Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ফের ইছামতীর কচুরিপানা তোলা শুরু

ফের এক বার বনগাঁ শহরের ইছামতী নদী কচুরিপানামুক্ত করার কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। এর ফলে, নদীপাড়ের বাসিন্দাদের অনেকেই খুশি। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি যথারীতি ফের পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবি তুলেছেন। পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য এখনই অর্থ বরাদ্দ হয়নি বলে সেচ দফতর জানিয়েছে। সম্প্রতি বনগাঁ স্টেডিয়ামে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে এসে মুখ্যমন্ত্রী মতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইছামতী সংস্কারের জন্য ত্রিশ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেছিলেন।

চলছে কচুরিপানা সাফাইয়ের কাজ। —নিজস্ব চিত্র।

চলছে কচুরিপানা সাফাইয়ের কাজ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৫ ০০:৪৬
Share: Save:

ফের এক বার বনগাঁ শহরের ইছামতী নদী কচুরিপানামুক্ত করার কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। এর ফলে, নদীপাড়ের বাসিন্দাদের অনেকেই খুশি। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি যথারীতি ফের পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবি তুলেছেন। পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য এখনই অর্থ বরাদ্দ হয়নি বলে সেচ দফতর জানিয়েছে।

সম্প্রতি বনগাঁ স্টেডিয়ামে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে এসে মুখ্যমন্ত্রী মতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইছামতী সংস্কারের জন্য ত্রিশ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেছিলেন। বনগাঁ লোকসভার উপ-নির্বাচনের আগে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বনগাঁয় এসে ইছামতী থেকে কচুরিপানা তোলার কাজের সূচনা করে গিয়েছিলেন। কয়েক মাস আগে বনগাঁ পুরসভার পক্ষ থেকে কচুরিপানা তোলার কাজের আংশিক সূচনা হয়েছিল। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না।

এ বার প্রথম পর্যায়ে বনগাঁ পুর এলাকাঘেঁষা ৭.২ কিলোমিটার নদীপথ থেকে কচুরিপানা তোলা হচ্ছে। ওই কাজের জন্য ৩৪ লক্ষ টাকা খরচ ধরা হয়েছে বলে সেচ দফতরের বিদ্যাধরী ড্রেনেজ ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার সৌমেন মিশ্র বলেন, “দিন পনেরোর মধ্যে শহর এলাকায় নদী কচুরিপানামুক্ত হয়ে যাবে। এর পরে গোটা নদী থেকেই পর্যায়ক্রমে কচুরিপানা তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।” ড্রেজিংয়ের বিষয়টি সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক, তৃণমূল নেতা গোপাল শেঠ।

বুধবার সকালে নদীতে গিয়ে দেখা গেল, কচুরিপানা তোলার কাজ চলছে। ইতিমধ্যে বনগাঁ থানার ঘাটের কাছে সেই কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় তিন দিনের বাছারি-বাইচ প্রতিযোগিতাও হয়ে গেল। বহু দিন পরে ইছামতীতে জল দেখতে পাওয়ায় খুশি নদীপাড়ের বাসিন্দাদের একাংশ। কেননা, কয়েক বছর ধরেই মহকুমার অন্য অংশের মতোই শহরেও ইছামতী কচুরিপানায় মুখ ঢেকেছিল। বাড়ে মশার উপদ্রব। নদীতে স্নান বা মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। এ বার কচুরিপানামুক্ত হওয়ায় সে সব সমস্যা মিটবে বলে তাঁদের আশা।

তবে, কেউ কেউ মনে করছেন, এ ভাবে নদী কচুরিপানামুক্ত করলেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না। তাঁদের মতে, অতীতেও নদী থেকে কচুরিপানা তোলা হয়েছিল। কিন্তু ফের নদী কচুরিপানায় মুখ ঢাকে। ফলে, এই দফাতেও কয়েক মাস পরে ফের নদীতে কচুরিপানা জমার সম্ভাবনা থাকছেই। তা ছাড়া, কচুরিপানা তুলে নদীর দু’পাড়ে জমা করে রাখা হচ্ছে। তা দূরে সরানো না হলে বর্ষার সময় কচুরিপানা ফের নদীতে চলে যেতে পারে।

একই রকম আশঙ্কার কথা বলছে বিরোধীরাও। বিজেপি নেতা কেডি বিশ্বাসের কথায়, ‘‘নদী সংস্কারে কোনও দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা নেই সরকারের। কচুরিপানা তুললেই দায়িত্ব শেষ হয় না। দরকার পূর্ণাঙ্গ সংস্কার।” এ জন্য, রাজ্যের সঙ্গে তিনিও যৌথ ভাবে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন কেডি। কংগ্রেস নেতা কৃষ্ণপদ চন্দ বলেন, “গাছের গোড়ায় জল না দিয়ে মাথায় জল দিয়ে গাছ বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে। ইছামতীর উৎসমুখ সংস্কার না করে এখানে শুধু কচুরিপানা তুলে কোনও লাভ নেই। টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছু হচ্ছে না।” এ সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন শাসক দলের নেতারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ichamati river bangaon river reform
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE