কৃষ্ণনগরে বিজয়া সম্মিলনীতে উপস্থিত পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীকে মুর্শিদাবাদে দলের পর্যবেক্ষক করার পরে গত কয়েক বছরে সেখানে একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপিএম-বিজেপি সদস্যেরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সেই ছবিই রবিবার দেখা গেল কৃষ্ণনগরে।
এ দিন কৃষ্ণনগর রবীন্দ্রভবনে আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনীতে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে কালীগঞ্জের মাটিয়ারি পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রাবণী বর্মন, উপ প্রধান সিদ্দিকা বিবি-সহ পাঁচ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁদের সঙ্গে দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন এক বিজেপি সদস্যও। ফলে পঞ্চায়েতটি এখন তৃণমূলের দখলে। ঘটনাচক্রে সম্প্রতি শুভেন্দুকে কৃষ্ণনগর লোকসভার দায়িত্ব দিয়েছেন নেত্রী।
এ দিন দল বদলের পরে শ্রাবণী বলেন, ‘‘আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে শামিল হতে চাই।” কিন্তু পঞ্চায়েত প্রধানের চেয়ারে বসার পর পরেই কেন মোহভঙ্গ হল? কেন সিপিএমের টিকিটে জিতে আসতে হল? যদিও সেই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অনেকের মতে, ওই পঞ্চায়েত দখল তৃণমূল মহাসচিবকে দেওয়া জেলা নেতৃত্বের শারদ উপহার। তবে নবাগতদের ঘিরে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব যাতে দেখা না দেয়, তা মনে করিয়ে বার্তা দিলেন পার্থ। তিনি বলেন, “এতে খুব একটা কৃতিত্বের কিছু নেই। আমরা সাংগঠনিক ভাবে হেরেছি। যাঁরা আসছেন তাঁরা সংগঠনকে নিশ্চয় শক্তিশালী করবেন। কিন্তু যাঁরা হেরেছেন, তাঁদেরকেও সঙ্গে রাখতে হবে।” সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “পঞ্চায়েতে যাঁরা জিতেছেন, তাঁরা টুকটাক নিজেদের জন্য করুন। কিন্তু মানুষের জন্যও কিছু করুন।”
পরে এই বিষয়ে পার্থকে প্রশ্ন করা হয়, এই ‘টুকটাক নিজের জন্য কিছু করুন’ বলতে কী বোঝাতে চাইছেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘টুকটাক ভুল করার কথা বলেছি।’’ তবে এ দিন তিনি বার বারই নেতা-কর্মীদের আত্মসমীক্ষার পাশাপাশি মানুষের পাশে থাকার কথা বলেন। সেই সঙ্গে তিনি জিএসটি থেকে শুরু করে নোটবন্দি, বিভাজনের রাজনীতির প্রসঙ্গ তুলে বিজেপি’র তীব্র সমালোচনা করেন। নাম না করে আক্রমণ করেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে, দলের ভিতরে থেকে আর দলকে দুর্বল করতে দেওয়া হবে না।
এ দিন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল খয়রাশোলে গন্ডগোলের জন্য তাঁরই দলের কার্যকরী ব্লক সভাপতিকে গ্রেফতার করার কথা বলেছেন। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে পার্থ বলেন, ‘‘এটা যখন বলেছেন, তখন নিশ্চয় রাজ্য নেতৃত্বের অনুমোদন নিয়েই বলেছেন। তা ছাড়া যদি মনে হয় যে দলের কেউ ভুল করছে, তা হলে সেই ভুলটা শোধরানোর জন্য দলের সভাপতি তো বলতেই পারেন। তবে ভাল করে না জেনে এখনই কোনও মন্তব্য করব না।’’
এ দিন রবীন্দ্রভবনে বিজয়া সম্মিলনীতে পার্থের সঙ্গে উপস্থিত থাকার কথা ছিল শুভেন্দুর। কৃষ্ণনগর লোকসভার দায়িত্ব পাওয়ার পরে এটাই ছিল তাঁর কৃষ্ণনগরের প্রথম কর্মসূচি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি আসতে পারেননি। ফলে অনেকেই হতাশ হয়েছেন। জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর মেদিনীপুর থেকে আসার কথা ছিল। তিনি আসতে পারেননি। পরের কর্মসূচিতে আসবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy