নিজস্ব চিত্র
রবিবার কৃষ্ণনগর জজকোর্ট মাঠের আকাশে লড়াই লেগেছিল পেটকাটি, চাঁদিয়ালের। মাঠের দু’দিকে দুই মাস্ক পরা প্রতিযোগী লাটাই হাতে প্রাণপণ লড়াই করছেন জেতার জন্য। পিছনে দাঁড়ানো ভিড়টা চিৎকার করে উৎসাহ দিচ্ছে প্রতিযোগীদের। তবে এই ভিড়ে উধাও সামাজিক দূরত্ব। কারও কারও মুখে মাস্ক পর্যন্ত নেই। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ওই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে এলাকারই এক ক্লাব।
কিন্তু লকডাউনের মাঝে যেখানে সব রকমের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বন্ধ, সেখানে এই ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতার অনুমতি মিলল কী করে? আয়োজকদের দাবি, তাঁরা এ জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়েছিলেন। আর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অনেকটা দূরত্ব রেখে প্রতিযোগীদের দাঁড় করিয়েছিলেন। তবে মাঝখানে যে এত দর্শক ঢুকে পড়বেন, তা তাঁরা আন্দাজ করতে পারেননি বলেই দাবি তাঁদের।
তবে স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের কাছ থেকে এই ব্যাপারে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা প্রশাসক অসীম সাহা বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে এই ধরনের জন সমাগম বা প্রতিযোগিতা সম্পূর্ণ বেআইনি।’’ ভবিষ্যতে এমন বেআইনি অনুষ্ঠান রুখতে কড়া নজর রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
ক্লাবের কয়েকজন সদস্য জানান, তাঁরা এই মাঠে নিয়মিত ফুটবল, ক্রিকেট খেলতেন। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে সে সব বন্ধ। মেলামেশার উপায় নেই। এর মধ্যে গৃহবন্দি অবস্থায় কম বেশি সকলেই অবসর কাটাতে ছাদ থেকে ঘুড়ি ওড়াতেন নিয়মিত। আকাশে লড়াই চলত ঘুড়ির। সেই লড়াইকে প্রতিযোগিতার রূপ দিতে এই ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল বলে জানান তাঁরা।
ক্লাবের সদস্য অমিত দাস বলেন, ‘‘মাস্ক পরে স্যানিটাইজ়ার নিয়ে প্রতিযোগীদের আসতে বলা হয়েছিল। মোট ৩২ জন প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতায় যোগ দেয়।’’ ক্লাবের সদস্যদের কাছে আরও জানা যায়, মোট চারটি পর্যায়ে খেলার শেষে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় বিজয়ী নির্বাচন করার কথা ছিল। প্রথম পুরস্কার ছিল ট্রফি ও সাড়ে চার হাজার টাকা। প্রত্যেক প্রতিযোগীকে ৩০০ টাকা এন্ট্রি ফি দিয়ে প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে হয়েছে। কিন্তু প্রথম পর্বের খেলার পরেই বৃষ্টি নামে। বন্ধ হয়ে যায় প্রতিযোগিতা। এক প্রতিযোগী রাকেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘বেসরকারি চাকরি করি। লকডাউনে দীর্ঘ দিন ঘরে বসে ছিলাম। সে সময় মানসিক অবসাদ ও দুশ্চিন্তা কাটাতে ঘুড়ি ওড়ানোয় হাত পাকিয়েছি।’’ আয়োজকদের তরফে রাজু দাস বলেন, ‘‘বৃষ্টি হয়ে প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে ভালই হয়েছে। আমরা বার বার বলার পরেও অনেক দর্শক দূরত্ব বজায় রাখছিলেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy