Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ফড়ে না এজেন্ট, ধন্দে সীমান্ত

বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ জানিয়েছেন, ওই ভারতীয়রা সকলেই অবৈধ ভাবে ইরাকে গিয়েছিলেন। তাঁদের সম্পর্কে কোনও তথ্যই ছিল না ভারতীয় দূতাবাসের কাছে।

ইরাকে নিহত নদিয়ার দুই বাসিন্দা খোকন সিকদার এবং সমর টিকাদার। ফাইল চিত্র।

ইরাকে নিহত নদিয়ার দুই বাসিন্দা খোকন সিকদার এবং সমর টিকাদার। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৩৩
Share: Save:

‘এজেন্ট’ দিয়ে যায় চেনা! এজেন্ট ভাল হলে যাত্রা শুভ। না হলে বিদেশের মাটিতে পদে পদে বিপদ।

সম্প্রতি ইরাকের মসুলে জঙ্গিদের হাতে নিহত সমর টিকাদার ও খোকন সিকদার-সহ ৩৯ জন ভারতীয়ের দেহাবশেষ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তাঁরাও বৈধ ভাবে সেখানে যাননি বলেই জানা যাচ্ছে।

বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ জানিয়েছেন, ওই ভারতীয়রা সকলেই অবৈধ ভাবে ইরাকে গিয়েছিলেন। তাঁদের সম্পর্কে কোনও তথ্যই ছিল না ভারতীয় দূতাবাসের কাছে। তাঁরা ইরাকে যান অবৈধ এজেন্টদের মাধ্যমে। তার ফলে কারা কারা ইরাকে গিয়েছিলেন, ইরাকের কোথায় গিয়েছিলেন, তার খোঁজখবর পেতে অনেকটাই সময় চলে গিয়েছে।

সীমান্তের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এত টাকা খরচ করে, কষ্ট করে বিদেশ যাওয়া তো শুধু দু’টো পয়সা আয়ের জন্য। বিদেশ সম্পর্কে তাঁদের কোনও ধারণা নেই। ফলে এজেন্টদের উপরে বিশ্বাস করেই তাঁরা সবটা করেন। কিন্তু সেই বিশ্বাসই কখনও কখনও কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তা হলে উপায় কী?

প্রায় ১৮ বছর ধরে বিভিন্ন দেশের নানা কোম্পানিতে শ্রমিক পাঠানোর কাজ করছেন বগুলার সমর বিশ্বাস। তিনি বলছেন, “দেশে কিছু হলে সেটা সহজেই সামলানো যায়। কিন্তু বিদেশে ঝক্কি অনেক। ফলে, স্রেফ বিশ্বাসে কিছু হয় না। বহু বিষয় খোঁজ খবর করে তবেই বিদেশে পা বাড়ানো উচিত।’’ সমরের দাবি, ‘‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে এই কাজ করে আসছি। বিভিন্ন দেশের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আমাদের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে।” তিনি জানাচ্ছেন, শ্রমিকেরা যে দেশে কাজে যাচ্ছেন, সেখানকার কোম্পানির লোকজন এ দেশে এসে ‘ইন্টারভিউ’ নিয়ে তবেই লোক নিয়ে যায়। খুব কম সংখ্যক এজেন্ট এটার আয়োজন করে।

তাঁর অভিযোগ, এ পেশাতেও এখন ফড়ে ঢুকে গিয়েছে। তাঁরা নিজেদের এজেন্ট বলে দাবি করেন। বিস্তর টাকাপয়সাও নেন। এ দিকে, শ্রমিকদের কোনও ইন্টারভিউ দিতে হয় না। কোম্পানির লোকও আসে না। ফলে সহজে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে অনেকেই ওঁদের ফাঁদে পা দেন। তাঁরাই প্রতারিত হয়।

মুর্শিদাবাদের আতর আলি মোল্লা বলছেন, ‘‘এ ভাবেই তো সৌদি আরবে গিয়ে বিপদে পড়েছিলাম। স্রেফ বরাত জোরে সেখান থেকে দেশে ফিরেছি মশাই।’’ এক কাজের নাম করে নিয়ে গিয়ে অন্য কাজ দেওয়া, ভিসাতে গন্ডগোল, দিনের পর দিনে অপেক্ষা করেও কাজ না পাওয়া— অভিযোগের তালিকা বেশ লম্বা। (চলবে)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

India Iraq Hostages Dead Bodies
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE