এক ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার মালিকের বাড়ির সামনে ধর্নায় বসলেন এক মহিলা-সহ জনা কয়েক এজেন্ট ও আমানতকারী। অর্থলগ্নি সংস্থার ওই মালিকের নাম সুদীপ্ত নাথ। আমানতকারীদের বাড়ি নদিয়ার ধুবুলিয়ায়। সোমবার রাত থেকে ধর্নায় বসেছেন তিনি।
ধুবুলিয়া ও রঘুনাথগঞ্জ থানায় সমস্ত ঘটনা জানিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে এসেই এই ধর্না শুরু করেন তাঁরা। মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ বাড়ির সামনে এই ধর্না দেখতে ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দারাও। অস্বস্তিতে পড়ে নগদে ২.৭৫ লক্ষ টাকা এক ব্যক্তি মারফত ধর্নারত আমানতকারীদের কাছে পৌঁছে দেন সুদীপ্তবাবু।
এক আমানতকারী মলয় সাহা জানান, পাব ৩৫ লক্ষ, দিলেন সামান্য। সব টাকা ফেরত না পেলে আমরা সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হব। কারণ দেশের কয়েক জন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে সংস্থা মালিক তার ছবি ছাপিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে টাকা তুলেছেন।”
আমানতকারীদের অভিযোগ, ২০১২ সালে ধুবুলিয়াতে কলকাতার এক চিত্রাভিনেত্রীকে দিয়ে ঘটা করে উদ্বোধন করা হয় সংস্থার। তারপর ৩৮ জন এজেন্ট মারফত ধুবুলিয়ার কয়েকশো আমানতকারীর কাছ থেকে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা আদায়ের পর মাস ছয়েকের মধ্যেই ব্যবসা গুটিয়ে ফেলেন ওই সংস্থা। সেই থেকে এ পর্যন্ত ওই সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত নাথের আর দেখা মেলেনি।
আমানতকারীদের এক জন অচিন্ত্য দাস বিশ্বাস বলেন, “অনেক ঘুরিয়ে একবার দু’লাখের একটা চেক দিয়েছিলেন সুদীপ্তবাবু। কিন্তু সে চেক পরে বাউন্স করে। এর পর নোটিশ পাঠানো হলেও কোনও আমানতকারী টাকা ফেরত পাননি।”
শুধু তাই নয় আমানতকারী ও এজেন্টরা সুদীপ্তবাবুর বিরুদ্ধে ভয় দেখানোর অভিযোগও এনেছেন।
অন্য এক এজেন্ট প্রবীর দাস বলেন, “আমরা আমানতকারীদের মারের ভয়ে এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছি। দু’একবার রঘুনাথগঞ্জে এসেছিলাম বকেয়া টাকার তাগাদায়। তখন সুদীপ্তবাবু আমাদের হুমকি দেন রঘুনাথগঞ্জে এলে লরির তলায় পিষে দেওয়া হবে বলে। তাই বাধ্য হয়ে সোমবার ধুবুলিয়া এবং রঘুনাথগঞ্জ থানায় জানিয়ে এখানে চলে এসেছি কয়েক জনকে নিয়ে।” প্রবীরবাবুর অভিযোগ দুই থানাতেই সাধারণ ডায়েরি করে নিয়েছে পুলিশ, এফআইআর নেয়নি।
অভিযোগ ২০১২ সালে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যাক্তির সঙ্গে ছবি দেখিয়ে এবং বিভিন্ন সম্পত্তির কথা বলে মানুষকে ভুল বোঝান সুদীপ্তবাবু। আমানতকারী অর্পিতা সাহা পাল বলেন, “ধুবুলিয়ায় শাখা খোলার সময় ওই অর্থলগ্নি সংস্থা যে প্রচার পত্র আমানতকারী ও এজেন্টদের হাতে দেওয়া হয় তাতে সুদীপ্ত নাথ ও তাঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে রাজ্যের একাধিক রাজনৈতিক নেতা, সাংসদ-সহ অনেক বিশিষ্টদের ছবি ছাপানো হয়। আমানতকারীদের দেখানো হয় সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে জঙ্গিপুরের বিভিন্ন দলের একাধিক নেতা, বিধায়ক ও পুলিশকর্তাদের ছবি। স্বভাবতই আমানতকারীরা ভরসা করেছিলেন।”
এ দিন সুদীপ্তবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সোজাসুজি বলেন, “ধুবুলিয়ার আমানতকারীরা কয়েক লক্ষ টাকা পাবেন। কিছু টাকা দিয়েছি। বাকিটা দিতে পারিনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy