বুধবার দেওয়া হয়েছে স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষকদের স্থায়ী চাকরির নিয়োগপত্র, আর শুক্রবার শুরু হল পাট্টা দেওয়ার প্রক্রিয়া।
গোর্খাল্যান্ডকে সরিয়ে রেখে পাহাড়বাসীদের অন্যান্য সব দাবি যত দ্রুত সম্ভব পূরণ করতে আরও একধাপ এগোল বিনয় তামাং শিবির। পাট্টা দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পাহাড়ে জেলা স্তরের বিশেষ কমিটি তৈরি করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সেই কমিটির বৈঠক হয় দার্জিলিঙে। সেই বৈঠকেই দার্জিলিং জেলায় বন বিভাগের জমিতে থাকা ২২০টি পরিবারকে পাট্টা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই জানিয়েছেন কমিটির অন্যতম সদস্য তথা জিটিএর প্রধান উপদেষ্টা অমর সিংহ রাই। তিনি আরও জানান, ১০ দিনের মধ্যেই পরিবারগুলির হাতে পাট্টার কাগজ তুলে দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২০টির মধ্যে মিরিকের ১৪, কার্শিয়াংয়ের ৩৪ এবং দার্জিলিং মহকুমার ১৩৪টি পরিবার আছে। আরও ৩৮টি পরিবারের পাট্টা অনুমোদিত হলেও তাদের পরবর্তী পর্যায়ে সেগুলি প্রদান করা হবে।
এ দিনের বৈঠকে দার্জিলিঙের জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া পি, কমিটির সদস্য বিনয় তামাং, অমর সিংহ রাই এবং জেলা প্রশাসন, ভূমি সংস্কার দফতর, বন বিভাগের একাধিক আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে ২২০টি পরিবারের মধ্যে ১৪০টি পরিবার আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত। সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে ব্যক্তিগত পাট্টার পাশাপাশি ‘কমিউনিটি পাট্টা’ প্রদানেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্কুল, শপিং মল, বাজার, মন্দির, মসজিদ প্রভৃতি তৈরির ক্ষেত্রে কমিউনিটি পাট্টা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই দার্জিলিংয়ে কমিউনিটি পাট্টার জন্য ১২টি আবেদন জমা পরেছে। বন দফতরের জমির পাশাপাশি ডিআই ফান্ড, সিঙ্কোনা বাগান, ভূমি সংস্কারের হাতে থাকা জমির পাট্টা নিয়েও ধাপে ধাপে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেই জানিয়েছেন বিনয়। জুলাই মাসের ২৫, ২৯ ও ৩১ তারিখ দার্জিলিঙে কমিটির বৈঠক হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই বৈঠকগুলিতে পাট্টা সংক্রান্ত বিষয়ে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেই জানান জিটিএর প্রধান উপদেষ্টা। পরবর্তী পর্যায়ে কালিম্পং জেলাতেও একই ভাবে বৈঠক করে পাট্টা প্রদান করা হবে বলেই জানিয়েছেন তিনি।
পাহাড়ে দীর্ঘদিনের পুরনো দাবির অন্যতম জমির অধিকার। জিটিএর তথ্য বলছে, দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ের বেশিরভাগ বাসিন্দাদের হাতেই নেই সেই অধিকার। পাহাড়ের কোনও জমির মালিক বন দফতর, কোনওটির সিঙ্কোনা কর্তৃপক্ষ, কোনও জমির দায়িত্বে আছেন ডিআই ফান্ড কর্তৃপক্ষ। সেই সব জমিতে বাড়ি, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তৈরি করলেও এখন পর্যন্ত কোনও স্বত্বাধিকার পাননি বাসিন্দারা। তাই ভোট প্রচারে সব দলই পাট্টা প্রদানের প্রতিশ্রুতিকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এখন জোড়া হারের পরেও পুরনো দাবি মিটিয়ে পাহাড়বাসীর মান ভাঙাতে চাইছেন বিনয় শিবির। বিনয় তামাং বলেন, ‘‘প্রতিশ্রুতি রক্ষা থেকে একচুলও সরে আসব না আমরা। জমির অধিকার না থাকলে সহজেই বাসিন্দাদের ‘বিদেশি’ তকমা লাগিয়ে দেওয়া যেতে পারে। তাই প্রত্যেকের হাতে পাট্টা তুলে দিয়ে প্রতিশ্রুতি পালন করব। পাহাড়ের উন্নয়নে ছিলাম, থাকব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy