Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নিখোঁজ ছাত্রীর খোঁজে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ

দু’বছর আগে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল নদিয়ার নাকাশিপাড়ার এক নাবালিকা। প্রথমে নিখোঁজ ডায়েরি এবং পরে অপহরণের অভিযোগ করে ছাত্রীটির পরিবার। সেই মামলার পুলিশি-তদন্তে সন্তুষ্ট না হয়ে শুক্রবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এ দিন বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সহিদুল্লা মুন্সির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, তদন্তে ‘অস্পষ্টতা রয়েছে এবং পুলিশ কিছু করতে পারেনি’।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৫ ০১:৫৬
Share: Save:

দু’বছর আগে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল নদিয়ার নাকাশিপাড়ার এক নাবালিকা। প্রথমে নিখোঁজ ডায়েরি এবং পরে অপহরণের অভিযোগ করে ছাত্রীটির পরিবার। সেই মামলার পুলিশি-তদন্তে সন্তুষ্ট না হয়ে শুক্রবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এ দিন বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সহিদুল্লা মুন্সির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, তদন্তে ‘অস্পষ্টতা রয়েছে এবং পুলিশ কিছু করতে পারেনি’।

গোয়ালচাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা ছাত্রীটি নিখোঁজ হয় ২০১৩-র ২১ মার্চ। ২৭ মার্চ নাকাশিপাড়া থানায় নিখোঁজ-ডায়েরি করে তাঁর পরিবার। কিন্তু তাঁদের সন্দেহ ছিল গ্রামেরই যুবক মুদাই শেখের উপরে। ছাত্রীর মা জানিয়েছেন, নিখোঁজ হওয়ার আগে এক বার মুদাই তাঁর মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছিল। পরে অবশ্য ফিরিয়ে দেয়। মায়ের দাবি, মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁরা খবর পেয়েছিলেন, মুদাই মেয়েকে দিল্লিতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখেছে। তার ভিত্তিতেই ২০১৩-র ৩ এপ্রিল পুলিশের কাছে মুদাই-সহ তাঁর পরিবারের চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। মুদাই ও তার ভাই মুজাক্কেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে আগাম জামিন পেয়ে যান মুদাইয়ের বাবা-মা। জামিনে মুক্ত হন মুজাক্কেরও। শুধু মুদাই তিন মাস জেল খাটেন।

মেয়েটির মায়ের অভিযোগ, দিল্লি থেকে তাঁদের মেয়েকে উদ্ধার করতে নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ টাকা চেয়েছিল তাঁদের কাছে। তাঁরা রাজিও ছিলেন। কিন্তু মুদাইয়ের পরিবার আরও বেশি টাকা দেওয়ায় পুলিশ আর তদন্তে এগোয়নি। ওই পরিবার শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বলে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল বলেও তাঁর অভিযোগ। সম্প্রতি তাঁরা তাই হাইকোর্টে মামলা করেন।

নাকাশিপাড়া থানা টাকা নেওয়ার অভিযোগ মানেনি। মামলার তদন্ত-ভার ২০১৪-র অক্টোবর তাদের হাত থেকে জেলা পুলিশের ‘অ্যান্টি হিউম্যান ট্র্যাফিকিং’ (এএইচটি) শাখার হাতে তুলে দেওয়া হয়। জেলা পুলিশ জানাচ্ছে, এএইচটি-র সদস্যেরা দিল্লিতেও মেয়েটির খোঁজ পাননি। মহিলা কমিশনের অবশ্য দাবি, এ নিয়ে জেলার তৎকালীন এসপি-র কাছে দু’বার রিপোর্ট তলব করেও পাননি তাঁরা। জেলার বর্তমান পুলিশ সুুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “আদালতের রায় হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করব না।”

সদ্যবিবাহিত মুদাইকে এ দিন তাঁর গ্রামের বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর বাবা আক্কাশ শেখের বক্তব্য, “আমার ছেলে নির্দোষ। মেয়েটি তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সরিফুল হক মণ্ডল সব জানেন।” সে কথা স্বীকার করে সরিফুল বলেন, “মেয়েটির এক আত্মীয় বিষয়টি বিশদে জানেন, এটা আমি জানি।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, “অভিযুক্ত পরিবারটি আমাদের দলের ঘনিষ্ঠ বলে ঘটনার তদন্ত ধামাচাপা পড়েছিল, এটা ভাবা উচিত হবে না।”

নাবালিকার বৃদ্ধ বাবা অবশ্য বলছেন, “মুদাইয়ের পরিবার দোষ ঢাকতে আমাদের নামে যা ইচ্ছে তাই বলছে। শুধু চাই, সিবিআই শুধু মেয়েকে আমার বুকে ফিরিয়ে দিক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

student missing gaurishankar datta cbi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE