নো-এন্ট্রির তোয়াক্কা নেই। — নিজস্ব চিত্র।
ব্যস্ত সময়ে শহরে মালবাহী গাড়ি ঢুকবে না। সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বেলডাঙা পুর কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে উপস্থিত থেকে জেলা পুলিশের আধিকারিকেরা সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। ওইটুকুই, বিকেল গড়ালেই ‘নো-এট্রি’ ভেঙে শহরের একাধিক রাস্তায় মালবাহী লরি ঢুকছে হু হু করে। নাকাল হচ্ছেন পথচারীরা। বাসিন্দাদের দাবি, বিকেলের পরে রাস্তায় পুলিশের দেখা মেলে না।
কংগ্রেস শাসিত বেলডাঙা পুরসভার প্রধান ভরত ঝাওর নিজেও পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধী দল পুরসভা দখল করেছে বলেই বোধহয় পুলিশ আমাদের কথায় গা করছে না।’’ একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘পুলিশ শাসক দলের মদতপুষ্ট বলেই কি, এমনটা করছে।’’ এমন অভিযোগ না মানলেও ওসি অরূপ রায় যানজট প্রশ্নে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।
ঘিঞ্জি শহর বেলডাঙার রাস্তাঘাট এমনিতেই সঙ্কীর্ণ। সরু রাস্তার দু’ধারে দোকানপাট, স্কুল, সরকারি-বেসরকারি অফিসের সারি। সকালের ব্যস্ত সময়ে সরু রাস্তায় লরি ঢুকলে যানজট তৈরি হয়। যান নিয়ন্ত্রণে মাস সাতেক আগে পুরসভা সিদ্ধান্ত নেয়, জলকল্যাণ মোড়, মাঝপাড়া মোড়, হরিমূর্তি সংলগ্ন মোড়, হাসপাতাল রোড—প্রভৃতি রাস্তায় সকাল-সন্ধ্যায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে। বলা হয়, সকাল ন’টা থেকে বেলা সাড়ে এগারোটা ওই চারটি রাস্তায় মালবাহী গাড়ি ঢুকবে না। একই ভাবে বিকেল সাড়ে তিনটে থেকে রাত আটটা অবধি যান নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত হয়। কয়েক মাস নিয়ম কার্যকরী হলেও, পরে শিথিল হয়ে পড়ে। দিন পাঁচেক আগে সকালের দিকে বেলডাঙার পুরপ্রধান জানতে পারেন, বিধি ভেঙে শহরের গণেশতলা এলাকায় মালবাহী গাড়ি ঢুকেছে। পুরপ্রধান নিজে এলাকায় গিয়ে গাড়ি দুটি সরিয়ে দেন। পরে পুলিশ গিয়ে যান নিয়ন্ত্রণ করে। শহরের মানুষের দাবি, বেশ কয়েকদিন থেকেই পুলিশ যান নিয়ন্ত্রণে ঢিলেমি করছিল। ফলে ‘নো-এন্ট্রি’র তোয়াক্কা না করে দিব্যি শহরের অলিতে-গলিতে ঢুকে পড়ছিল মালভর্তি গাড়ি। ওই ঘটনার পর পুরসভা গত বৃহস্পতিবার যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পুনরায় সর্বদলীয় সভা ডাকে। সেই সভায় হাজির ছিলেন বেলডাঙা থানার এসআই মিলন মল্লিকও। সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ‘‘সকালের যান নিয়ন্ত্রণের সময়সূচী অপরিবর্তিত থাকবে। কিন্তু বিকেলের দিকে সময়সূচী এক ঘণ্টা এগিয়ে আনা হবে।’’
বাস্তবে বিকেলের পর শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ‘নো-এট্রি’র তোয়াক্কা না করে ঢুকছে লরি। মাস সাতেকের মধ্যে দু’বার নির্দেশিকা জারি করা হলেও, কেন যানজট আয়ত্তে আনা যাচ্ছে না? ভরত ঝাওর বলছেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলি একমত হয়েছে। কিন্তু পুলিশের তরফে খামতি থাকছে।’’ বেলডাঙা-১ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘‘সব্জি ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে আমরা বিকেলের দিকে নো-এন্ট্রির সময় এক ঘণ্টা এগিয়ে আনার আবেদন জানিয়েছিলাম। তারপরও কেন পুলিশ যান নিয়ন্ত্রণ করছে না, তা বলতে পারব না।’’ সে উত্তর জানা নেই পুরবাসীও। কবে পুলিশের চৈতন্য হয়, দেখার সেটাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy