Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শান্তিপুর: আমাদের চিঠি

আজও উপেক্ষিত রয়েছে ইতিহাস

শান্তিপুর সেনপাড়ায় ত্রিশিব মন্দির। —নিজস্ব চিত্র।

শান্তিপুর সেনপাড়ায় ত্রিশিব মন্দির। —নিজস্ব চিত্র।

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৯
Share: Save:

আজও উপেক্ষিত রয়েছে ইতিহাস

আনন্দবাজারে প্রকাশিত ‘আমার শহর-শান্তিপুর’ ২০-০১-২০১৫ প্রতিবেদন পড়ে ভাল লাগল। কিন্তু প্রতিবেদনে সুরধনী গঙ্গার কথা বলা হলেও হরিপুরের নীলকুঠির কথা উল্লেখ করা হয়নি। সূত্রাগড় সেনপাড়ার ত্রিশিব মন্দির, বুড়োশিব মন্দির, কাশীনাথ শিব মন্দির, অপূর্ব কারুকাজ মণ্ডিত চড়কতলা শিবমন্দির-সহ আরও অনেক মন্দিরের কথা অনুচ্চারিত থেকে গিয়েছে। আমাদের ইতিহাসবিমুখতার জন্য একটি জনপদের ইতিহাস কী ভাবে বিশ্বের কাছে অনালোচিত থেকে যায় তার সেরা দৃষ্টান্ত হল শান্তিপুর। চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো দেখতে হাজার হাজার দর্শনার্থী আসেন। শান্তিপুরের রাসের কথা কেউ জানেন না। পর্যটনের প্রচুর সম্ভাবনা থাকলেও শহরে কোথাও সেই অর্থে কোনও ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। তাহলে স্থানীয় অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াত। সূত্রাগড়ের সেনপাড়ায় যে ত্রিশিব মন্দির আছে তার দু’টি মন্দির ১৭৪০ থেকে ১৭৫৪ সালের মধ্যে গড়ে উঠেছে। দুটি মন্দিরই জরাজীর্ণ। স্থানীয় প্রশাসন মন্দির দু’টির সংস্কারের ব্যবস্থা করলে ভাল হত।

অমিতাভ মিত্র, যদুনাথ কাঁসারি লেন

শহরের মধ্যে বাস ঢোকে না

শান্তিপুর শহরের মধ্যে দিয়ে না গিয়ে বেশিরভাগ বাস বাইপাস ধরে বেরিয়ে যায়। সেই নিয়ে একটি মানবাধিকার সংস্থার পক্ষে শহরের বিভিন্ন দফতরে একাধিবার আবেদন জানিয়ে ও কোনও লাভ হয়নি। অবশেষে গণ স্বাক্ষর সংগ্রহ করে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হই। অবশেষে পরিবহণ দফতর বাইপাসের দুই প্রান্তে শহরের মধ্যে যাতে সব বাস ঢোকে সেই নির্দেশ দিয়ে গোবিন্দপুর ও ঘোড়ালিয়ায় দুটি নির্দেশিকা বোর্ড লাগায়। কিন্তু এক সপ্তাহ পেরোতে না পেরোতে সেই বোর্ড হাওয়া হয়ে গিয়েছে। কিছু বাস শহরের মধ্যে দিয়ে গেলেও বেশির ভাগ বাসই বাইপাস ধরে বেরিয়ে যায়। ফলে শান্তিপুরের বাসিন্দাদের দূরের কোনও গন্তব্যে যেতে হলে প্রায় পাঁচ-ছয় কিলোমিটার দূরে বাইপাসের দুই মুখে যেতে হয়। এখানেই সমস্যার শেষ নয়। রাতবিরেতে ওই বাইপাসে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। তখন ছিনতাইবাজদের হাত এড়িয়ে বাড়ি ফেরাটাই দায় হয়ে পড়ে।

স্নেহাশিস মুখোপাধ্যায়, হাটখোলাপাড়া

মাঝ রাস্তাতেই নামিয়ে দেয় বাস

এক সময় শহরের মধ্যে দিয়ে যখন জাতীয় সড়ক ছিল তখন চারটি জায়গায় বাস দাঁড়াত। তারপর শান্তিপুরে শহরের পাশ দিয়ে বাইপাস রাস্তা চালু হল সমস্ত বেসরকারি দূরপাল্লার বাস শহরে না ঢুকে বাইপাস দিয়ে বেরিয়ে যেতে থাকে। কলকাতার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কারণে সপ্তাহ শেষে বাড়ি ফিরি। তাই ওই বাসে করে বাড়ি ফিরতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। ট্রেন না পেয়ে অনেক সময় বাসেই বাড়ি ফিরতে হয়। ওঠার সময় শান্তিপুরে নামানোর কথা বলা হলেও শান্তিপুর ঢোকার মুখে জানিয়ে দেওয়া হয় হয় ঘোড়ালিয়ায় বা গোবিন্দপুরে নেমে যেতে। তার ফলে খুব সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের। বেশি টাকা দিয়ে রিকশায় চেপে বাড়ি ফিরতে হয়। একাধিকবার প্রতিবাদ করেছি। কোনও লাভ হয়নি। কিছুদিন আগে আনন্দবাজারে এই সমস্যার উপরে প্রতিবেদন বেরিয়ে ছিল। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতিটা বদলায়নি। প্রায় তিন লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস করেন শান্তিপুরে। এতদিন তাঁরা যে পরিবহণ ব্যবস্থার সঙ্গে অভ্যস্থ ছিল সেটি হঠাত্‌ বন্ধ করে দেওয়া হল কেন? তাছাড়াও শান্তিপুর তাঁতশিল্পের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হওয়ায় নিত্যদিন প্রচুর ব্যবসায়ী যাতায়াত করেন। শহরের মধ্যে দিয়ে বাস চললে তাঁদেরও হয়রানি ও বিপদের ঝুঁকিও কমে।

অদ্রীপ গোস্বামী, শান্তিপুর

নিকাশি সমস্যার সমাধান কবে?

২০ জানুয়ারি প্রকাশিত ‘আমার শহর-শান্তিপুর’ প্রতিবেদনের জন্য ধন্যবাদ। শান্তিপুর শহরের সর্বত্র প্রচুর মন্দির মসজিদ ছড়িয়ে। প্রচুর দর্শনীয় স্থানও রয়েছে। তা সত্ত্বেও সেই অর্থে কোনও পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। বিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে শহরের বিভিন্ন এলাকায় যেতে হয়। লক্ষ করেছি, দশ পনেরো বছর আগেও যেখানে পুকুর ছিল,প্রোমোটারদের হাতে সেখানে গড়ে উঠছে বহুতল। শহরের সবুজ বাঁচানোর জন্যও কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ে না। এলাকার উন্নয়ন হলেও নিকাশি ব্যবস্থা সেই তিমিরেই। প্রাচীন পুরসভাগুলির মধ্যে একটি হল শান্তিপুর পুরসভা। অথচ আজও পযর্ন্ত আধুনিক নিকাশি ব্যবস্থা না গড়ে ওঠায় প্রতি বছর বর্ষাকালে বাসিন্দাদের খুব সমস্যায় পড়তে হয়। সামনেই পুরসভার ভোট। হয়তো সব রাজনৈতিক দলই নানা প্রতিশ্রুতির পসরা নিয়ে নাগরিক দরবারে হাজির হবেন। কিন্তু শহরের বিজ্ঞানসম্মত নিকাশি ব্যবস্থা কেউ নিশ্চিত করতে পারবেন কি?

মনোজ প্রামাণিক, শান্তিপুর

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

amar shohor shantipur letter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE