Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
TMC

তহির বিদায়ে তালা, স্বস্তিতে তৃণমূল

রাতারাতি তালা পড়ে গিয়েছে তার নিজস্ব কার্যালয়ে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে ধনিরামপুর বাগান বাড়িতে রমরমিয়ে চলা তার বিলিতি মদের দোকানে।

তহিরুদ্দিন মণ্ডল।

তহিরুদ্দিন মণ্ডল।

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
সাগরপাড়া  শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২০ ০০:১৮
Share: Save:

না থেকেও তার প্রতিপত্তির ইশারা এত দিন পেয়ে আসছিল ধনিরামপুর-সাহেবপুর আর তাকে ঘিরে থাকা সীমান্তের বিস্তৃর্ণ অঞ্চল। ছবিটা আচমকা যেন বদলে গিয়েছে বৃহস্পতিবার। জেলা তৃণমূলের বৈঠকে তাকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা হতেই জলঙ্গির ব্লক তৃণমূল সভাপতি তহিরুদ্দিন মণ্ডলের সেই অদৃশ্য ছায়াটা যেন এই দু’দিনেই উধাও হয়ে গিয়েছে।

রাতারাতি তালা পড়ে গিয়েছে তার নিজস্ব কার্যালয়ে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে ধনিরামপুর বাগান বাড়িতে রমরমিয়ে চলা তার বিলিতি মদের দোকানে। এমনকি যারা তহিরের ঘনিষ্ঠ বলে এত দিন বুক বাজিয়ে এলাকায় প্রচ্ছন্ন দাপট দেখিয়ে বেড়াত, উধাও হয়ে গিয়েছে তারাও। যা দেখে সীমান্তের এক সময়ের মসিহা তহিরের পুনরায় প্রত্যাবর্তণের সম্ভাবনা এবং প্রস্থান— মাচার আড্ডা থেকে চায়ের দোকানে তর্কের তুফান উঠেছে। জলঙ্গির ধনিরামপুর এলাকায় তহিরের পৈত্রিক ভিটে-সহ তিনটে বাড়ি। এ ছাড়াও জেলা সদর বহরমপুরেও রয়েছে তার পেল্লাই বাড়ি। কখন কোন বাড়িতে সে থাকে তার হদিশ পাওয়া ছিল দুষ্কর। তবে, নিজের ছায়া য়াতে তার জমজ সন্তানের উপরে না পড়ে, সে জন্য শিক্ষিকা স্ত্রী ও সন্তানদের তহির বহরমপুরের বাড়িতেই রাখত। নিজে এলাকা সামাল দেওয়ার জন্য ধনীরামপুরই ছিল তার পছন্দের ঘাঁটি। ধনিরামপুর বাজারে বাড়ির উল্টো দিকেই ছিল তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়। এক সময় সেই কার্যালয় দিনরাত গমগম করত। কিছুটা দূরেই ঢাউস লোহার গেট লাগানো বাগানবাড়ি। সেই বাগান বাড়িতে মাঝেমাঝেই বসত আসর বলে দাবি বিরোধীদের। স্থানীয় মানুষ থেকে তৃণমূলের একাংশের নেতাদের দাবি, সে আসরে কে আসেনি! পরিবারকে সঙ্গ দিতে মাঝে মাঝে বহরমপুরে থাকলেও সীমান্তের গঞ্জ ধনিরামপুরেই তার প্রতাপ ছিল বেশি। তহিরের এক বাল্যবন্ধুর দাবি, ‘‘অর্থ এবং পেশী বলে বলিয়ান হতেই বাবা মা ও অন্যান্য ভাইদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তহিরের।’’ একাধিক বাড়ি ও গাড়ির মালিক, অন্য দিকে রাজনৈতিক ক্ষমতায় বলিয়ান তহির ২৯ জানুয়ারি সাহেবনগরে খুনের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ার পর দলে তার বিরোধীরা তহির-বিরোধিতা করলেও তা ছিল নিশ্চুপে। কিন্তু বহিষ্কারের পরে সেই নেতা-কর্মীরাই এখন প্রকাশ্যে বলছেন, ‘‘যাক আপদ বিদায় হয়েছে!’’

শুক্রবার সকালে জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য প্রদীপ মণ্ডল-সহ একাধিক স্থানীয় নেতা-কর্মীকে দেখা গিয়েছে প্রকাশ্যেই বলে বেড়াতে শুরু করেছেন, ‘‘দলের মুখে কালি মাখিয়ে এত দিন রাজত্ব করে গিয়েছে তহির, এ বার শান্তি।’’ প্রদীপের দাবি, ‘‘তহিরুদ্দিন মন্ডলের দাপটে এলাকার আদি তৃণমূল যারা ছিল তারা দল থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। এ দিন তাঁরাই আমার সঙ্গে এলাকায় বেরিয়ে জানিয়ে দিলেন নতুন করে সংগঠন সাজিয়ে তুলতে আগ্রহী তাঁরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Tahiruddin Mondal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE