মেডিক্যালে ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র
এক প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বর। শনিবার গভীর রাতে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ ‘মাতৃমা’-তে মারা যান নাসিমতারা বানু (২৮)। ওই প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে রোগীর পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-পরিজন হাসপাতালে ভাঙচুর করেন। এমনকি জুনিয়র ডাক্তারদের উপরে চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেন। জুনিয়র ডাক্তারও দল বেঁধে রোগীর পরিবারের লোকজনকে পাল্টা মারধর করে বলেও অভিযোগ।
খবর পেয়ে বহরমপুর থানাকে বিশাল পুলিশ হাসপাতাল চত্বরে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয় এবং ঘটনাস্থল থেকে চার জনকে গ্রেফতার করে। এর পরেই পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে ওই ঘটনায় উত্তেজনা থাকায় হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ব্যাপারে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ দেবদাস সাহা বলছেন, ‘‘চিকিৎসায় কোন গাফিলতি হয়নি। শেষ মুহূর্তে ওই রোগীকে নিয়ে এসে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু চেষ্টা করা সত্ত্বেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। এটা দুর্ভাগ্যের।’’
বেলডাঙার থানার ঝুনকা গ্রামের প্রসূতি নাসিমতারাকে বৃহস্পতিবার সকালে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ‘মাতৃমা’-তে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে রোগীর বাড়ির লোকজন নাসিমতারাকে হাসপাতাল থেকে ‘ছুটি’ করিয়ে নিয়ে গিয়ে বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির বন্দোবস্ত করেন। শনিবার দুপুরে সেখানেই অস্ত্রোপচার করে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন নাসিমতারা বানু। এর পরেই তাঁর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রক্ত বন্ধ না হওয়ায় ওই সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসে ফের ভর্তি করানোর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মারা যান নাসিমতারা।
ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে রোগীর বাড়ির লোকজন জুনিয়র ডাক্তারদের উপরে চড়াও হন। হাসপাতালেও ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। নাসিমতারার আত্মীয় মইদুল হক ও নজরুল ইসলামদের অভিযোগ, কোনও সিনিয়র চিকিৎসক রোগীকে দেখেননি। জুনিয়র ডাক্তাররা চিকিৎসা করেন। কিন্তু তাঁরা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না।
রোগীর বাড়ির লোকজদের অভিযোগ, হস্টেল থেকে জুনিয়র ডাক্তাররা দলবেঁধে এসে মারধর করে। তখন উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালে ভাঙচুর চালান হয়।
যদিও জুনিয়র ডাক্তারদের হয়ে সাফাই দিয়েছেন হাসপাতালের সুপার দেবদাস সাহা। তিনি বলছেন, ‘‘রোগী মৃত্যুর ঘটনার পরে পরিবারের লোকজন জুনিয়র ডাক্তারদের উপরে চড়াও হন। তখন পাল্টা প্রতিরোধ করে তারা। জুনিয়র ডাক্তাররা রোগীর বাড়ির কাউকে মারধর করেনি। তবে গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। রোগীর বাড়ির লোকজন হাসপাতালে ভাঙচুর করেও ঠিক করেননি।’’
বহরমপুর থানার আইসি সনৎ দাস জানান, হাসপাতালের ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy