কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের সামনে পুরসভার নির্মাণ। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
শহরের ব্যস্ত এলাকায় ফুটপাথ দখল করে দোকান তৈরির ব্যাপারে কৃষ্ণনগর পুরসভা কর্তৃপক্ষ কী সিদ্ধান্ত নিলেন তা তাঁকে তিন সপ্তাহের মধ্যে জানাতে বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুল, উইমেন্স ট্রেনিং স্কুলের সামনে পুরসভাই ফুটপাথ দখল করে দোকান তৈরি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তন্ময় দত্ত নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা সম্প্রতি তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার চেয়ারম্যান অসীম সাহার কাছে অভিযোগ করেন, অবৈধ ভাবে ফুটপাথ দখল করে দোকান তৈরি হচ্ছে। প্রশাসন, পুলিশ বা পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগ কারও অনুমতিই নেওয়া হয়নি।
তন্ময়বাবু পুরসভার চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেন, যে জায়গায় ফুটপাথের একাংশ দখল করে নির্মাণ চলছে সেই জায়গা শহরের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত এলাকা। তার লাগোয়া জায়গায় জেলা পুলিশ লাইন। ফুটপাথ দখল হয়ে যাওয়ায় স্কুল, কলেজ পড়ুয়ারা তো বটেই, পথচারীরাও অসুবিধায় পড়ছেন। ওই ব্যক্তির অভিযোগ, তাঁর লিখিত আবেদন ও অভিযোগ পত্রের কোনও জবাব দেননি পুরসভার চেয়ারম্যান।
জবাব না পেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন তন্ময়বাবু। এ দিন সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সহিদুল্লা মুন্সির আদালতে। তন্ময়বাবুর আইনজীবী সমিত সান্যাল আদালতে জানান, পশ্চিমবঙ্গ পুর আইন অনুযায়ী, ফুটপাথ দখল করা বেআইনি। কোনও পুর এলাকায় ফুটপাথ দখল হয়ে থাকলে, সংশ্লিষ্ট পুর কর্তৃপক্ষকে দখলদার উচ্ছেদ করে ফুটপাথকে তার আগের চেহারায় ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও আইনে বলা হয়েছে।
ওই আইনজীবী আরও জানান, কৃষ্ণনগর পুরসভার মতো প্রাচীন পুর এলাকায় একাধিক ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেই সব প্রতিষ্ঠানের সামনের ফুটপাথ দখল করে দোকান তৈরি হলে প্রতিষ্ঠানগুলির পক্ষেও দুর্ভাগ্যজনক। কেবল তাই নয়, শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ফুটপাথ দখল হলে সাধারণ পথচারীদের যান চলাচলের রাস্তায় হাঁটতে হবে। তাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। সেই কারণেও ফুটপাথ দখল বেআইনি।
এ দিন মামলার শুনানিতে সরকার পক্ষের কোনও আইনজীবী হাজির ছিলেন না।
সমিতবাবু জানান, সওয়াল শেষ হলে বিচারপতি নির্দেশ দেন, তন্ময়বাবুর আবেদনের বিষয় নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তা তিন সপ্তাহের মধ্যে জানাতে হবে কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যানকে।
পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের অসীম সাহা বলেন, “তন্ময়বাবুর চিঠি আমরা পেয়েছিলাম। তাঁকে ডাকার জন্য একটি চিঠিও তৈরি করা হয়েছিল।কিন্তু সেই চিঠি পাঠানোর আগেই তিনি আদালতে চলে যান।” অসীমবাবুর সংযোজন, “ওখানে ঝুপড়ি দোকান ছিল। শহরের সৌন্দর্য বাড়াতে সেগুলি পাকা করা হচ্ছে। তার ফলে জায়গাও অনেক কম লাগছে। দোকানের মালিকদের সেখানে পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে। বাকিটা যা বলার আদালতকেই বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy