ফাইল চিত্র।
জবরদস্তি সঙ্গীদের দিয়ে একটি পেট্রল পাম্প দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠল শাসকদলের এক নেতা বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে সরাসরি কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পেট্রল পাম্পের মালিক। মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের কর্তাদের নির্দেশে তিনি বৃহস্পতিবার রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভিএসআর অনন্তনাগের সঙ্গে দেখা করেও অভিযোগ জানিয়েছেন।
হরিণঘাটা থানার নগরউখড়া বাজার সংলগ্ন ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের ওই পাম্পের মালিক অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণা ভৌমিক। তাঁর অভিযোগ, নদিয়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ চঞ্চল দেবনাথের নির্দেশে তাঁর দলবল দিন পাঁচেক হল পাম্প বন্ধ করে দিয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।
চঞ্চলবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি কারও পাম্প দখল করেননি। ওই পাম্পের মালিকের সঙ্গে কিছু লোকের টাকাপয়সা নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। যিনি টাকা পান তিনিই হয়তো পাম্প বন্ধ করে দিয়েছেন। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘পাম্পের মালিকেরা মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে গিয়েছিলেন। আমার কাছেও এসেছেন। তাঁদের রানাঘাট থানায় অভিযোগ জানাতে বলেছি। তার পর আমরা অবশ্যই তদন্ত করব।’’ চঞ্চলবাবুর দাবি, ‘‘ওই পাম্পের মালিক ও যাঁদের সঙ্গে ওঁর গোলমাল চলছে সেই ব্যবসায়ীরা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি জনপ্রতিনিধি, তাই মানুষ আসতেই পারে। আমি পাম্প দখলের চেষ্টা করিনি। যাঁরা টাকা পান তাঁরাই পাম্প বন্ধ করেছেন হতে পারে।’’
কৃষ্ণাদেবী জানাচ্ছেন, প্রায় চার দশক ধরে তাঁদের ওই পেট্রল পাম্পের ব্যবসা রয়েছে। বছর কয়েক আগে একমাত্র ছেলের আকস্মিক মৃত্যুতে তাঁরা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। তিনি ও তাঁর স্বামী ব্যবসায় মন দিতে পারেননি। ফলে পাম্পটি কর্মচারী-নির্ভর হয়ে পড়ে। কিছু দিন পরেই কয়েক জন কর্মচারী জানাতে থাকেন যে, পাম্প লোকসানে চলছে। প্রচুর লোক ধারে তেল নিচ্ছেন। টাকা মেটাচ্ছেন না। তখন পাম্প বাঁচাতে তাঁরা চঞ্চল দেবনাথের কয়েক জন ঘনিষ্ঠের থেকে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা ধার নেন। এর মধ্যে দীপক আচার্য নামে এক জনের থেকে তিন বছরে মোট ৩০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন।
কৃষ্ণাদেবীর দাবি, ‘‘প্রত্যেকের টাকা একে একে শোধ করে দেওয়া হয় তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু দীপকবাবু হাতে-হাতে টাকা চেয়েছিলেন। তাই দিয়েছিলাম। উনি প্রচুর তেলও বিনা পয়সায় নিয়েছেন। তার পর তিনি আবার ৩০ লক্ষ টাকা চান এবং টাকা দিতে না-পারলে পাম্প তাঁর নামে করে দিতে বলেন।’’
কৃষ্ণাদেবীর আরও দাবি, ‘‘কিছুদিন আগে চঞ্চল নিজের বাড়িতে আমার স্বামীকে নিয়ে সালিশিতে বসেন। চঞ্চল দাবি করেন, দীপকের থেকে নেওয়া ৩০ লাখের সুদ তিন বছরে ৩০ লাখই হয়েছে! সেটা দিতে হবে! আমরা জানাই, সর্বাধিক ১০ লক্ষ টাকা সুদ দিতে পারি।। এর পর চঞ্চল পাম্পটি দীপককে দিয়ে দিতে বলেন। কয়েক বছর ধরেই চঞ্চল ও তাঁর লোকজন পাম্পের দখল পেতে মরিয়া।’’ দীপক আচার্যের পাল্টা দাবি, ‘‘আমার ৩০ লাখ টাকা মধ্যে কানাকড়িও কৃষ্ণাদেবীরা ফেরত দেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy