Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নদী ছাপিয়ে জলভাসি গ্রাম

তবে রবিবার দুপুরের পর থেকে তরতরিয়ে কুঁয়ে নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে। ফলে ফের জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কায় দিন গুনছেন ওই সব এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫২
Share: Save:

তিন দিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়ল। সঙ্গে প্রায় দেড়শো হেক্টর জমি জলের তলায় গিয়েছে। নষ্ট হয়েছে ওই সব জমিতে লাগানো আমন ধান। কষ্টেসৃষ্টে রোপণ করা ধান জলের নীচে যাওয়ায় চাষির কপালে চিন্তার চওড়া ভাঁজ পড়েছে। শ্রাবণের এই বৃষ্টিতে এমনই দুর্দিন নেমে এসেছে কান্দি মহকুমার বড়ঞা ও খড়গ্রাম ব্লকের ওই সব গ্রামগুলিতে।

শনিবার সন্ধ্যা থেকেই বড়ঞা ব্লকের সুন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সোনাভারুই, জাওহাড়ি, বড়ঞা, বৈদ্যনাথপুর, আনন্দনগর, মারুটের মতো গ্রামগুলির রাস্তা-ঘাটে জল জমতে শুরু করে। একই ভাবে খড়গ্রামের নিচু যাদবপুর এলাকায় ব্রাহ্মণী নদীর বাঁধ ভেঙে গিয়ে যাদবপুর, ভুসকুল, কেলাই, পোড়াডাঙা গ্রামের রাস্তায় রাস্তায় হাঁটু সমান জল জমেছে। জলবন্দি হয়ে ঘরে বসে রয়েছেন কয়েক হাজার বাসিন্দা। একই ভাবে ওই দিন সন্ধ্যা নাগাদ ভরতপুর ১ ব্লকের চাঁদপুর, রুহা, কল্লা, জখিনা, ছত্রপুরের মতো গ্রামগুলিতে জল ঢুকেছে। কুঁয়ে নদীর জল ঢুকেছে ওই সব গ্রামগুলিতে। তবে স্বস্তির কথা, রবিবার সকাল থেকে ওই সব গ্রামের জমা জল ময়ূরাক্ষী নদীতে চলে গিয়েছে। ফলে ওই এলাকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।

তবে রবিবার দুপুরের পর থেকে তরতরিয়ে কুঁয়ে নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে। ফলে ফের জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কায় দিন গুনছেন ওই সব এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা।

ভরতপুর ১ ব্লকের বিডিও অঞ্জন চৌধুরী বলেন, “কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধানদের পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে। প্রশাসনও নজরদারি চালাচ্ছে। ত্রাণ শিবিরে পর্যাপ্ত খাবারও মজুত রাখা হয়েছে।’’

এ দিকে বড়ঞার সাতটি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে জাওহাড়ি, ভড়ঞা ও সোনাভারুই গ্রামের মূল রাস্তা জলের নীচে চলে গিয়েছে। ফলে ওই সব গ্রামের লোকজন ব্লকের অন্যান্য এলাকা থেকে এখন বিচ্ছিন্ন। বাড়িতেও জল ঢুকেছে। জলমগ্ন বাড়ির বাসিন্দা গ্রামের অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় অস্থায়ী ভাবে ঠাঁই নিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, শনিবার বিকেল থেকে মাঠে ধীরে ধীরে জল ঢুকতে শুরু করে। পরে তা লোকালয়ে চলে আসে। প্রশাসনের কর্তাদের হুঁশ ফেরে তারপর। আধিকারিকেরা প্রথম থেকে তৎপর হলে ঘরছাড়া হতে হত না। লালমুখী মণ্ডল, নারায়ণ বাগদিরা বলেন, ‘‘ধানের বীজতলা জলে নষ্ট হয়ে যাবে। এ বার ধান চাষ করা যাবে না বলেই মনে হচ্ছে।”

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূম ও ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টির জেরে বীরভূমের লাঙলহাটা বিল দিয়ে কুঁয়ে নদীতে ঢোকে। খড়গ্রামের ব্রাহ্মণী নদীর বাঁধ সংস্কার করা হচ্ছে। কান্দি মহকুমা শাসক অভীক কুমার দাস বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন সব রকম ভাবে প্রস্তুত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Heavy Rainfall Flood River কান্দি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE