Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সাইকেল বিলি নিয়ে রণক্ষেত্র কাশীপুর

সাইকেল বিলি নিয়ে প্রবল অশান্তি হল রেজিনগরের কাশীপুরে।শুধু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছাত্রীদের সাইকেল দেওয়া চলবে না দাবি করে উঁচু ক্লাসের ছাত্রেরা পথ অবরোধ করে। ঘেরাও করা হয় শিক্ষকদের।

ভাঙচুরের পর। নিজস্ব চিত্র

ভাঙচুরের পর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রেজিনগর শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৭
Share: Save:

সাইকেল বিলি নিয়ে প্রবল অশান্তি হল রেজিনগরের কাশীপুরে।

শুধু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছাত্রীদের সাইকেল দেওয়া চলবে না দাবি করে উঁচু ক্লাসের ছাত্রেরা পথ অবরোধ করে। ঘেরাও করা হয় শিক্ষকদের।

ছাত্রদের অভিযোগ, তারা যখন দাবি জানাচ্ছিল, পুলিশ লাঠি চালায়। শূন্যে তিন রাউন্ড গুলি ছোড়ে। যদিও পুলিশ তা উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু দু’টি পুলিশের গাড়ি ও বিডিওর একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

শনিবার কাশীপুর তারিণীসুন্দর বিদ্যাপীঠে ৫০০ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছাত্রীকে সাইকেল দেওয়ার কথা ছিল। সেই মতো ওই স্কুল এবং তার পাশের আন্দুলবেড়িয়া হাইস্কুল ও তেঘরি নাজিরপুর হাইস্কুলের ছাত্রীরা এসে জমা হয়। কিন্তু বাদ সাধে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রেরা। স্কুল ছে়ড়ে যাওয়া, কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রেরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।

ছাত্রদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তাদের নাম তালিকায় থাকলেও তারা সাইকেল পায়নি। এই নিয়ে ছাত্রেরা কাশীপুর মোড় সংলগ্ন রাস্তা বেলা ১১টা থেকে অবরোধ শুরু করে। শিক্ষকদের ঘেরাও শুরু হয়। পরে ১৪ জন ছাত্র প্রতিনিধিকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক, বেলডাঙা ২-এর বিডিও দিলীপ বাগদি, রেজিনগরের ওসি প্রশান্ত দত্ত, স্থানীয় বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরীরা বৈঠকে বলেন। এরই মধ্যে খবর ছড়ায়, পুলিশ ও সিভিক ভল্যান্টিয়াররা লাঠি চালিয়েছে। শূন্যে তিন রাউন্ড গুলিও ছুড়েছে। বাইরে থেকে ইঁটবৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। গাড়িতে ভাঙটুর করা হয়। পরে বেলডাঙা থেকে বড় পুলিশ বাহিনী গিয়ে অবস্থা সামাল দেয়। তবে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সাইকেল না পেলে ফের ঝামেলা হবে ছাত্রেরা হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

ছাত্রদের অভিযোগ, সলমন শেখ ও নিয়ারুল শেখ নামে দুই ছাত্রের পায়ে ও মাথায় চোট লেগেছে। ছাত্রদের পক্ষে রবিউল শেখ, আজিবুর শেখ, সলমন শেখ, ফারুক শেখেরা বলে, ‘‘তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও আমাদের সাইকেল না দিয়ে অন্যদের দেওয়ার প্রতিবাদ করেছি।’’ তাদের অভিযোগ, ‘‘আমরা যখন গেট লাগিয়ে আন্দোলন করছি, আচমকাই গেট খোলানোর চেষ্টা করে পুলিশ। প্রথমে ধাক্কা দেয়, পরে লাঠি চালায়। তাতেও কাজ না হওয়ায় পুলিশ শূন্যে গুলি চালায়।’’

কাশীপুর তারিণীসুন্দর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক সূর্যনারায়ণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ছাত্রীদের সাইকেল দেওয়ার সব বন্দোবস্ত হয়েছিল। কিন্তু কিছু ছাত্র বাধা দেয়। কিন্তু পুলিশ লাঠি বা গুলি চালিয়েছে, এমন কথা আমরা জানি না।’’ রেজিনগর থানার ওসি প্রশান্ত দত্ত বলেন, ‘‘লাঠি চালানো বা শূন্যে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেনি।’’

বেলডাঙা ২ ব্লক কংগ্রেস (পূর্ব) সভাপতি মিন্টু সিংহের অভি‌যোগ, ‘‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের না জানিয়ে সাইকেল বিলির প্রস্তুতি চলছিল। দলত্যাগী বিধায়ককে দেখে এলাকার মানুষ ক্ষোভ দেখান।’’ রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘কংগ্রেস একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রদের উত্তেজিত করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। সাইকেল বিলি নিয়ে এই রাজনীতি না করলেই ভাল হত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cycle Delivery Vandalism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE