ফাইল চিত্র।
এত দিন, টিএমসিপি-র দাদাগিরির আঁচ ছড়িয়েছিল শিক্ষাঙ্গনে। অধ্যক্ষকে মারধর, শিক্ষককের মাথায় পিস্তল ঠেকানো— অভিযোগের বিরাম ছিল না। এ বার, শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা ‘শাস্তি’ দিয়ে বসল সরকারি চিকিৎসককেও!
আহত এক কিশোরকে নিয়ে কৃষ্ণপুর ব্লক হাসপাতালে আসার পরে চিকিৎসকের গয়ংগচ্ছ মনোভাবকে দায়ি করে বেধড়ক মারধর করা হল ব্লক মেডিক্যাল অফিসারকে। আহত বিএমওএইচ সৌম্য সাহাকে গুরুতর জখম অবস্থায় ভর্তি করানো হয়েছে মুর্শিদাবাদের লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে।তবে মুর্শিদাবাদ জেলা টিএমসিপি-র সভাপতি ভীষ্মদেব কর্মকার ওই ঘটনায় ছাত্র সংগঠনের জড়িত থাকার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। নির্বিকার গলায় বলছেন, ‘‘আমাদের সংগঠনের কেউ মারধর করেনি। অকর্মন্য ওই বিএমওএইচের উপরে রাগ ছিল গ্রামবাসীদের, তাঁরাই মারধর করে থাকতে পারেন।’’
তবে, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুধু দুঃখজনক নয় খুবই আতঙ্কের। জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি।’’
বুধবার, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলছিল লালগোলার মাঠে। সেই সময়ে শট-পাটের ছোড়া লোহার বল গিয়ে পড়ে মাঠের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা এক কিশোরের মুখে। টিএমসিপি-র জনা কুড়ি ছাত্র ওই আহত কিশোরকে নিয়ে ছোটেন কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। খবর পেয়ে চিকিৎসক সেলিনা রহমান তার চিকিৎসাও শুরু করেছিলেন। অভিযোগ, তাতে সন্তুষ্ট ছিল না ওই ছেলেরা। মহিলা চিকিৎসকের উপরে তারা চড়াও হলে অবস্থা সামাল দিতে ছুটে আসেন বিএমওএইচ সৌম্য সাহা। সৌম্যবাবু বলছেন, ‘‘ওদের বোঝাতে গিয়েছিলাম, জুটল এলোপাথাড়ি চড়-কিল-ঘুষি।’’ গাল ফেটে রক্ত ঝড়তে থাকে তাঁর। চশমা ভেঙে যায়।
মুর্শিদাবাদে চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা অবশ্য নতুন নয়, আজিমগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে রোগী ভর্তির পরে রিভলভার নল ঠেকানো হয়েছিল চিকিৎসকের মাথায়। পরের দিনই বদলি নিয়ে চলে গিয়েছিলেন সেই চিকিৎসক। শাসানির মুখে পড়ে জিয়াগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালের এক চিকিৎসক চাকরি থেকে ইস্তফা দিন সম্প্রতি। সেই তালিকায় শেষ সংযোজন কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy