Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
saudi Arabia

জেলার দুই শ্রমিক আটক সৌদি আরবে

তাঁর স্ত্রী সেবিনা বিবি জানান, সাত মাস থেকে আমার স্বামীর কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। আবার বাড়ি ফেরার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না করে নথিপত্র আটকে রেখেছে সেখানকার বেসরকারি সংস্থা।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নদিয়া শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৪৮
Share: Save:

করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়েছেন প্রায় ৭ মাস আগে। তার পরে কোনও কাজ পাননি। উল্টে যে সংস্থায় কাজ করতেন, তাঁরা এক্সিট ভিসা-সহ অন্য নথিপত্রও দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন মুর্শিদাবাদের সাত পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবার। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, সে কারণেই সৌদি আরবে আটকে পড়েছেন নদিয়া-মুর্শিদাবাদের ৯ জন শ্রমিক। একদিকে কাজ নেই, অন্য দিকে ঘরে ফিরতে পারছেন না। দুইয়ের কারণে বাড়ির পাঠানো টাকায় সেখানে কোনও রকমে সেখানে দিন গুজরান করছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পরিবারের লোকজন ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের সাহায্য চাইলেন। বৃহস্পতিবার ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের পোর্টাল ‘Madad’-এ ওই ৯ জনকে ঘরে ফেরানোর দাবিতে আবেদন জানানো হয়েছে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে তাঁরা ঘরে ফেরানোর আবেদন করেছেন। এ ছাড়া অফিস খুললে তাঁরা জেলাশাসকের দফতরে একই আবেদন জানাবেন।

জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘আবেদন এলে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। তাঁদের পরিবারের লোকজন সরাসরি বিদেশ মন্ত্রকে মেল করে বা পোর্টালের মাধ্যমেও যোগাযোগ করতে পারেন। তাতেও সাহায্য পাওয়া যায়।’’বহরমপুরের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে সৌদিতে নদিয়া-মুর্শিদাবাদের ৯ জন কাজ হারিয়ে আটকে রয়েছে। তাঁরা যে সংস্থায় কাজ করতেন, সেই সংস্থা দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করছে না। তাই এ দিনই বিদেশ মন্ত্রকের পোর্টালে ওদের দেশে ফেরানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।’’ বহরমপুর ব্লকের সুন্ধিপুরের ইসরাফিল শেখ ৬ বছর আগে সৌদি আরবে কাজের সন্ধানে যান। তিনি সেখানে একটি বেসরকারি সংস্থার হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে সাফাইকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।

তাঁর স্ত্রী সেবিনা বিবি জানান, সাত মাস থেকে আমার স্বামীর কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। আবার বাড়ি ফেরার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না করে নথিপত্র আটকে রেখেছে সেখানকার বেসরকারি সংস্থা। যার ফলে তার সেখানে কষ্ট হচ্ছে। ঋণ করে সেখানে টাকা পাঠিয়েছি।’’বহরমপুরের ভোল্লা গ্রামের যুবক সাদ্দাম হোসেন ইসরাফিলের সঙ্গে একই সংস্থায় কাজ করেন। তিনি ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কাজ হারিয়ে বসে আছেন। ফেরানোর বিষয়ে সেখানকার সংস্থা কোনও রকম সাহায্য করছে না। সাদ্দামের মা আফরোজা বিবি বলেন, ‘‘বিদেশে ছেলের কোনও কাজ নেই। টাকার অভাবে সেখানে থাকা খাওয়ার সমস্যা হচ্ছে। তাই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাছ থেকে ৩০হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সৌদি আরবে পাঠিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমরা খুব গরিব। সে জন্য লক্ষাধিক টাকা খরচ করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছি। সেখান থেকে আয় দূরে থাক, এখন ঋণ নিয়ে টাকা পাঠাতে হচ্ছে। আমরা চাই সরকার তাঁদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।’’

বহরমপুরের নিয়াল্লিশপাড়া সংলগ্ন টিকাপাড়ার সঞ্জয় দোলইও একই সংস্থায় কাজ করতে গিয়ে আটকে পড়েছেন। তাঁর স্ত্রী সঞ্চিতা দোলই বলেন, ‘‘কাজ না পেয়ে খুব কষ্টে আছে। আমরা চাই ওদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হোক।’’ সঞ্জয় ইসরাফিলদের মতো বহরমপুর ও নবগ্রামের মোট ৭ জন এবং নদিয়ার চাপড়ার দু’জন সৌদি আরবের একই সংস্থায় কাজ করতে গিয়ে আটকে পড়েছেন বলে তাঁদের পরিবারের অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Worker Missing Nadia Worker saudi Arabia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE