গুড়ের হাটে চলছে বিকিকিনি। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা উপনির্বাচন কারও কাছে সম্মানরক্ষার লড়াই, কারও কাছে নিজেকে যাচাই করে নেওয়ার মঞ্চ। আর যতদিন না পর্যন্ত ভোট পড়ছে ততদিন ভারি কদর সাধারণ মানুষের। তাই এতদিন কেউ ছুটেছেন বেরিয়েছেন খালি পায়ে, কেউ নেমে পড়ছেন চাষের মাঠে, কেউ বা সারাদিন ঘুরে ভাত খাচ্ছেন হতদরিদ্র কোনও পরিবারের দাওয়ায়।
তবে আসল দিকে কি সত্যিই নজর দিলেন কেউ? নিদেন প্রতিশ্রুতিটুকুও প্রশ্ন তুলছেন এলাকার বাসিন্দারাই। মাজদিয়া এলাকায় ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু গুড় বাজারের কথা কি একবারের জন্যও তুলতে পারতেন না প্রার্থীরা!
শাসকদল, বিরোধী দল, প্রবল প্রতিপক্ষ কোনও তরফের প্রার্থীর প্রচারে একবারের জন্যও উঠে আসেনি মাজদিয়া গুড় বাজার সংস্কারের কথা। হতাশ ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিশ্রুতিটুকুও তো দিয়ে গেল না। সুতরাং এরপর যে সত্যি সত্যি কোনও উন্নয়ন হবে এমন আশাটাই বা করব কি করে?
মাজদিয়ার গুড়ের হাট এলাকার বেশ বড় বাজার। শুধু কৃষ্ণগঞ্জ নয় পাশ্ববর্তী হাঁসখালি, চাপড়া বা কোতোয়ালির প্রায় শ’দেড়েক গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে নির্ভর করেন ওই বাজারের উপর। প্রতি বছর শীতের দিনে বাঙালির পাতে যে পরিমাণ নলেন গুড়েরপ্রয়োজন হয়, তার একটা বড় অংশ জোগান দেয় মাজদিয়া গুড়ের হাট। শুধু কলকাতা বা অন্য জেলায় নয়। গাড়ি বোঝাই হয়ে এই গুড় পৌঁছে যায় মুম্বই, কানপুর কিংবা দিল্লির বাজারেও। ব্যবসায়ীরা নিজেরাই বলছেন গুড় মরসুমে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হয় এই বাজারে।
অথচ বিজ্ঞানসম্মত প্যাকেজিং-এর অভাবে প্রতিবছর ব্যবসা মার খাচ্ছে॥ কাছ থেকে দাদন নিতে বাধ্য হন। দাম যাই মিলুক না কেন সেই পাইকারের কাছেই তারা গুড় বিক্রি করতে বাধ্য হন। চাষিদের দাবি, সরকারের তরফে যদি এই গুড় শিল্পের জন্য ঋণ দানের ব্যবস্থা থাকত তাহলে তাদের বছরের পর বছর এভাবে দাদনের ফাঁসে পড়তে হত না।
নভেম্বর থেকে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ এই শিল্প চলে। তাই সারা বছর চাষিদের অন্য জীবিকার উপরে নির্ভর করতে হয়। ফলে তাঁরা এমন কোনও টাকা সঞ্চয় করে রাখতে পারেন না যাতে মরশুমের সময় সেই টাকা পুঁজি হিসাবে কাজে লাগাতে পারবেন। বাধ্য হয়েই তারা তাই প্রতি বছর দাদন নেন। এছাড়াও সরকারি উদাসীনতার কারণে দিন দিন গাছি বা শিউলির সংখ্যা কমছে। হারুগোপালবাবুর কথায়, “এখনকার ছেলেরা এই পেশায় আসবেই বা কেন? বছরের পর বছর এই কাজ করলে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। অথচ এদের জন্য সরকারি ভাবে কোনও চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। দুর্ঘটনা যেখানে নিত্য সঙ্গী সেখানে মেলে না কোনও ক্ষতিপূরণ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy