প্রতীকী ছবি।
লালনগরে নিজের গ্রাম থেকে বেরিয়ে হরিহরপাড়ার দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। ভরদুপুরে রাস্তায় গাড়ি আটকে তাঁকে টেনে নামিয়ে গুলিতে ঝাঁঝরা করল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার দুপুরে হুমাইপুর পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের আরদোসা বিবির স্বামী সফিউল শেখ (৪৩) খুনের পরে দলের তরফে আঙুল তোলা হয়েছে কংগ্রেসের দিকে। পুলিশের অনুমান, রাজনীতি ছাড়াও এর পিছনে অন্য কারণও থাকতে পারে।
হরিহরপাড়া এলাকায় এক সময়ে সিপিএমের দাপুটে নেতা ছিলেন সফিউল। বছর তিনেক আগে তৃণমূলে পা বাড়ানোর পরেও তাঁর প্রতাপ কমেনি। হুমাইপুর এলাকায় তৃণমূলের অঞ্চল পর্যবেক্ষক, হরিহরপাড়া ব্লক তৃণমূলের সাধারন সম্পাদক, স্থানীয় লালনগর হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি— একাধিক পদ সামাল দিতেন তিনি। স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এলাকায় তাঁর দাপটে বিরোধীদের মাথা তোলার জো ছিল না। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘গত পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনে সফিউল এবং তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদের দাপটে ভোটই দিতে পারেননি এলাকার বাসিন্দারা।’’
তৃণমূলের দাবি, সেই সময় থেকেই তাঁর উপরে হামলার আশঙ্কা করছিলেন তাঁরা। দলের তরফে জানানো হয়েছে, সফিউলের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের কাছে রক্ষীও চাওয়া হয়েছিল। তার মাঝেই এই হামলা।
তা হলে কি রাজনীতির রেষারেষিতেই এই খুন? জেলা পুলিশ সুপার, মুকেশ কুমার বলছেন, ‘‘কারণটা স্পষ্ট নয়। তবে আমরা সব দিকই খতিয়ে দেখছি।’’ জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস অবশ্য সফিউল খুনের পিছনে কংগ্রেসের হাত দেখছেন। তিনি বলেন, ‘‘অধীর চৌধুরী পুনর্নিবাচিত হওয়ার পরে জেলায় ফের খুনের রাজনীতি ফেরাতে চাইছেন। কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরাই খুন করেছে সফিউলকে।’’ যা শুনে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি জয়ন্ত দাস বলছেন, ‘‘তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ আকচাআকচির জেরেই এই খুন। এখন কংগ্রেসের ঘাড়ে বন্দুক রাখতে চাইছে তৃণমূল।’’
গ্রামের মানুষের কথায়, ‘‘দুপুরে তাঁর বোলেরো গাড়ি প্রদীপডাঙার কাছাকাছি আসতেই একটি মারুতি ভ্যান পথ আটকায়। গাড়িতে অন্তত সাত জন ছিল। তারা টেনে হিঁচড়ে সফিউলকে নামিয়ে পেটে-বুকে-মাথায় গুলি করে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি।’’ গ্রামবাসীরা জানান, গাড়ি ঘুরিয়ে ভ্যানটি তাজপুরের দিকে চলে যায়। তবে ঘটনার পর থেকেই সফিউলের গাড়ির চালকও নিখোঁজ। পুলিশ তারও খোঁজ করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy