Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রেক্ষিত সংখ্যালঘু আবেগ, বৈঠক রেজ্জাক-হুমায়ুনের

সংখ্যালঘু-ওবিসি শিক্ষক-ছাত্রদের সংগঠন থেকে শুরু করে একাধিক ধর্মীয় নেতা যেখানে তৃণমূল সরকারের সমালোচনায় সরব, সেখানে পুর-ভোটকে সামনে রেখে বৈঠক করলেন দুই দল থেকে বহিষ্কৃত দুই সংখ্যালঘু নেতা। আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা এবং হুমায়ুন কবীর। শুক্রবার সকালে মুর্শিদাবাদের শক্তিপুরে তাঁরই বাড়িতে ওই বৈঠকের পরে হুমায়ুন জানান, রেজ্জাকের ‘ভারতীয় ন্যায় বিচার পার্টি’ পুর-ভোটে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও বেলডাঙায় সব আসনেই প্রার্থী দেবে।

জোট সন্ধানী। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

জোট সন্ধানী। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রেজিনগর ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৫ ০৩:১৮
Share: Save:

সংখ্যালঘু-ওবিসি শিক্ষক-ছাত্রদের সংগঠন থেকে শুরু করে একাধিক ধর্মীয় নেতা যেখানে তৃণমূল সরকারের সমালোচনায় সরব, সেখানে পুর-ভোটকে সামনে রেখে বৈঠক করলেন দুই দল থেকে বহিষ্কৃত দুই সংখ্যালঘু নেতা। আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা এবং হুমায়ুন কবীর। শুক্রবার সকালে মুর্শিদাবাদের শক্তিপুরে তাঁরই বাড়িতে ওই বৈঠকের পরে হুমায়ুন জানান, রেজ্জাকের ‘ভারতীয় ন্যায় বিচার পার্টি’ পুর-ভোটে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও বেলডাঙায় সব আসনেই প্রার্থী দেবে। সে ব্যাপারে হুমায়ুনকে সাহায্য করতে বলেছেন রেজ্জাক।

হুমায়ুন বলেন, “রেজ্জাক সাহেবের সঙ্গে যা কথা হল, তা মুকুল রায়কে জানাব। তার পরে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেব।” রেজ্জাকের দাবি, “হুমায়ুন আমাকে কথা দিয়েছেন যে, পুরভোটে সব সাহায্য করবেন। প্রয়োজনে প্রচারেও আসবেন।”

দিন কয়েক আগে ফুরফুরা শরিফে গিয়ে সংখ্যালঘু উন্নয়নের প্রশ্নে মমতা সরকারের উদ্যোগকে ‘কুমিরের কান্না’ বলে কটাক্ষ করে আসেন তৃণমূলের সদ্য প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। তার পরেই ২০১১-য় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতায় আনার জন্য সংখ্যালঘুরা ঢেলে ভোট দিলেও, পরের পৌনে চার বছরে তাঁদের উন্নয়নে তৃণমূল-সরকার কিছু করেনিএই অভিযোগে ফুরফুরা শরিফের ত্বহা সিদ্দিকী, কলকাতার নাখোদা মসজিদের ইমাম মহম্মদ সফিক কাসমিরা মুখ খুলেছেন। বৃহস্পতিবার একই অভিযোগে শাসক দলের ডাকা সাংবাদিক বৈঠকে রীতিমতো বিক্ষোভ দেখায় সংখ্যালঘু-ওবিসি শিক্ষক-ছাত্রদের সংগঠন ‘ঐক্য সংগ্রাম মঞ্চ’। সেই প্রেক্ষিতেই মুকুল-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হুমায়ুনের সঙ্গে রেজ্জাক মোল্লার এ দিনের বৈঠকের মধ্যে ‘তাৎপর্য’ খুঁজে পাচ্ছেন রাজ্য রাজনীতির নিয়মিত পর্যবেক্ষকেরা।

‘তাৎপর্য’ খুঁজে পাওয়ার আর এক কারণমুকুল রায় রেজ্জাক মোল্লার সঙ্গে বৈঠকে বসতে চেয়ে তাঁকে ফোন করেছিলেন। রেজ্জাকের বক্তব্য ছিল, “কেউ যদি আমার সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান বসব। শোনার মতো বক্তব্য থাকলে শুনব। সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো কিছু থাকলে, সিদ্ধান্ত নেব।” কিন্তু রেজ্জাকের ওই মন্তব্যের পরে তাঁর ঘনিষ্ঠদের একাংশ ক্ষোভ চেপে রাখেননি। সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত, রেজ্জাকের সঙ্গী নেতা প্রসেনজিৎ বসুর অনুরোধ ছিল মমতার সঙ্গে সাময়িক দূরত্ব বেড়েছে বলেই আইনের চোখে মুকুল রায়কে সারদা-কাণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাচ্ছে না। ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন ওঠা মুকুলের সঙ্গে পুর-ভোটের আগে যোগাযোগ না করতে রেজ্জাককে অনুরোধ করেন প্রসেনজিৎ। তার পরেও রেজ্জাক হুমায়ুনের সঙ্গে বৈঠক করায়, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমানসংখ্যালঘুদের ‘বঞ্চনা’র অভিযোগকে সামনে রেখে রেজ্জাক তাঁর দলকে আড়েবহরে বাড়াতে চাইছেন। কিন্তু সে অর্থে তাঁর দলে পরিচিত নেতা বলতে তিনি নিজেই। জঙ্গিপুর, বেলডাঙা পুরসভার সব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গেলে, জেলা রাজনীতিতে পোড় খাওয়া কাউকে তাঁর দরকার। হুমায়ুন তেমনই এক জন। তার উপরে দল থেকে ছ’বছরের জন্য বহিষ্কৃত হলেও মুকুলের সঙ্গে হুমায়ুনের সম্পর্ক নষ্ট হয়নি। জেলা রাজনীতিতে নিজের প্রাসঙ্গিকতা বোঝাতে হুমায়ুনেরও সামনে ‘চ্যালেঞ্জ’ দরকার। সে অর্থে, দু’তরফেই বোঝাপড়ার ক্ষেত্র তৈরি রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

abdur rezzak molla humayun kabir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE