Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

নিয়োগ নিয়ে নালিশ, চিঠি পাঠাল ইউজিসি

নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের। 

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়।—ফাইল চিত্র

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়।—ফাইল চিত্র

মনিরুল শেখ
কল্যাণী শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০৬:০৮
Share: Save:

নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের।

মাস কয়েক আগে বিভিন্ন অনুষদের কয়েকটি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। সেই সময়েই অভিযোগ উঠেছিল, নিয়োগে প্রভাব খাটানোর জন্যই কল্যাণীর পরিবর্তে চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হচ্ছে কলকাতার বোস ইনস্টিটিউটে। তার পরে নিয়োগপত্র বাতিল করা হয় সুদীপ্ত মণ্ডল নামে এক চাকরিপ্রার্থীর। তাঁকে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে নিয়োগের কয়েক দিন পরই উপাচার্য জানান, ‘ভুল করে’ তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছিল।

আর ওই নিয়োগ চলাকালীন সংরক্ষণের নীতি ঠিক ভাবে না মানা, সংরক্ষিত শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীদের নম্বরে ছাড় না দেওয়া, বেশ কয়েক বছর আগের বিজ্ঞাপনের ভিত্তিতে তড়িঘড়ি নিয়োগের মতো হরেক অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে চিঠি দেন মহম্মদ কামরুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এই নিয়োগ নিয়ে প্রথম থেকেই নানা অনিয়ম কানে আসছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও লাভ হয়নি। বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়ে তাঁরা দায় সেরেছিলেন। আর তলে তলে নানা অনিয়ম করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করেন।’’

গত ৯ জুলাই কামরুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ডি পি সিংহের কাছে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানান। দিন কয়েক আগে কমিশনের আন্ডার সেক্রেটারি সি পি গৌর কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শঙ্করকুমার ঘোষকে চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে কামরুজ্জামানকেও। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, নিয়োগ নিয়ে ওঠা অভিযোগের জবাব কমিশনের কাছে পাঠাতে হবে উপাচার্যকে। সেই জবাবের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা ঠিক করবে কমিশন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। তার পরে বহু দিন নিয়োগ নিয়ে কোনও প্রক্রিয়া শুরুই করেননি কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি নাগাদ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। কামরুজ্জামানের আক্ষেপ, ‘‘এই বছর চারেকের মধ্যে অনেকেই তো স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন, অনেকে নেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন বা অনেকের গবেষণা শেষ করেছেন। তাঁরা কিন্তু আবেদন করতে পারেননি।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, ২০১৬ সালের মাঝামাঝি একটি অডিটোরিয়াম উদ্বোধন করতে এসে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া কয়েক মাসের মধ্যে শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও কর্তৃপক্ষ এক প্রকার হাত গুটিয়েই বসে থাকেন। হঠাৎই এ বছর তড়িঘড়ি নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।

কিন্তু সমস্যা হল, আগের আবেদনকারীদের ই-মেল মারফত ইন্টারভিউয়ে হাজির হতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এই কয়েক বছরে কেউ ‘মেল আইডি’ পাল্টে থাকতেই পারেন। তা ছাড়া সংরক্ষণের নিয়ম মেনে তফসিলি জাতি, জনজাতি, অন্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের আসনও দেওয়া হয়নি। এ সবের প্রতিকার না পেলে তিনি এর পর আদালতেরও দ্বারস্থ হবেন বলে হুমকিও দিয়েছেন কামরুজ্জামান।

এ প্রসঙ্গে উপাচার্য শঙ্করকুমার ঘোষ শুধু বলেন, ‘‘ইউজিসি-র চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কী করা হবে, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

UGC Letter Kalyani University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE