বাড়ির সামনে নেশাগ্রস্ত দুই তৃণমূল কর্মীর অশ্লীল কথাবার্তার প্রতিবাদ করে প্রহৃত হলেন তৃণমূলের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যা। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর স্বামী সুদর্শন সিংহ প্রহৃত হন বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টা নাগাদ দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার আজমতপুর অঞ্চলের নয়াবাজার এলাকার ঘটনা। সেই সময় ওই পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর হামলায় এক তৃণমূল কর্মী জখম হন বলে পাল্টা অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে গভীর রাতে ওই মহিলার বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধর ও বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে একদল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে। হামলাকারীরা এলাকার তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর মন্ডলের অনুগামী বলে ওই মহিলার দাবি। জখম অবস্থায় ওই তৃণমূল কর্মী পবন সাহাকে গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
ওই তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগে রাতেই পুলিশ ওই পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী সুদর্শনবাবুকে গ্রেফতার করে। তবে মারধর ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তপন থানার পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে থানা থেকে বের করে দেয় বলে ওই পঞ্চায়েত সদস্যা সান্ত্বনা দেবী অভিযোগ করেন। এদিন বিকেলে বালুরঘাটে এসে জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন তিনি। এলাকার ৮ জন তৃণমূল কর্মী সমর্থকের বিরুদ্ধে মারধর ও বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ করেছেন সান্ত্বনা দেবী। তিনি পুলিশ সুপারকে বলেছেন, “বাড়ির দরজার পাশে ওদের উচ্চস্বরে অশ্লীল কথাবার্তায় পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের অস্বস্তি দেখে প্রতিবাদ করলে আমাকে ওরা ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। স্বামী প্রতিবাদ করতে এলে তার উপরও হামলা হয়।”
আজমতপুর অঞ্চলের তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য সান্ত্বনা দেবীর অভিযোগ, বাড়ির টিনের দরজা ও টিনের দেয়াল ভাঙচুরের সময় ভাঙা টিন দিয়েই হামলাকারী পবনের হাত কেটে যায়। এর পরেই ফোন করে তারা আরও ৩০-৪০ জনকে ডেকে নিয়ে বাড়িতে হামলা চালায়। থানায় ফোন করলে পুলিশ রওনা দিয়েছে বলে জানানো হয়। কিন্তু ঘটনার পর প্রায় দেড় ঘন্টা বাদে পুলিশ গিয়ে তাঁর স্বামীকে ধরে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
এ দিন বালুরঘাট আদালতে সুদর্শনবাবুর ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে। পরে পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “মহিলার অভিযোগ শুনেছি। তাঁকে তপন থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে বলেছি। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও তপন থানা কর্তৃপক্ষের দাবি, মহিলার তরফে কেউ থানায় অভিযোগ করতে যাননি। এদিন কলকাতা থেকে টেলিফোনে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা আইন পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্র বলেন, “ওই মহিলা রাতে আমাকে ফোন করেছিলেন। স্থানীয় নেতৃত্বকে বিষয়টি দেখতে বলেছি।” তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, পারিবারিক বিবাদেই গোটা ঘটনা ঘটেছে।
ব্লক সাধারণ সম্পাদক শঙ্করবাবু অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁর দাবি, প্রতিবেশী পবনদের সঙ্গে ওই মহিলাদের পুরনো বিবাদ রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy