পুজোর মুখে সন্ধে জুড়ে বোমার লড়াইটা প্রথমে মণ্ডপে ঠাকুর এল বলেই ভেবেছিলেন আশপাশের গ্রামবাসীরা। কিন্তু, মহালয়ার আগেই প্রতিমা? ভুলটা ভাঙতে শুরু করে ‘শব্দিবাজি’র সঙ্গে তুমুল হইহল্লা শুরু হওয়ায়। পুজোর সোল্লাসের ভুল ভাঙতেই এর পরেই দোকানপাটে ঝাঁপ পড়তে শুরু করে, বন্ধ হয়ে যায় গ্রামের পথে চলাচল। ভর সন্ধ্যাতেই রাতের চেহারা নেয় আসোয়া গ্রাম।
রবিবার সন্ধ্যায় কান্দির মহালন্দি এলাকার আসোয়া গ্রামে এই তীব্র বোমার লড়াইয়ের জেরে উড়ে গিয়েছে এক জনের কব্জি, অন্য জনের পা। গুরুতর জখম দু’জনকেই ভর্তি করানো হয়েছে কলকাতার হাসপাতালে।
ঘটনার সূত্রপাত খুনে অভিযুক্ত এক ব্যক্তি জামিন পেয়ে গ্রামে ফিরতেই তার উপরে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর হামলা। আর সেই রেষারেষির সুতোয় জড়িয়ে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল আসোয়া গ্রাম। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনায় রাজনীতির তেমন যোগ নেই। বরং রয়েছে দু’দল দুষ্কৃতীর বিবাদের যোগসূত্র। বছর তিনেক আগে, মহলন্দি ১ নম্বর অঞ্চল প্রধান, কংগ্রেস সভাপতি ইমামুল শেখ খুন হয়েছিলেন। মূল অভিযুক্ত ছিল আল্লারাখা। গ্রেফতারও হয়েছিল সে। কিন্তু মাস তিনেক আগে জামিনে ছাড়া পেয়ে সে গ্রামে ফিরেছিল। কিছু দিন হল সে তার পুরনো গরুর ব্যবসাও ফেঁদে বসেছিল গ্রামে।
রবিবার সন্ধ্যায়, নিহত ইমামুল শেখের লোকজন আল্লারাখার উপরে চড়াও হয়। মহলন্দি থেকে আসোয়া ফেরার পথে একটি বটগাছের নীচে জড় হয়েছিল দুষ্কৃতীরা। আল্লারাখাকে দেখেই শুরু করে বোমাবাজি।
পালাতে গিয়ে মাটিতে পড়ে যায় আল্লারাখা। পুলিশ জানায়, তার পায়ে বোমার আঘাত লাগে। ‘কাজ হাসিল’, আল্লারাখা মারা গিয়েছে ভেবে তার বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকজন পালানোর চেষ্টা করেছিল বটে। তবে, সেই সময়ে আচমকা তাদের লুতফর শেখের হাতেই ফেটে যায় একটি বোমা। রক্তাক্ত আল্লারাখাকে পড়ে থাকতে দেখে ততক্ষণে জড়ো হতে শুরু করেছেন গ্রামের লোক জন। তাঁরাই আহত আল্লারাখার অদূরেই পড়ে রয়েছে আরও এক জন, লুতফর। তার হাত উড়ে গিয়েছে। এর পরে তাঁরাই আহত দু’জনকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যলা কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর যায় পুলিশে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আল্লারাখার পা বাদ দেওয়া ছাড়া গতি নেই। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত দু’জনকেই কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আল্লারেখা পরিচিত সমাজবিরোধী। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে। বেশ কয়েক বার গ্রেফতারও হয়েছে সে। কান্দি থানার আইসি সোমনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “পুরনো বিবাদে এই ঘটনা মনে হচ্ছে। দু’দল সমাজবিরোধী পুজোর মুখে গ্রামে গন্ডগোল পাকাতে চেয়েছিল ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy