Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আদালতের নির্দেশে পরীক্ষায় বসল ছাত্র

একাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন শুরুর দিনেই বহিষ্কার করেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ ছিল চুরি করেছে সে। তারপর থেকে আর স্কুলে যাওয়া হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার একাদশ শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষা বসল পল রায়। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তাকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৫ ০২:০০
Share: Save:

একাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন শুরুর দিনেই বহিষ্কার করেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ ছিল চুরি করেছে সে। তারপর থেকে আর স্কুলে যাওয়া হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার একাদশ শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষা বসল পল রায়। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তাকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়।

মাজদিয়া রেল বাজার হাই স্কুলের ঘটনা। ২০১৪ সালে ওই স্কুল থেকেই মাধ্যমিক পাশ করেছিল পল। সে সময়ই উপস্থিতির খাতা চুরির করা অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি মাধ্যমিকের আগে পলের উপস্থিতি ছিল নাম মাত্র। প্রধান শিক্ষক রতন মণ্ডল বলেন, “পল মাত্র ছ’দিন উপস্থিত ছিল সে সময়। তারপরই উপস্থিতির খাতা চুরি যায়। প্রথমে সন্দেহ হলেও পরে অন্যান্য ছাত্রদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা নিশ্চিত হই, পলই খাতা চুরি করেছে।”

দশম শ্রেণির ‘খ’ বিভাগের উপস্থিতি খাতাটি চুরি গিয়েছিল। চুরির বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ করা হলেও প্রধান শিক্ষকের দাবি কোনও ছাত্রের নামেই নির্দিষ্ট করে অভিযোগ জানানো হয়নি। অন্যদিকে খাতা হারিয়ে যাওয়ায় কোনও ছাত্রকেই টেস্টে আটকানো হয়নি। ফলে সকলের সঙ্গে পলও পরীক্ষা দেয়।

কিন্তু তাকে যে আর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া হবে না সে বিষয়ে শিক্ষকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন প্রধান শিক্ষক।

তিনি বলেন, “ওকে আর ভর্তি নেওয়া হবে না ঠিক হয়েছিল। কিন্তু কোনও ভাবে পল একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে যায়। প্রথম দিন ক্লাসে ওকে দেখেই আমরা পরিচালন সমিতিতে বিষয়টি তুলি। সিদ্ধান্ত হয় ওকে বহিষ্কার করা হবে।”

একাদশ শ্রেণিতে প্রথম দিনই বহিষ্কৃত হয় পল। তারপর থেকে আর স্কুলে যাওয়া হয়নি। কিন্তু স্কুলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট অবধি ছুটে যান পলের বাবা।

অবশেষে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় পলকে পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। সেই আদেশ স্কুলে এসে পৌঁছতেই পলের বাড়িতে চিঠি পাঠান প্রধান শিক্ষক। বলা হয়, শুক্রবারের পরীক্ষায় হাজির হতে।

রতন মণ্ডল বলেন, “আমরা চাইনি পল আবারও আমাদের স্কুলে পড়ুক। কিন্তু আদালতের নির্দেশ তো অমান্য করার ক্ষমতা নেই। সে আদেশ অনুযায়ী পলকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিয়ে চিঠি পাঠেয়েছি।”

শুক্রবার দুপুর ২টোর পরে শুরু হয় একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা। এ দিন ছিল প্রথম ভাষা বাংলার পরীক্ষা। পল জানিয়েছে, পরীক্ষা খুব একটা ভাল হয়নি তার। তার কথায়, “আসলে পড়াশোনা কিছুই হয়নি তো।”

যদিও আজ অবধি খাতা চুরির কথা স্বীকার করেনি পল। এ দিনও সে জানায়, “আমি চুরি করিনি। শিক্ষকরা বুল বুঝেছিলেন। তবে পরীক্ষা দিতে পেরে আমি খুশি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

student class xi court krishnanagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE