Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সালারে যুবক খুন, অভিযুক্ত আরএসপি

ধান কিনে মোটরবাইকে চেপে বাড়ি ফেরার পথে বোমা, লাঠি ও ধারাল অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যু হল এক যুবকের। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে সালারের সালু গ্রাম পঞ্চায়েতের গুলহাটিয়া গ্রামে। মৃতের নাম ধলু শেখ (২৫)। বাড়ি ওই এলাকায়। ওই যুবকের ধান কেনাবেচার ব্যবসার পাশাপাশি একটি সাইকেল মেরামতির দোকানও রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৪৮
Share: Save:

ধান কিনে মোটরবাইকে চেপে বাড়ি ফেরার পথে বোমা, লাঠি ও ধারাল অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যু হল এক যুবকের। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে সালারের সালু গ্রাম পঞ্চায়েতের গুলহাটিয়া গ্রামে। মৃতের নাম ধলু শেখ (২৫)। বাড়ি ওই এলাকায়। ওই যুবকের ধান কেনাবেচার ব্যবসার পাশাপাশি একটি সাইকেল মেরামতির দোকানও রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাতে বন্ধু রিমন শেখকে সঙ্গে নিয়ে মোটরবাইকে চেপে পাশের করোন্দি গ্রামে ধান কিনতে গিয়েছিলেন ধলু। ফেরার সময় গুলহাটিয়া গ্রামে ঢোকার মুখে ঝোপের আড়াল থেকে দুষ্কৃতীরা তাঁদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। বোমার আঘাতে জখম হয়ে দু’জনে মাটিতে পড়ে যান। অভিযোগ, সেই অবস্থায় দুষ্কৃতীরা ধলুকে লাঠি ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। বিপদ বুঝে রিমন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে প্রাণে বাঁচে। এ দিকে, ঘটনাস্থল থেকে মেরেকেটে এক কিলোমিটার দূরে পুলিশ ক্যাম্প। বোমা ফাটার শব্দ পেয়ে তাই ঘটনাস্থলে ছুটে যান ওই ক্যাম্পের পুলিশ কর্মীরা। জখম ওই যুবককে উদ্ধার করে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে পৌঁছনোর আগেই রাস্তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের দাদা বুলু শেখের দাবি, ‘‘ভাই তৃণমূলের সমর্থক ছিল। এলাকার আরএসপির সমর্থকরা তাই পরিকল্পনা করে ভাইকে খুন করেছে। আমি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই যুবক এলাকার একজন তৃণমূল সমর্থক ছিল। ওই যুবক গ্রামের ভাল ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। নিজের ব্যবসার কাজেই ব্যস্ত থাকতেন। তাই ঠিক কী কারণে ওই যুবক খুন হলেন তা নিয়েও প্রশ্ন জাগছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। সালু অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতি তথা মৃতের মামা মহম্মদ মুরশালিম বলেন, “বছর খানেক ধরে ভাগ্নের নেতৃত্বে ওই গ্রামে তৃণমূলের সংগঠন মজবুত হচ্ছিল। তাতে আরএসপির কপালে ভাঁজ পড়েছিল। মাঝে মধ্যেই গ্রামে বোমাবাজি করত আরএসপির সমর্থকরা। ভাগ্নে তার প্রতিবাদ করতে গিয়েই আরএসপি সালু অঞ্চলের প্রধান আজিজুল হক ও পঞ্চায়েত সদস্য মীর মহিউদ্দিন নেতৃত্ব দিয়ে আমার ভাগ্নেকে পরিকল্পিতভাবে বোমা মেরে খুন করেছে।”

যদিও ওই ঘটনার সাথে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি উজ্বল মণ্ডল। তিনি বলেন, “ওই যুবক তৃণমূলের একজন সক্রীয় কর্মী ছিলেন। মিটিং-মিছিলে যেতেন ঠিকই, তবে ওই ঘটনার সাথে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।” এ দিকে, আরএসপির মুর্শিদাবাদ জেলার সম্পাদক বিশ্বনাথ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “নিজেরা খুন করে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানো, এতো তৃণমূলের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। রাজ্য জুড়ে এটাই হচ্ছে, আমাদের জেলায় একটু বেশিই হচ্ছে। তৃণমূল সমর্থককে খুন করে জেলায় রাজনীতি করতে হবে সে সময় এখনও আমাদের আসেনি।”

মৃত ওই যুবকের দাদা বুলু শেখ পুলিশের কাছে বারো জনের নামে অভিযোগ করেছেন। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ওই ঘটনার সাথে রাজনীতির যোগ আছে বলে তদন্তে মনে হয়নি। তবে কী কারণে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে সেটাও এখনও স্পষ্ট নয়। আশা করি শীঘ্রই খুনের কিনারা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE