Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
lockdown

ঘরে ফেরার ভিড়ে আশঙ্কা 

গত রবিবার থেকে তাঁরা দলে দলে ঘরে ফিরছিলেন। বিভিন্ন স্টেশন থেকে তাঁরা ছড়িয়ে পড়েছিলেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে।

শনিবারও এই ভাবেই লোক ঢুকেছে। কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

শনিবারও এই ভাবেই লোক ঢুকেছে। কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২০ ০১:৪৬
Share: Save:

দু’দিন তেমন ভাবে দেখা যায়নি তাঁদের। কৃষ্ণনগরের রাস্তায় কাঁধে লোটাকম্বল নিয়ে হেঁটে যাওয়া ক্লান্ত মানুষগুলিকে। কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছিল প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর।

কিন্তু তাতে ছেদ পড়ল শনিবার সকালে। আবার দেখা গেল বিধ্বস্থ চেহারার পরিযায়ী শ্রমিকদের। ছোট ভ্যান, ম্যাটাডোর, গাড়িতে চেপে কোনও রকমে বাড়ি ফিরছেন তাঁরা। তাতে অনেকেই কিছুটা আতঙ্কিত হয়েছেন। কারণ, অনেকেই মনে করছেন ভিন রাজ্য বা জেলা থেকে ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা প্রবল। ফলে তাঁদের সংখ্যা বাড়লে রোগ সম্ভাবনা বাড়বে।

গত রবিবার থেকে তাঁরা দলে দলে ঘরে ফিরছিলেন। বিভিন্ন স্টেশন থেকে তাঁরা ছড়িয়ে পড়েছিলেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তাঁদের ঢুকতে দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে পড়া এই শ্রমিকদের চিহ্নিত করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয়েছে প্রশাসনকে। এই পরিস্থিতে দাঁড়িয়ে আবার নতুন করে জেলায় পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরতে শুরু করায় প্রথম দিকে বিচলিত হয়ে পড়েন কর্তারা। দেখা যায় যে, এই শ্রমিকরা ভিন রাজ্য থেকে ফিরছেন না। গাড়ি বোঝাই হয়ে তাঁরা আসছেন ভিন জেলা থেকে। বেশির ভাগই মেদিনীপুর ও বর্ধমান থেকে। বেশির ভাগই চাপড়া ব্লকের বাসিন্দা বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “এঁরা মূলত ধান কাটতে মেদিনীপুর ও বর্ধমানে যান। সেখানেই আটকে গিয়েছিলেন।” তাঁর কথায়, “সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে তাঁরা দলে দলে ফিরছেন বলে জানা যাচ্ছে।” কর্তাদের দাবি, গাড়িগুলো যে গ্রামে গিয়ে থামছে সেখানেই তাঁদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নেওয়া হচ্ছে। এঁদের উপরেও নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের। তাঁদেরকেও হোম কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বলে স্বাস্থ্যকর্তারা জানান।

প্রতিদিনই বাড়ছে ভিন রাজ্য বা ভিন জেলা থেকে আসা শ্রমিকের তালিকা। তবে এখনও পর্যন্ত ভিন রাজ্য থেকে ফিরে হোম কোয়রান্টিনে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে কারও কারও জ্বর বা অন্য শারীরিক সমস্যার খবর এলেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ মেলেনি বলেই স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি।

বার্নিয়ায় করোনা-আক্রান্তদেক সংস্পর্শে এসেছেন এমন ১০ জনকে চিহ্নিত করে কৃষ্ণনগরের কর্মতীর্থের কোয়রান্টিন সেন্টারের ভর্তি করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে ওই পরিবারের প্রতিবেশী থেকে শুরু করে পরিচারিকা, গাড়ির চালকও আছেন। জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত দেওয়ান বলছেন, “যাঁরা ওই পরিবারের সংস্পর্শে এসেছিলেন তাঁদের সবাইকেই চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁদেরকে কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা হচ্ছে। এর মধ্যে যদি কারও শরীরে উপসর্গ দেখা দেয় তখন তাঁদের আইসোলেশনে রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করা হবে।”

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE