না, তা-ও পুলিশ খতিয়ে দেখছে।

তৃণমূল নেতারা অবশ্য এখনও দায় ঝাড়তে ব্যস্ত। শনিবার কালীগঞ্জ ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি জিয়ারুল রহমান দাবি করেছিলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’ এ দিন কালীগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক হাসানুজ্জামান শেখ আবার বলেন, ‘‘ওই তিন জনই যে জলিলকে খুন করেছে, তা প্রমাণিত হয়নি। আর পুরনো লোকদের নিয়েই আমি এত দিন কাজ করছি। কোনও সমস্যা হয়নি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা ভিত্তিহীন।’’ আকিবা বিবির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর পরিবারের তরফে জানানো হয়, তিনি এ নিয়ে কোনও কথা বলবেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cricme Arrest Murder TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE