Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

অপহরণ, পরে ফেরত নেতার ভাই

গত শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ঘটনার সূত্রপাত। কল্যাণী শহরের কোলঘেঁষা চাঁদামারি চত্বরে আচমকা বিদ্যুৎ চলে যায়। তখনই হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। তাই অনেকেই এর মধ্যে ষড়যন্ত্র দেখছেন। 

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কল্যাণী শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৯ ০১:২৮
Share: Save:

শাসকদলের ব্লক সভাপতির ভাইকে রাস্তা থেকে অহরণ করে নিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, বেধড়ক মেরে প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে তাঁকে আবার বাড়ির কাছে ফেলেও যাওয়া হয়। আহতকে ভর্তি করা হয়েছে কল্যাণী জেএনএম-এ। এই ঘটনার অভিযোগের আঙুল উঠেছে বিজেপি-র বিরুদ্ধে, যদিও বিজেপির তরফে তা অস্বীকার করা হয়েছে।

যাঁকে নিয়ে এত কিছু তিনি দক্ষিণ চাঁদামারিতে ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তপন মণ্ডলের ভাই রতন মণ্ডল। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ঘটনার সূত্রপাত। কল্যাণী শহরের কোলঘেঁষা চাঁদামারি চত্বরে আচমকা বিদ্যুৎ চলে যায়। তখনই হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। তাই অনেকেই এর মধ্যে ষড়যন্ত্র দেখছেন।

স্থানীয় মানুষের দাবি, দুষ্কৃতীরা দা-শাবল নিয়ে ছোটাছুটি করছিল। তার পর তারা হাজির হয় তপন মণ্ডলের বাড়িতে। সেই সময় তপন গেট বন্ধ করে ঘরের ভিতরে ছিলেন। তাঁর ভাই রতন ছিলেন বাড়ির উল্টোদিকে মুড়ি তৈরির কারখানায়। সেখান থেকে বাড়ির দিকে হাঁটা দেওয়ার সময় রাস্তা থেকে দুষ্কৃতীরা রতনকে অপহরণ করে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে তপন বাড়ির পোশাকেই উদ্বিগ্ন হয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। পাড়ার লোক জনও জড়ো হয়ে যান।

তপনের বাড়িতে চলে আসেন কল্যাণী পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মিতালি বিশ্বাস। পুলিশও আসে। দু’ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানান তপন। তাঁরা আগে তৃণমূল করতেন, কিন্তু পরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলে খবর। সন্দেহভাজনদের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন পরীক্ষা করে দুষ্কৃতীদের হদিস পাওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছিল। এরই মধ্যে রতনের নম্বর থেকে তপনের মোবাইলে ফোন আসে। সেখানে রতন বলেন, ‘‘আমাকে একটা মাঠে ফেলে‌ ওরা চলে গিয়েছে।’’ এর পরই ফোনটা কেটে যায়।

এরই মধ্যে বারো হাত শ্মশানের আশপাশ থেকে খবর আসে, রতন সেখানে পড়ে রয়েছেন। পুলিশ ও বাড়ির লোক গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই রাতেই তপনের বাড়ির উঠোনে থাকা গাড়ি ভাঙচুর করে অজ্ঞাতপরিচয় হামলাকারীরা। রতন জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীদের মুখ কাপড়ে ঢাকা ছিল বলে তিনি তাদের চিনতে পারেননি। তারা তাঁকে এলোপাথাড়ি কিল, চড়, ঘুসি মারতে থাকে। তার পর জঙ্গলের দিকে গাড়ি নিয়ে যেতে থাকে এবং পথে শ্মশানের কাছে ফেলে পালায়।

বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মানবেন্দ্র রায় বলছেন, ‘‘অভিযুক্তরা কেউ আমাদের দলের নয়। ওদের কাছে বিজেপির প্রাথমিক সদস্যপদও নেই। আসলে রতনের দাদাগিরিতে সকলে অতিষ্ঠ। ওঁরাও হয়তো তাঁর শিকার হয়েছিলেন। তাই প্রতিশোধ নিতে এমন করেছে।’’

তপন পাল্টা বলেছেন, ‘‘আমার ভাই খারাপ হলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে পারত। এ ভাবে ওকে খুনের চেষ্টা করাটা নোংরা রাজনীতির নিদর্শন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Kidnapping TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE