Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

নসিকের ছায়ায় ক্ষেতেই পেঁয়াজ, তুলতে আগ্রহ নেই চাষিদের

বহরমপুরের বাণীনাথপুর আশ্রমে এ বারে তিন বিঘা জমিতে বর্ষাকালীন পেঁয়াজ লাগানো হয়েছিল। সেই পেঁয়াজ তোলার সময় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পেঁয়াজের দাম কমের কারণে সে পেঁয়াজ মাঠেই থেকে গিয়েছে।

হতাশ-চাষি: বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

হতাশ-চাষি: বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৪৯
Share: Save:

মহারাষ্ট্রের নাসিকে জলের দরে পেঁয়াজ বিকোচ্ছে। যার ছায়া পড়েছে মুর্শিদাবাদের বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষেও। চাষিদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে, নাসিকের স্বল্পমূল্য এবং আড়তদারদের নিষেধাজ্ঞা।

মাঠ থেকে তাই বর্ষাকালীন পেঁয়াজ তোলায় ভরসা পাচ্ছেন না চাষিরা। ফলে পরবর্তী চাষও পিছিয়ে যেতে বসেছে। মুর্শিদাবাদের জেলা উদ্যান পালন আধিকারিক গৌতম রায় বলেন, ‘‘নাসিকে পেঁয়াজের দাম কম, সেই স্বল্প দামের পেঁয়াজ ঢুকছে এ জেলাতেও। যার ফলে দাম পাচ্ছেন না জেলার পেঁয়াজ চাষিরা।’’

বহরমপুরের বাণীনাথপুর আশ্রমে এ বারে তিন বিঘা জমিতে বর্ষাকালীন পেঁয়াজ লাগানো হয়েছিল। সেই পেঁয়াজ তোলার সময় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পেঁয়াজের দাম কমের কারণে সে পেঁয়াজ মাঠেই থেকে গিয়েছে। বাণীনাথপুর আশ্রমের কৃষিকাজ দেখাশুনা করেন আব্দুল মোহিত খান। তিনি বলেন, ‘‘এক দিকে নাসিকে জলের দামে পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। অন্য দিকে বছরের সুখসাগর পেঁয়াজ বাজারে আসছে। যার ফলে আড়তদার পেঁয়াজ নিয়ে যেতে নিষেধ করেছে।’’ আব্দুল মোহিতের দাবি, ‘‘পেঁয়াজের বাজার না থাকায় মাঠ থেকে তুলতে পারিনি। যার ফলে কিছু পেঁয়াজ মাঠে নষ্ট হতে শুরু করেছে। অন্যদিকে পরবর্তী আলুও চাষও পিছিয়ে গিয়েছে পারিনি।’’

মুর্শিদাবাদের রানিনগরের আজমতপুরের চাষি আবু সেলিম মিঞা আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে বিঘা আটেক জমিতে বর্ষাকালীন পেঁয়াজ লাগিয়েছিলেন। সেই পেঁয়াজ ওঠার সময়ও হয়েছে। আবু সেলিম মিঞা বলেন, ‘‘এবারে বর্ষা কম হওয়ার কারণে বর্ষার পেঁয়াজ ভাল হয়নি। তার ওপরে মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজের দাম কমের কারণে এখানেও পেঁয়াজের দাম কম। ফলে আমরা ক্ষতির মুখে পড়ব।’’ জেলা উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে জেলায় ১৫০০ হেক্টর জমিতে বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষ হয়েছিল। সেই পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। অন্যদিকে জেলায় শীতকালীন পেঁয়াজ লাগানোর কাজ চলছে। চলতি বছরে আনুমানিক ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন পেঁয়াজ লাগানো হবে।

বহরমপুরের নতুন বাজারে ছোট আকারের পেঁয়াজের পাইকারি দাম ৬ টাকা কেজি এবং বড় আকারের দাম ১০-১২ টাকা কেজি। বহরমপুরের খুচরো বাজারে পেঁয়াজ ১৬-২০ টাকা কেজি দামে বিকোচ্ছে। ইমরুল কয়েস কমিশনের ভিত্তিতে পেঁয়াজের ব্যবসা করেন। তিনি বলছেন, ‘‘নাশিক থেকে পেঁয়াজ আনতে অন্ততপক্ষে ৮ টাকা খরচ হয়। এখানে পেঁয়াজের পাইকারি দর ৬-১২ টাকা কেজি। ফলে চাষি থেকে ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। যার প্রভাব আমাদের ওপর পড়ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Onion Murshidabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE