Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

তেহট্ট আইটিআই কলেজে রাতের ‌‌অন্ধকারে টোটোয় চার্জ

রবিবার রাতে ওই আইটিআই কলেজে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের ওয়ার্কশপের বড় বড়  হলঘরে টোটোর সারি দাঁড়িয়ে। প্রত্যেকটি গাড়ির ব্যাটারির সঙ্গে চার্জার লাগানো। চালকেরাই জানাচ্ছেন, গাড়ি ঠিকঠাক ভাবে চার্জে বসিয়ে প্রহরীর হাতে ১০  টাকা দিয়েই তাঁরা নিশ্চিন্ত। রোজ রাতে টোটো নিয়ে ঢুকছেন, আর সাইকেল চালিয়ে বেরিয়ে আসছেন ওয়ার্কশপ থেকে। পরের দিন সকালে সাইকেল রেখে বেরিয়ে আসছেন টোটো নিয়ে।

চার্জ দেওয়া চলছে। নিজস্ব চিত্র

চার্জ দেওয়া চলছে। নিজস্ব চিত্র

কল্লোল প্রামাণিক
তেহট্ট শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৮ ০২:০১
Share: Save:

টোটোর ব্যাটারিতে চার্জ দিতে মোটা টাকার বিদ্যুতের বিল আসে। তবে এক ধাক্কায় সেই খরচ কয়েক গুণ কমিয়ে ফেলেছেন তেহট্টের টোটো চালকদের একাংশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তেহট্টের আইটিআই কলেজের প্রহরীর হাতে রোজ ১০ টাকা করে ধরিয়ে দিচ্ছেন ওই চালকেরা। তারপর রাতের অন্ধাকারে টোটো নিয়ে সোজা ঢুকে যাচ্ছেন কলেজের ওয়ার্কশপে। সেখানেই রাতভর টোটোর ব্যাটারিতে চার্জ দেওয়া হচ্ছে।

রবিবার রাতে ওই আইটিআই কলেজে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের ওয়ার্কশপের বড় বড় হলঘরে টোটোর সারি দাঁড়িয়ে। প্রত্যেকটি গাড়ির ব্যাটারির সঙ্গে চার্জার লাগানো। চালকেরাই জানাচ্ছেন, গাড়ি ঠিকঠাক ভাবে চার্জে বসিয়ে প্রহরীর হাতে ১০ টাকা দিয়েই তাঁরা নিশ্চিন্ত। রোজ রাতে টোটো নিয়ে ঢুকছেন, আর সাইকেল চালিয়ে বেরিয়ে আসছেন ওয়ার্কশপ থেকে। পরের দিন সকালে সাইকেল রেখে বেরিয়ে আসছেন টোটো নিয়ে।

পরিতোষ দাস নামে এক টোটো চালক বলেন, ‘‘অন্য গাড়ির চালকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে গত প্রায় কুড়ি দিন এখানে টোটোর ব্যাটারিতে চার্জ দিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। প্রায় ৭০টি গাড়ি এখানে আসে।’’ পাশাপাশি তিনি জানান, আগে প্রায় হাজার দেড়েক টাকা বিদ্যুতের বিল এলেও এখন খরচ অনেক কমেছে। পরিতোষের মতো টোটো চালকেরা খরচের বোঝা কমিয়ে খুশি হলেও সেই বোঝা গিয়ে চাপছে সরকারের ঘাড়ে। প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি কলেজে এ ভাবে টোটোর ব্যাটারিতে কেন চার্জ দেওয়া হবে?

এ দিন সংবাদমাধ্যম টোটোয় চার্জ দেওয়ার ছবি তুলতে গেলে বাধা দেন কলেজে কর্মরত কর্মীরা। টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করলেও আইটিআই কলেজে কর্মরত ক্লার্ক তিলক দেবাংশীর দাবি, কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই এ কাজ হচ্ছে। তিনি বলেন, “যে সামান্য টাকা নেওয়া হচ্ছে, তাতে কলেজের ঝাড়ুদারের খরচ ও অন্যান্য কাজের খরচ ওঠে।” প্রহরী সমীর সাহার বলেন, “আমাকে টাকা নিতে বলা হয়েছে। আমি সব টাকা আমার ঊর্ধ্বতনের হাতে পৌঁছে দিই।’’ তবে এ জন্য রসিদ যে দেওয়া হয় না তা স্বীকার করে নেন তিনি। জানান, তাঁরা শুধু খাতায় হিসাব নথিভুক্ত করে রাখেন।

কলেজের প্রিন্সিপ্যাল কুন্দন কুমার বলেন, “কলেজের ছাত্রছাত্রীদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসে নানা ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রী সারাই করা শেখানো হয়। এ জন্য মাঝেমধ্যে নিয়ে আসা হয় টোটোও। সে সময় কখনও চালকদের অনুরোধে টোটোর ব্যাটারিতে চার্জ দেওয়া হয়।’’ তাই বলে রাতের অন্ধকারে এক সঙ্গে ৭০টি গাড়িতে চার্জ? স্পষ্ট উত্তর না দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘৭০টি নয়, ১০-১৫টি গাড়ি সারাই করতে এসে চার্জ দেয়।

তবে এ ভাবে সরকারি কলেজে টোটোর ব্যাটারিতে চার্জ দেওয়া যায় না বলেই জানিয়েছেন তেহট্টের মহকুমা শাসক সুধীর কোন্তম। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার কথা জানা নেই। ওই কলেজে কী হয়েছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Charging Toto Government College ITI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE