Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দশ কাঁটায় জেরবার, জোটে মুখভার কংগ্রেসের

এই জেলার ২২টি আসনের মধ্যে ১০টি আসনে বাম-কংগ্রেসের মধ্যে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ হচ্ছে। শুক্রবার, মুর্শিদাবাদে প্রার্থী প্রত্যাহারের শেষ দিনে কোনও পক্ষই সরে না দাঁড়ানোয় লড়াইয়ের মধ্যে ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে সংশয় রয়েই গেল। এতে শাসক দলের ফায়দা হবে কি না, সেটাই এখন কংগ্রেস-বাম শিবিরের চর্চার বিষয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৫৮
Share: Save:

জোটে জটিলতা জিইয়ে রইল মুর্শিদাবাদে।

এই জেলার ২২টি আসনের মধ্যে ১০টি আসনে বাম-কংগ্রেসের মধ্যে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ হচ্ছে। শুক্রবার, মুর্শিদাবাদে প্রার্থী প্রত্যাহারের শেষ দিনে কোনও পক্ষই সরে না দাঁড়ানোয় লড়াইয়ের মধ্যে ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে সংশয় রয়েই গেল। এতে শাসক দলের ফায়দা হবে কি না, সেটাই এখন কংগ্রেস-বাম শিবিরের চর্চার বিষয়।

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কোনও রাখঢাক না রেখেই খোলসা করে দেওয়া হচ্ছে— ওই সব কেন্দ্রে কংগ্রেস তার অস্তিত্ব বাঁচাতেই ‘সর্বস্ব দিয়ে লড়াই করবে। জোট নির্মানের প্রথম পর্বেই বাম-কংগ্রেস আলোচনায় স্থির হয়েছিল, জয়ী কেন্দ্রগুলি দু’পক্ষই তাদের হাতে রাখবে। তাঁর একান্ত নিজের গড় মুর্শিদাবাদেও তিনি যে বাড়তি আসন দাবি করবেন না, আলোচনায় তা আগাম জানিয়ে রেখেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তবে, কংগ্রেসের কপালে ভাঁজ পড়তে পড়তে শুরু করেছিল বামেরা তাদের দ্বিতীয় পর্বের প্রার্থী ঘোষণার পরেই। কংগ্রেসের দাবি, বাম শরিকদের মন রাখতে সেই সময়ে এমন কয়েকটি আসনে প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল যেগুলি শুধু যে কংগ্রেসের দখলে ছিল তাই নয়, সেখানে তাদের সাংগঠনিক ক্ষমতাও বেশি।

কান্দি মহকুমার ভরতপুরে কমলেশ চট্টোপাধ্যায় এবং বড়ঞায় প্রতিমা রজক— দু’জনেই যে কংগ্রসের যথেষ্ট শক্তিশালী প্রার্থী তা মেনে নিচ্ছেন জেলা সিপিএমের নেতারাই। ওই দুটি আসনে শরিক আরএসপি-র চাপেই শেষ পর্যন্ত যে তাদের মাথা ঝোঁকাতে হয়েছে তাও কবুল করছেন তাঁরা।

কংগ্রেসের দাবি, একই কারণে সুতি নওদা কিংবা রঘুনাথগঞ্জের মতো আসনেও আরএসপি প্রার্থী দিয়েছে। জেলা সিপিএমের এক নেতার কথায়, ‘‘আরএসপি তার অস্বিত্ব রক্ষার প্রশ্ন তুলে ওই সব কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার জেদ ধরে থাকে।’’ তবে শরিকদের দোষারোপ করলেও, জেলা কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার অভিযোগ, ‘‘জঙ্গিপুর আসনটি কংগ্রেসের দখলে ছিল বরাবর। সিপিএম সেখানেও প্রার্থী দিল কোন যুক্তিতে?’’

এখন যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে তা নিয়ে অধীর বলেছেন, ‘‘আমি কংগ্রেস এবং বাম কর্মী-সমর্থকদের কাছে খোলাখুলিই আবেদন রাখছি, তৃণমূলকে রুখতে আপনারা নিজেদের বুদ্ধি-বিবেচনা প্রয়োগ করে ভোট দেবেন।’’ জেলার বাম নেতারাও সে সুরেই কথা বলছেন। এমনকী, দিন কয়েক আগে বহরমপুরে এসে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়ে গিয়েছিলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের ফলে কোনও কেন্দ্রে তৃণমূল কিংবা বিজেপি সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে দেখলে দলীয় কর্মীদের বসে যেতে বলবেন তিনি। দলের এক পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ‘‘সূর্যবাবু মুর্শিদাবাদে গিয়ে কর্মিসভা করে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, যে কেন্দ্রে যে প্রার্থী শক্তিশালী, তাঁর জন্যই সিপিএম কর্মীদের কাজ করতে হবে। তাঁর এই বার্তায় বাম শরিকদের একাংশ অসন্তুষ্টও হয়েছে। কিন্তু যেখানে কংগ্রেস শক্তিশালী, সেখানে তাদেরকেই যে সাহায্য করা হবে, তা বোঝাতে আমাদের তরফে কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি।’’ মুর্শিদাবাদের জোট জটিলতার আঁচ রাজ্যের অন্যত্র লাগবে না বলেই ধারণা অধীরের। কিন্তু মুর্শিদাবাদের বাম নেতৃত্বের উপর ক্ষুব্ধ হয়েই আজ, শনিবার নারায়ণগড়ে সূর্যবাবুর প্রচারে অধীর যাচ্ছেন না বলে কংগ্রেসের একাংশের ব্যাখ্যা। তবে বাম নেতৃত্ব এই ব্যাখ্যা উড়িয়ে দিয়েছেন। অধীরও জানিয়েছেন, আজকের সভার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি বলে উত্তরবঙ্গে তাঁর সফর সূচি আগাম হয়ে গিয়েছিল। তাই যেতে পারছেন না নারায়ণগড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

congress Left alliance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE